বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুনকে সভাপতি ও আজাদুল ইসলাম আজাদকে সাধারণ সম্পাদক করে চুয়াডাঙ্গা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার ত্রিবার্ষিক সম্মেলন শেষে বিকালে এ কমিটি ঘোষণা করা হয়। সকাল ১০টায় টাউন ফুটবল মাঠে সম্মেলন শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন। উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ।
এর আগে বেলা ১১টায় চুয়াডাঙ্গার ঐতিহাসিক টাউন ফুটবল মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে কেন্দ্রীয় নেতাদের স্বাগত জানিয়ে পতাকা মঞ্চে নেয়া হয়। সেখানে চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ।
এর পরপরই সম্মেলনের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন।
মঞ্চে উপস্থিত কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাড. আমিরুল আলম মিলন এমপি, পারভিন জামান কল্পনা, অ্যাড. গ্লোরিয়া সরকার ঝর্ণা এমপি ও চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের প্রশাসক মাহফুজুর রহমান মঞ্জু।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার (ছেলুন) এমপি ও সম্মেলনের সঞ্চালনায় দায়িত্ব পালন করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আজাদুল ইসলাম আজাদ।
সভাপতি তার সমাপনী বক্তব্যে বলেন, চুয়াডাঙ্গা হলো আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি। যখন বিএনপির ক্ষমতায় ছিল তখনও সভানেত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা চুয়াডাঙ্গাতে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি তখনো কিন্তু বিএনপি আমাদেরকে আক্রমণ করতে পারেনি। কারণ আমরা সংগ্রাম করেই এই জায়গায় এসেছি। আমরা বঙ্গবন্ধুর পরীক্ষিত সৈনিক। আমরা সংগ্রাম করে এখানে এসেছি জামায়াত-বিএনপির আক্রমণকে মোকাবিলা করে এখানে এসেছি। আমরা কারোর দয়ায় এখানে আসিনি।
মোকাবিলা করার শক্তি তারাই রাখে, যারা অতীতে শত্রুর মোকাবিলা করে এসেছে। এখনো তারা জীবিত আছে। হঠাৎ করে এসে গজিয়ে উঠে কিছু পয়সাকড়ি হওয়ার পর ২০০৮ সাল থেকে বিভিন্নভাবে নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার করেছে, এখনো স্বার্থ উদ্ধার করে চলেছে। তাদের দিয়ে বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ হবে না। জননেত্রী শেখ হাসিনার আমি আওয়ামী লীগ হবে না, আমরা তো দেখেছি আমরা ষড়যন্ত্রের কাছে হেরে গেছি। আমাদের নেতা বঙ্গবন্ধু। আমাদের জাতির স্থপতি বঙ্গবন্ধু যার কোনো তুলনা নেই। বিশ্বের মানচিত্রে বাঙালিদের মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর যে ব্রত নিয়ে তিনি রাজনীতি করেছেন। আমি বলি যারা বঙ্গবন্ধুকে মানেন না, বিশ্বাস করেন না, জাতির পিতা হিসেবে, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকাকে স্যালুট করেন না, যারা এখনো এই বাংলার মাটিকে বাংলাদেশ বলে মানেন না, তাদের উদ্দেশে বলি— এই দেশের রাজনীতি করতে হলে বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা মানতে হবে। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ বাঙালি জাতির স্রষ্টা। তা না মানলে রাজনীতি করতে পারবেন না। আমি চিনি কে, রাস্তায় থেকে শত্রুর মোকাবিলা করবে। আমরা দীর্ঘ ৬০ বছর দাঁড়িয়ে আছি।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী আসাদুল হক বিশ্বাস, শিক্ষা ও সংস্কৃতি-বিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, অ্যাডভোকেট শামসুজ্জোহা, সংগঠনিক সম্পাদক মুন্সী আলমগীর হান্নান, দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু তালেব, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ-বিষয়ক সম্পাদক ডাক্তার মাহাবুব হাসান মেহেদী, উপ-প্রচার সম্পাদক শওকত আলী বিশ্বাসসহ জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা।
উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ-বিষয়ক উপকমিটির সদস্য দৈনিক আমার সংবাদ ও ডেইলি পোস্টের সম্পাদক-প্রকাশক হাশেম রেজা, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের অর্থ উপকমিটির সদস্য বিশিষ্ট শিল্পপতি আব্দুর রাজ্জাক খান রাজ, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য-বিষয়ক উপকমিটির সদস্য দিলীপ কুমার আগরওয়াল, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দার, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপুসহ অনেকে।