আমার সংবাদ ডেস্ক
এপ্রিল ২৪, ২০২০, ০৯:৫৭ এএম
টানা ৩৫ দিন ধরে ডিম নিজের বুকে তা দিয়ে একটি হাঁসের বাচ্চাকে জীবন দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের এক নারী। একটি পার্কের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় ডিমটিকে কুড়িয়ে পেয়েছিলেন তিনি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি জানাজানি হলে বেটসি রোজ নামে ওই নারীর প্রশংসা করেছেন বেশিরভাগ মানুষ।
জানা যায়, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে একদিন পার্কের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় তিনি ভাঙা অবস্থায় একটি হাঁসের বাসা দেখতে পান। তখনও সেখানে একটি ডিম হালকা ফাটল নিয়ে বেঁচে ছিল।
বেটসির সন্তানরা ডিমটিকে উদ্ধারের বায়না ধরে। হ্যাচিংয়ের (ডিম ফোটানো) পূর্বাভিজ্ঞতা না থাকলেও তিনি সেটিকে বাড়িতে নিয়ে যান। সেই থেকে বেটসি’র জীবনে এক অনন্য অভিজ্ঞতার শুরু। এরপর টানা ৩৫ দিন সার্বক্ষণিক নিজের বুকে রেখে ডিমটিকে তাপ দিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে তিনি গণমাধ্যমকে জানান, বাড়িতে ইনকিউবেটর না থাকায় স্থানীয় একটি প্রাণী উদ্ধার সংগঠনের সঙ্গেও আলাপ করেছিলেন তিনি। তবে তারা ডিম রাখতে রাজি হয়নি।
তখন তার মাথায় চিন্তা এলো, নিজের বুকের ভেতরে রেখেই ডিমের ভেতরে থাকা বাচ্চাটিকে পৃথিবীর আলো দেখাবেন তিনি। ইন্টারনেটে সার্চ করেও দেখলেন তিনি সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি পড়েও নিলেন বিভিন্ন আনুষঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে।
বেটসি বলেন, আমার বুক ঘামে ভিজে যেত। টানা ৩৫ দিন ধরে এটিকে সবসময় সঙ্গে রেখেছি। এমনকি ঘুমের সময়েও।
তবে গোসলের সময় ডিমটিকে কয়েক মিনিটের জন্য স্বামীর হাতে দিয়ে যেতেন তিনি।
মাঝখানে সমস্যা মনে হওয়ায় প্রাণী চিকিৎকের পরামর্শও নেন তিনি।
একদিন ডিম ফুটে বাচ্চাটি আলোর মুখ দেখলেও শরীরের নিচের দিকে সামান্য অংশ ডিমের খোসার সঙ্গে লেগেছিল। হ্যাচিং প্রক্রিয়ায় সামান্য হেরফের হওয়াতেই এমনটা হয়েছিল বলে জানান তিনি। তবে ইন্টারনেট ঘেঁটে সেই সমস্যারও সমাধান করে ফেলেন বেটসি।
ইনফেকশন এড়াতে তিনি পেপার টাওয়েলে খোসাটিকে আবৃত করে এন্টিসেপ্টিক লাগিয়ে দেন।
একসময় বাচ্চাটি খোসা থেকে মুক্ত হলেও খুবই দুর্বল ছিল। তবে হাল ছাড়েননি বেটসি। মায়ের মমতায় নিয়মিত পানি খাওয়াতে থাকেন সেটিকে।
বাচ্চাটিকে বহনের জন্য বিশেষ একটি ক্যারিয়ার বানিয়েছেন বেটসি। সবসময় সেটিকে সঙ্গেই রাখেন তিনি।
হাঁসের ছানাটি আরেকটু বড় হয়ে গেলে সেটিকে পরিচিত অ্যানিম্যাল রেস্কিউয়ারদের কাছে দিয়ে দেবেন বলে জানান বেটসি।
আমারসংবাদ/জেআই