Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

ইস্কাটনের জরাজীর্ণ ভবন ভেঙে হবে ৪৮০টি ফ্ল্যাট

জাহাঙ্গীর আলম

নভেম্বর ২২, ২০২০, ০৬:৫০ পিএম


ইস্কাটনের জরাজীর্ণ ভবন ভেঙে হবে ৪৮০টি ফ্ল্যাট

ঢাকায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাত্র ৮ শতাংশের আবাসন সুবিধা রয়েছে। যা খুবই নগণ্য। তাই রাজধানীর ইস্কাটন অফিসার্স কোয়ার্টার ক্যাম্পাসে প্রায় ৬০ বছর আগের জরাজীর্ণ ভবন ভেঙে অত্যাধুনিক ৪৮০টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুরোনো ভবন ভেঙে ও পরিত্যক্ত সরকারি সম্পত্তিতে আধুনিক সুবিধাসহ বহুতল ভবন নির্মাণের অনুশাসন দিলে তা আমলে নিয়ে গণপূর্ত অধিদপ্তর একটি প্রকল্প তৈরি করে অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে।

তিন বছরে ১৮০০ ও ১৫০০ বর্গফুটের পাঁচটি করে ১৩তলা দুটি ভবনে এসব ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে। এ সব কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৪৭ কোটি টাকা। তা যাচাই করতে সম্প্রতি প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সভায় কিছু ব্যাপারে আপত্তি করে সংশোধন করতে বলা হয়েছে। সংশোধিত ডিপিপি পাওয়া গেলে খুব শিগগিরই একনেক সভায় অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে বলে সূত্র জানায়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে গণপূর্ত অধিদপ্তর।  

গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, ঢাকা শহরে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংখ্যা এক লাখ ৪৮ হাজার ৯১৫ জন। তাদের বসবাসের জন্য মাত্র ১৩ হাজার ৫২টি ফ্ল্যাট রয়েছে। এটা মোট চাহিদার মাত্র ৮ শতাংশ। প্রয়োজনের তুলনায় তা খুবই অপ্রতুল।

এ জন্য অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী বেশি ভাড়া দিয়ে বেসরকারি বাসায় থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে তাদের আর্থিক অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। আবার অনেকে নিম্নমানের বাসায় বসবাস করছেন।

এ সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসন সুবিধা ৮ থেকে ৪০ শতাংশে উন্নীতকরণের অনুশাসন দিয়েছেন। একই সাথে শহরের জরাজীর্ণ ভবন ভেঙে এবং সরকারি পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে সব আধুনিক সুবিধাসহ বহুতল ভবন নির্মাণেরও নির্দেশ দিয়েছেন। যাতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসন সমস্যা অনেকাংশে লাঘব হয়।

সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আমলে নিয়ে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে গণপূর্ত অধিদপ্তর আটটি প্রকল্পের মাধ্যমে তিন হাজার দুটি ফ্ল্যাট নির্মাণ শেষ করে হস্তান্তর করেছে। আরও ১৭টি প্রকল্পের মাধ্যমে ৯ হাজার ৭৭৫টি ফ্ল্যাট নির্মাণ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।

এরই অংশ বিশেষ রাজধানীর ইস্কাটন অফিসার্স কোয়াটার্স ক্যাম্পাসে সাড়ে ১১ একর জমির উপর জরাজীর্ণ যে ৩১টি চার, পাঁচ ও ছয়তলার ভবন রয়েছে তা ভেঙে অত্যাধুনিক ভবন করা হবে। কারণ ওই সব ভবন অনেক পুরোনো। ৬০ বছর আগের নির্মাণ করা বিশাল আয়তনের জমিতে মাত্র ২৬২টি পরিবার বসবাস করছেন।

তাই জরাজীর্ণ ভবন ভেঙে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ‘ঢাকার ইস্কাটন অফিসার্স কোয়ার্টার এলাকায় সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য বহুতল আবাসিক ভবন নির্মাণ প্রকল্পটি তৈরি করেছে। তাতে এক হাজার ৮০০ বর্গফুটের পাঁচটি ১৩ তলা এবং দেড় হাজার বর্গফুটের পাঁচটি ১৩ তলা ভবন নির্মাণ করা হবে।

 এসব ভবনের মাধ্যমে ৪৮০টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়া দুইটি ছয়তলাবিশিষ্ট সাব-স্টেশন এবং এসটিপি ভবন নির্মাণ করা হবে। একটি ছয়তলা কমিউনিটি হল করা হবে। চারতলা বিশিষ্ট প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনও করা হবে। থাকছে দ্বিতীয়তলা বিশিষ্ট ক্লাব হাউস ভবন ছয়টি।

এছাড়া যাতায়াতের জন্য প্রকল্প এলাকায় অভ্যন্তরীণ রাস্তা ও ওয়াকওয়ে থাকছে। আরও থাকছে ভূগর্ভস্থ ও ভূ-উপরিস্থ জলাধার। বিল্ডিংয়ে যাতায়াতের জন্য লিফট ২৩টি, জেনারেটর ছয় সেট এবং পাম্প মোটর সেট ৫৬টি কেনা হবে। এছাড়া থাকবে ৬০ কিলোওয়াটের সৌরবিদ্যুৎ, এয়ার কন্ডিশনার ৪০০ টন।

অভ্যন্তরীণ রাস্তা ও ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে তিন হাজার ৩৪৪ বর্গমিটার এবং সীমানা প্রাচীর ও গেট নির্মাণ করা হবে এক হাজার ১৬০ মিটার। সিসিটিভি, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতাসহ আরও কিছু ব্যয় করা হবে প্রকল্পে।

এভাবে বিভিন্ন কাজ করতে প্রকল্পটিতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৪৭ কোটি ১১ লাখ টাকা। স্বাস্থ্যকর আবাসন তৈরি করতে প্রকল্পটির বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত। তা যাচাই করতে পরিকল্পনা কমিশনে সম্প্রতি পিইসি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সভায় কিছু ব্যাপারে আপত্তি করে তা সংশোধন করতে বলা হয়েছে। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে সংশোধিত ডিপিপি পাঠানো হলে বাকি কাজ শেষ করে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে বলে সূত্র জানায়।

আমারসংবাদ/এআই