দীর্ঘ অপেক্ষা শেষে মিরাকল শহরে স্বপ্ন এখন বাস্তবে। দেশের ইতিহাসে যোগ হয়েছে নতুন অধ্যায়। শুরু হলো মেট্রোরেলের যাত্রা, লাঘব হবে নগরবাসীর ভোগান্তি, যানজট ভেদ করে শহর দাপাবে এ দ্রুতগামী বাহন।
গতকাল বুধবার বহুল প্রতীক্ষিত মেট্রোরেল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিনই টিকিট কেটে প্রথম যাত্রার যাত্রী হলেন তিনি। আজ থেকে চলাচল করছেন সাধারণ যাত্রীরা। মাত্র ছয় বছরের মাথায় পরিণতি পেল রাজধানীরবাসীর স্বপ্ন।
এদিকে নানান হিসাব-নিকাশ শেষে ২০১৬ সালের ২৬ জুন এ প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু হয়। আর ২০১৮ সালের ৮ এপ্রিল উত্তরার দিয়াবাড়িতে মেট্রোলাইনে বসে প্রথম স্প্যান।
২০২২ সালের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে বৈদ্যুতিক মেট্রোরেলে চড়ছেন রাজধানীবাসী। এর আগে ঢাকার অসহনীয় যানজট নিরসনে বিশ্ব ব্যাংকের সহযোগিতায় ২০০৫ সালে কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা (এসটিপি) প্রণয়ন করে বাংলাদেশ সরকার।
২০ বছর মেয়াদি পরিকল্পনায় মেট্রোরেল, বাসভিত্তিক উন্নত গণপরিবহন ব্যবস্থা-বিআরটিসহ নানান প্রকল্প বাস্তবায়নের পরামর্শ আসে। এটি বাস্তবায়নে দায়িত্ব পায় তৎকালীন যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেশন বোর্ড (ডিটিসিবি)। যার বর্তমান নাম ঢাকা পরিবহন কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ)। আর ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে মেট্রোরেল নির্মাণের উদ্যোগ নেয় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থার (জাইকা) অর্থায়নে সমীক্ষা পরিচালনার উদ্যোগ নেয় তৎকালীন ডিটিসিবি।
এছাড়াও ২০০৯ সালের মার্চ থেকে ২০১০ সালের মার্চ পর্যন্ত এক বছরের সমীক্ষায় সবার আগে এমআরটি লাইন-৬ নির্মাণের সুপারিশ আসে। পরের বছরই ওই প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই করে জাইকা। ২০১৩ সালের ৩১ অক্টোবর গাজীপুরে এক অনুষ্ঠানে মেট্রোরেল প্রকল্পের ভিত্তিফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থার (জাইকা) অর্থায়নে সমীক্ষা পরিচালনার উদ্যোগ নেয় তৎকালীন ডিটিসিবি।
২০০৯ সালের মার্চ থেকে ২০১০ সালের মার্চ পর্যন্ত একবছরের সমীক্ষায় সবার আগে এমআরটি লাইন-৬ নির্মাণের সুপারিশ আসে। পরের বছরই ওই প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই করে জাইকা। সমীক্ষায় প্রথমে উত্তরা থেকে সায়েদাবাদ পর্যন্ত মেট্রোরেল নির্মাণের প্রস্তাব আসে। পরে তা পরিবর্তন করে মতিঝিলের বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত বিস্তৃত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। জাইকার কাছ থেকে কারিগরি ও অর্থায়নের প্রাথমিক প্রতিশ্রুতি নিয়ে ২০১১ সালে ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন-৬ নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করে সরকার।
পরের বছরের ১৮ ডিসেম্বর একনেক সভায় প্রকল্পটির চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়। তখন প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয় প্রায় ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রকল্প সহায়তা হিসেবে ১৬ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা জাপান সরকারের আর বাকি পাঁচ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেয়ার কথা ছিল। প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়ার সময় ২০১২ সাল থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়।