Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

একক প্রার্থী চ্যালেঞ্জে আ.লীগ

আসাদুজ্জামান আজম

নভেম্বর ২৪, ২০২০, ০৭:২৫ পিএম


 একক প্রার্থী চ্যালেঞ্জে আ.লীগ

আগামী ডিসেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে স্থানীয় সরকার নির্বাচন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে  প্রথমপর্যায়ে (জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি) পৌরসভা এবং মার্চ মাস থেকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। ২০১৫ ও ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত পৌরসভা ও ইউপি নির্বাচনে প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।

এবারো স্থানীয় নির্বাচনে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ‘নৌকা-ধানের শীষ’ প্রতীকের লড়াই হবে। ফলে উভয় দলই তৃণমূল রাজনীতিতে নিজেদের জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের চ্যালেঞ্জকে সামনে রেখে নানা হিসাব-নিকাশ কষছেন।

তবে নির্বাচনে একক প্রার্থী চূড়ান্ত করা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জন্য চ্যালেঞ্জ হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ইসি সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে দেশে পৌরসভার সংখ্যা ৩২৯টি। নির্বাচন উপযোগী পৌরসভার সংখ্যা ২৫৯টি।

আগামী বছরের জানুয়ারিতে মেয়াদ শেষ হবে ১১টি পৌরসভার। নির্বাচন উপযোগী পৌরসভাগুলোতে কয়েকটি ধাপে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে প্রথম ধাপে ২৫টি পৌরসভায় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।

এসব পৌরসভায় আগামী ২৮ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ২৫টি পৌরসভায় ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হবে।

ঘোষিত পৌরসভার প্রার্থী নির্ধারণের জন্য সম্ভাব্য প্রার্থীদের দলীয় মনোনয়ন ফরম বিতরণ শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। ২৭ নভেম্বর শুক্রবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত মনোনয়ন ফরম বিতরণ করা হবে। ২৫টি পৌরসভার প্রতিটিতেই একাধিক প্রার্থী রয়েছেন।

তথ্য মতে, তফসিল ঘোষিত শুধু ২৫ পৌরসভাতেই নয়, স্থানীয় সরকারের নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রতিটি পৌরসভা ও ইউনিয়নে সক্রিয় রয়েছে দলটির একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থী। এসব প্রার্থীর প্রচার-প্রচারণায় গোটা দেশেই নির্বাচনি হাওয়া বইতে শুরু করেছে।

একাধিক জেলা প্রতিনিধির দেয়া তথ্য মতে, নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রতিটি পৌরসভা, ইউনিয়নে মূল দল আওয়ামী লীগের পাশাপাশি যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতারা প্রার্থী হচ্ছেন। রাস্তা, অফিস, বাসা এবং বাজারে শোভা পাচ্ছে প্রার্থীদের প্রচারণার ব্যানার-ফেস্টুন।

বড় বড় বিলবোর্ড ও ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়ে ফেলেছেন পুরো নির্বাচনি এলাকা। সম্ভাব্য প্রার্থীরা সকাল-সন্ধ্যা যোগ দিচ্ছেন বিভিন্ন মিছিল-মিটিং ও সভা-সমাবেশে। নিজ নিজ প্রার্থীদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত কর্মী-সমর্থকরা। দলীয় মনোনয়ন পেতে প্রত্যেকে চালাচ্ছেন জোর তৎপরতা। অনেক স্থানে বিবাদেও জড়াচ্ছেন তারা।

বিশ্লেষকদের মতে, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রার্থী নির্ধারণে জটিলতায় পড়বে আওয়ামী লীগ। একাধিক যোগ্য সম্ভাব্য প্রার্থীর মধ্যে একক প্রার্থী চূড়ান্ত করা কঠিন হবে। ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মতোই বিদ্রোহী প্রার্থী ঠেকাতে ব্যর্থ হবে দায়িত্বশীল নেতারা।

আওয়ামী লীগ সূত্র মতে, যত কঠিন হোক স্থানীয় নির্বাচনে ছাড় দেবে না আওয়ামী লীগ। চলমান উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে স্থানীয় নির্বাচনে নৌকার মনোনীত প্রার্থীর জয়ের বিকল্প নেই। কোনোভাবেই বিএনপি প্রার্থী যাতে বেরিয়ে আসতে না পারে সেজন্য প্রতিটি পৌরসভায় একক দলীয় প্রার্থী নিশ্চিত করা হবে।

দক্ষ, যোগ্য, ত্যাগী, স্বচ্ছ ও দলের জন্য নিবেদিত প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়া হবে। বিগত সময়ে যারা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে দলকে বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে ফেলেছেন, এমন প্রার্থী মনোনয়ন পাবে না।

এজন্য ইতোমধ্যে কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। গঠিত তৃণমূল মনোনয়ন বোর্ডে তিনজনের প্রার্থী তালিকা পাঠানোর জন্য বলা হয়েছে। এরপর কেন্দ্র খোঁজখবর নিয়ে একক প্রার্থী নিশ্চিত করবে।

পৌরসভাগুলোতে নির্বাচনে ক্লিন-ইমেজ, সৎ, যোগ্য এবং সাধারণ ভোটার ও দলীয় নেতাকর্মীদের কাছে গ্রহণযোগ্য প্রার্থীকে দলীয় মনোনয়ন দিতে চায় হাইকমান্ড।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খান এমপি জানান, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রার্থী নির্ধারণে বেশ কয়েকটি বিষয় গুরুত্ব পাবে। এর মধ্যে- নির্বাচনি এলাকায় জনগণের মধ্যে প্রার্থীর গ্রহণযোগ্যতা, দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে তার যোগাযোগের গভীরতা এবং বিগত সময়ে দলের জন্য প্রার্থীর ত্যাগ।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম বলেন, আওয়ামী লীগ বিশাল দল। কোনো বিশৃঙ্খলা নেই, প্রতিযোগিতা আছে। একক প্রার্থী নির্ধারণ কোনো চ্যালেঞ্জ নয়, দল যাকে চূড়ান্ত করবে সবাই তার জন্য কাজ করে। এরপরও কেউ দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে এবং আগামীতেও নেয়া হবে।

আমারসংবাদ/এআই