Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

স্যুয়ারেজের দূষণে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল

নজরুল ইসলাম মুকুল, কুষ্টিয়া

জুন ৭, ২০২০, ১১:৩২ পিএম


স্যুয়ারেজের দূষণে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল

২৫০ শয্যা কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালটি কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হিসেবেও জেলার সর্বোচ্চ উন্নত চিকিৎসাসেবার একমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে ২২ লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার আশ্রয়স্থল।

নানাবিধ ঝক্কি-ঝামেলা ও সমস্যা সীমাবদ্ধতা মোকাবিলা করেই শয্যা সংখ্যার প্রায় দুই বা তিনগুণ ভর্তিকৃত এবং দেড় সহস্রাধিক বহির্বিভাগ রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। সেই সাথে করোনাক্রান্ত রোগী তো রয়েছেই।

হাসপাতালের নিরাপত্তাকর্মী ফারুক আহমেদের অভিযোগ, ‘এই যে দেখছেন হাসপাতাল মসজিদ, প্রধান ডাকঘরসহ গোটা এলাকার পায়খানা, পেসাবখানার ময়লা বাইরে যাওয়ার কোনো পথ নেই। একদিকে ড্রেন জ্যাম, অন্যদিকে রাস্তাটা বহুদিনের পুরনো নিচু হওয়ায় আশাপাশের সব নোঙরা ময়লা মিশে এই পানি পুরোটাই এখন বিষাক্ত।

পাশের করোনা রোগীর আইসোলেশন ওয়ার্ডের ময়লাও মিশে আছে। শরীরে লাগলেই খবর আছে। আমরা তো জান হাতে করে কাজ করছি।’

গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি এক রোগীর স্বজন সজনী খাতুন প্রধান গেট পেরিয়ে এই ময়লা পানির মধ্যে হেঁটে ওষুধ কিনতে এসে বলেন, হাসপাতালে মানুষ আসছে সুস্থ হতে কিন্তু এখানে যে অবস্থা আমি যতবার ওধুষ নিতে আসছি, ওয়ার্ডে ফিরে ততবার বাথরুমে গিয়ে গোসল করে তারপর রোগীর কাছে যাচ্ছি।

২৫০ শয্যা কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তাপস কুমার সরকার বলেন, সামান্য বৃষ্টিপাতেই স্যুয়ারেজের নোঙরা আবর্জনার সাথে একাকার হয়ে স্বাস্থ্যঝুঁকির ষোলকলা পূর্ণ হয়ে যায় হাসপাতাল চত্বরটি। একাধিকবার লিখিত আবেদনেও সাড়া দেয়নি সংশ্লিষ্ট পৌর কর্তৃপক্ষ। দায়িত্ব নিচ্ছেন না কেউই এমন তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে দীর্ঘদিনের এই সমস্যার জরুরি সমাধানের দাবি করেন তিনি।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোসা. নূরুন-নাহার বেগম বলেন, সংশ্লিষ্ট পৌর কর্তৃপক্ষ অবহেলা না করে খুব যৎসামান্য সুদৃষ্টি দিলেই দীর্ঘ ছয় বছর ধরে বিদ্যমান স্যুয়ারেজের দূূষণে জনভোগান্তিসহ চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে কর্মরত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ঝুঁকিমুক্ত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা যেত।

হাসপাতাল পরিচালনা পরিষদের সভাপতি কুষ্টিয়া-৩ সদর আসনের সংসদ সদস্য মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, বিষয়টি খুব দুঃখজনক। ওই রাস্তাটি করার কথা কুষ্টিয়া পৌরসভার।

পৌর কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেন উনারা কি বলেন। তবে এবিষয়ে কুষ্টিয়া পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের লিখিত অভিযোগ সংক্রান্ত বিষয়ে কিছুই জানেন না দাবি করে বলেন, কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল চত্বরে জলাবদ্ধতায় জনভোগান্তি নিরসনের কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে।

ঠিকাদাররা তো কাজ শুরু করার কথা শীঘ্রই এ সমস্যার সমাধান হবে। হাসপাতালের মতো এমন জনগুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের রাস্তাটি দীর্ঘ ছয় বছর ধরে জন ভোগান্তির কারণ হয়ে আছে; এতদিন কাজটি হয়নি কেন এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তোর দিতে পারেননি তিনি।

আমারসংবাদ/এসটিএম