Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪,

উন্নয়ন-সমৃদ্ধির অগ্রনায়ক শেখ হাসিনা

রফিকুল ইসলাম 

রফিকুল ইসলাম 

মে ১৭, ২০২২, ০১:৪৫ এএম


উন্নয়ন-সমৃদ্ধির অগ্রনায়ক শেখ হাসিনা

আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ। ১৯৮১ সালের আজকের এই দিনে সামরিক শাসকের রক্তচক্ষু ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে স্বদেশভূমিতে ফিরে আসেন দেশের উন্নয়ন সমৃদ্ধির অগ্রনায়ক শেখ হাসিনা। 

তার দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম ও সঠিক নেতৃত্বের কারণে ক্ষুধা, দরিদ্র, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, দুর্নীতি ও জঙ্গিমুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ। একের পর এক উন্নয়নে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে এমনটাই দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা।

তারা বলছে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মধ্যে দিয়ে দেশকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেয় স্বাধীনতা বিরোধীরা। তারা অবৈধভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের গুম, খুন ও নির্যাতন করেছে। 

তাদের অনিয়ম, দুর্নীতি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে থমকে দাঁড়িয়েছিল দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা। বন্ধ করে দেয়া হয় আন্দোলন-সংগ্রাম, মিছিল-মিটিং, সভা-সমাবেশ। মানুষের ভাত ও ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে হত্যা করা হয় দেশের গণতন্ত্রকে। পুনর্বাসন করা হয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানে খুনিদের। বসানো হয় সরকারের মন্ত্রিপরিষদে। স্বাধীন বাংলাদেশকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় পাকিস্তানের ভাবধারায়। 

ঠিক সেই মুহূর্তে ১৯৮১ সালের ১৭ মে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশের মাটিতে পা রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। তার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয় আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা। দেশে আসার পর থেকেই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন-সংগ্রাম করেন তিনি। 

আওয়ামী লীগের নেতারা আরও বলেন,  শেখ হাসিনা এসেছিল বলেই আজ বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার হয়েছে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে। জঙ্গি, সন্ত্রাস ও দুর্নীতিমুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ।

তার সফল নেতৃত্বের কারণেই উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। বড় বড় মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়ন, শিক্ষা, চিকিৎসা, অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানসহ সকল সুযোগ সুবিধা মানুষের দোরগড়ায় পৌঁছে গিয়েছে। 

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য, কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু আমার সংবাদকে বলেন, ৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর বাংলাদেশের গণতন্ত্র ছিল অন্ধকারে। স্বাধীনতাবিরোধীরা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হত্যা, গুম ও নির্যাতন করেছে।

বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশে ফেরার পর গণতন্ত্র উদ্ধারে আত্মনিয়োগ করেন। তার কঠোর পরিশ্রম ও মাঠের আন্দোলন-সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয়েছে। 

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে ফিরে পাওয়ার অতৃপ্ত বাসনায় ১৯৮১ সালের ১৭ মে তার কন্যা শেখ হাসিনাকে দেখতে প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে মানুষের ঢল নেমেছিল বিমান বন্দরে। সেদিন আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনার মাঝে বঙ্গবন্ধুকে খুঁজে পাওয়ার আশায় বুক বেঁধে ছিল। 

তাইতো আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ভূলুণ্ঠিত হয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে দল ভাঙার রাজনীতি, রাজনীতিবিদদের চরিত্র হনন, সর্বোপরি রাজনীতিকে বিরাজনীতিকরণের মাধ্যমে দেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। এই প্রতিকূল অবস্থায় দেশে ফিরে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে আত্মনিয়োগ করে দেশকে আজ উন্নয়ন আর অগ্রগতির পথে নিয়ে এসেছেন শেখ হাসিনা।

তিনি পিতার আদর্শের পথ ধরে দেশকে নিয়ে যাচ্ছেন উন্নয়নের মহাসড়কে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন। মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু, রূপপুর পরমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও কর্ণফুলী টানেলের কাজ এগিয়ে চলেছে দ্রুতগতিতে। এই অগ্রযাত্রা শেখ হাসিনার স্বদেশে ফিরে আসার ফল। 

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা যে সব প্রতিশ্রুতি করেছিলেন, সেই প্রতিশ্রুতি তিনি অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবায়ন করেছেন।

শেখ হাসিনার দেশে ফেরার স্মৃতিচারণ করে মায়া আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর স্বাধীনতাবিরোধীরা দেশকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিয়েছিল। তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিল। মানুষের ভাত ও ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। ঠিক সেই মুহূর্তে দেশে ফিরে আসেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। 

সেদিন তিনি কথা দিয়েছিলেন, ‘আমার জীবনের বিনিময়ে হলেও আমার বাবার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করব।’ তার সব কথাই আজ বাস্তবায়ন হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা যে দিন দেশে ফিরে আসেন। সেদিন সারা দেশের মানুষ তাকে এক নজর দেখার জন্য বিমানবন্দরে জমায়েত হয়েছিল। দেশের মানুষের চাওয়া ছিল, বঙ্গবন্ধুর মতো দেশের হাল তিনি ধরবেন। সেদিন দেশের মানুষের সে কথা রেখেছিলেন। বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে তিনি আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করেছিলেন। গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম, মিছিল-মিটিং, সভা-সমাবেশ করেছিলেন। 

তিনি আরও বলেন, সেদিন তিনি ফিরে এসেছিলেন বলেই আজ বাংলাদেশ সন্ত্রাসমুক্ত, জঙ্গিবাদমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত ও চাঁদাবাজমুক্ত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুবিহীন বাংলাদেশের গণতন্ত্র আজ আলোর পথে এসেছে। 

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক আমার সংবাদকে বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন, অগ্রগতি, সমৃদ্ধি ও সুশাসনের অগ্রনায়ক আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার নেতৃত্বে আজ ক্ষুধা, দারিদ্র্য, সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও জঙ্গিমুক্ত বাংলাদেশ। 

মানুষের ভাত ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে। তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর আওয়ামী লীগের অনেক নেতা বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল। সেদিন বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, প্রতিশোধ, গনতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং স্বাধীতা বিরোধীদের বিরুদ্ধে অনেকে আন্দোলন-সংগ্রাম করেনি। অনেকে নীরব ভূমিকা পালন করেছে। ঠিক সেই মুহূর্তে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসেন এবং আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করেন।

তিনি দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন-সংগ্রাম শুরু করেন। তার ওপর বারবার আঘাত এসেছে। তাকে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। সেদিন কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা মৃত্যুর ভয়ে পিছপা হননি। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় এখনো সংগ্রাম করে যাচ্ছেন তিনি।

Link copied!