রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অপরাধপ্রবণতা দিন দিন বাড়ছেই। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন না হলে স্বাভাবিকভাবেই সন্ত্রাসবাদের উত্থান হবে। খুন, ধর্ষণ, মাদকপাচার, শিশুপাচার, ডাকাতি, অপহরণ, পতিতাবৃত্তিসহ সব ভয়ঙ্কর অপরাধে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে রোহিঙ্গারা। নিজেদের মধ্যে হানাহানি-খুনোখুনিও প্রায় নৈমিত্তিক ঘটনা।
বাংলাদেশ সাপোটার্স ফোরামের সহযোগিতায় ‘রোহিঙ্গা সংকটের পাঁচ বছর ও উত্তরণের উপায়— গতকাল শনিবার ডিআরইউ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন জাতীয় সংগ্রাম কমিটির চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন সংগঠনের সাধারন সম্পাদক এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী।
এসময় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সাপোর্টার্স ফোরামের মহিলা সম্পাদিকা মিসেস শাহানা হক, বিচারপতি খাদেমুল ইসলাম চৌধুরী, সাবেক মন্ত্রী আলহাজ এম নাজিম উদ্দিন আল আজাদ, ১৪ দলেরকেন্দ্রীয় নেতা বীরমুক্তিযোদ্ধা সাদেক সিদ্দিকী, কৃষিবিশ্ব বিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসার ড. কামাল উদ্দিন, আওয়ামী লীগ নেতা ব্যারিস্টার আলহাজ জাকির আহামদ, সাবেক ডিআইজি বীর মুক্তিযোদ্ধা কবি মো. আনোয়ার হোসেন।
মূল প্রবন্ধে এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ভারত, চীন, রাশিয়ারও উদ্যোগ নেই বললেই চলে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অপরাধপ্রবণতা দিন দিন বাড়ছেই। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন না হলে স্বাভাবিকভাবেই সন্ত্রাসবাদের উত্থান হবে।
খুন, ধর্ষণ, মাদকপাচার, শিশুপাচার, ডাকাতি, অপহরণ, পতিতাবৃত্তিসহ সব ভয়ঙ্কর অপরাধে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে রোহিঙ্গারা। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দেড় লাখের বেশি শিশুর জন্ম হয়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গত পাঁচ বছরে প্রতিটি পরিবারে যুক্ত হয়েছে নতুন করে দুই থেকে তিন সদস্য।
এ সময়ের মধ্যে ক্যাম্পে নতুন করে জন্ম নিয়েছে দেড় লাখের বেশি শিশু। লাখ লাখ রোহিঙ্গার কারণে দিন দিন নানামুখী সংকটে বাংলাদেশ। সবার হাতে হাতে বাংলাদেশি মোবাইল সিম, লক্ষাধিক রোহিঙ্গা এনআইডি ও পাসপোর্টের আধিকারী এক ভয়াবহ অশনি সংকেত।
এসময় বক্তারা বলেন, বিশ্বে কোভিড-১৯ আক্রান্ত শতাধিক দেশ মহামারিতে পড়লেও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে-এর কোনো প্রভাব পড়েনি। কেউ মারা যায়নি। কিন্তু বর্তমানে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রায় আট শতাধিক রোহিঙ্গা মরণব্যাধী এইডসে আক্রান্ত। যা অত্যন্ত বিপজ্জনক।
তারা আরও বলেন, যেমন রোহিঙ্গাদের জন্য বরাদ্দকৃত ত্রাণের অর্থের ৩০ শতাংশ স্থানীয়দের জন্য বরাদ্দ দিয়ে যাচ্ছে বলে যে প্রতারণা করে যাচ্ছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। এনজিও এবং আইএনজিওতে গণহারে হাজার হাজার রোহিঙ্গা নিয়োগ দিলেও স্থানীয়দের প্রতিনিয়ত চাকরি থেকে ছাঁটাই করে যাচ্ছে।
আপনাদের মাধমে সরকার ও বিশ্ববাসীর কাছে জানাতে চাই— প্রত্যেক মানব সন্তানের, তার মাতৃভূমিতে স্বাধীনভাবে বসবাস করার মৌলিক অধিকার রয়েছে। রোহিঙ্গাদের আরাকানে ফিরিয়ে নিতে হবে, জাতিসংঘ এবং ওআইসিসহ বিশ্ববাসীকে কঠোরভাবে এগিয়ে আসতে হবে।
আথবা বিশ্ব শান্তিরক্ষী বাহিনীর তত্ত্বাবধানে মিয়ানমারের বিশাল ভূখণ্ডের যেকোনো প্রান্তে তাদের জন্য নির্ধারিত ক্যাম্প করে এ দেশ থেকে তাদের দ্রুত সরিয়ে নিতে হবে। তা না হলে এ দেশের স্বাধীনতা স্বার্ভভৌমত্ব হয়তো একদিন হুমকির সম্মুখীন হবে, ধ্বংস হবে পর্যটন, পরিবেশ ও যুবসমাজ।