Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

দুর্গাপুরে সরকারি গাছ কেটে নিচ্ছে একটি চক্র

এস এম রফিক, দুর্গাপুর (নেত্রকোনা)

জুন ৭, ২০২০, ১১:৩৫ পিএম


দুর্গাপুরে সরকারি গাছ কেটে নিচ্ছে একটি চক্র

 নেত্রকোনাস্থ দুর্গাপুর উপজেলার কুল্লাগড়া ইউনিয়নের বহেরাতলি গ্রামের বংগাইপার এলাকার পাহাড়ি টিলার ওপরে বনবিভাগের রোপণকৃত সরকারি বাগানের গজারি, সেগুন, মেহগনি গাছ অংশীদারিত্বের নাম করে প্রকাশ্য দিবালোকে কেটে নিয়ে যাচ্ছে এমন অভিযোগ উঠেছে চোরাকারবারি প্রদীপ সাহা (৪৫) ও রাজীব পাঠানের (৩৫) বিরুদ্ধে।

গত শনিবার সরেজমিন গেলে চোরাকারবারিদের এ বৃক্ষনিধনের প্রমাণ মেলে। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক অসংখ্য স্থানীয় ব্যক্তি জানান, কুল্লাগড়া ইউনিয়নের ওইসব পাহাড়ি উঁচু টিলার ওপরে বনবিভাগ স্থানীয় ব্যক্তিদের অংশীদারিত্ব প্রাপ্তি সাপেক্ষে গজারি, সেগুন গাছের চারা রোপণ করে। চুরি করে নিয়ে যাওয়া সেই দুটি বাগান ২০০২ সালের শেষের দিকে লিজ দেয় বিনবিভাগ।

সম্প্রতি বনবিভাগ প্রতিটি গাছের চারার গায়ে লাল কালি চিহ্নিত খোদাই নম্বর দেয়। প্রতিটি বাগানের গাছ কাটার উপযুক্ত হয়েছে। ওইসব বাগানের গাছগুলো নিলাম প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানা যায়।

সেই সুযোগে বহেরাতলি বাংতির বাজারের পশ্চিমে বংগাইপার টিলার উপরে গজারি বাগানের অসংখ্য মূল্যবান কাঠ বিজয়পুর বনবিভাগের বিট অফিসের প্রহরী আনোয়ার হোসেনের প্রত্যক্ষ মদদে অংশীদারিত্বের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে প্রকাশ্য দিবালোকে শতাধিক গাছ কেটে নিয়ে গেছে। চোরাকারবারি প্রদীপ সাহার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারছে না।

স্থানীয়রা দেখেও না দেখার ভান করছে ওই চোরাকারবারি প্রদীপের ভয়ে। কেউ প্রতিবাদ করলে তার ওপরে চলে অমানবিক নির্যাতন। নানা ধরনের হয়রানি করা হয় ওইসব ব্যক্তিদের। গজারি গাছগুলো কেটে গাছের লতাপাতা দিয়ে কাটা গুড়িগুলো ঢেকে রাখা হয়েছে।

সম্প্রতি যেসকল গাছ কাটা হয়েছে সেইসব গাছের গুড়িতে আগুন দিয়ে আংশিক পুড়ানোর চেষ্টা করছে চোরাকারবারিরা। যাতে কেউ বুঝতে না পারে এটি সম্প্রতি কাটা হয়েছে।

নানা ধরনের কৌশল অবলম্বন করে বন বিভাগের কাঠ উধাও হয়ে যাচ্ছে। খোঁজ নিচ্ছে না বন বিভাগের লোকজন। চোরাকারবারির দলনেতা প্রদীপ সাহার নেতৃত্বে বন বিভাগের প্রহরীকে ম্যানেজ করে দেদার চালিয়ে যাচ্ছে এ বৃক্ষনিধন কর্মযজ্ঞ। আবেদিন নামীয় টিলার ওপরে বনবিভাগের ৯৭০টির ও বেশি আকাশি গাছ রোপণ করা হয়।

ওই বাগানের ইজারাদার স্থানীয় জয়নাল আবেদিনের ছেলে রাজিব পাঠান প্রায় শতাধিক আকাশমনি গাছ দিনের বেলায় কেটে নিয়ে যায়।

এতে করে সরকার লাখ লাখ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। অংশীদারিত্বের সুযোগে দিনের বেলায় কাটছে এসব গাছ। দেখেও না দেখার ভান করছে কর্তব্যরত বন বিভাগের লোকজন। অবাধে গাছ কাটার বিষয়ে স্থানীয়রা অভিযোগ করেও কোনো ধরনের প্রতিকার পাচ্ছেন না বলে জানান তারা। প্রকাশ্যে বন বিভাগের গজারি গাছ কেটে নেয়ার

বিষয়ে মুঠোফোনে প্রদীপ সাহার কাছে জানতে চাইলে এ প্রতিনিধিকে বলেন, গাছ কাটার সাথে আমি জড়িত নই। অপর ব্যক্তি রাজীব পাঠানের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমি বাগানের অংশীদার; আমি গাছ কাটবো কেন।

অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় কামরুল ইসলামের কাছে গাছগুলো বিক্রি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. সাইদুল ইসলাম আমার সংবাদকে বলেন, বিষয়টি আমাকে আগে জানানো হয়নি; আমি আজই ঘটনাস্থলে যাবো।

নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা খানম বলেন, সরকারি গাছকাটার বিষয়ে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আমারসংবাদ/এসটিএম