Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী গরু লাঙল মই দিয়ে জমিচাষ

শাহ আলম, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ)

ডিসেম্বর ১, ২০২০, ০৯:৫০ পিএম


 হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী গরু লাঙল মই দিয়ে জমিচাষ

ভোরের শিশির জমা ঘাস মাড়িয়ে কাঁধে লাঙল নিয়ে কৃষক একজোড়া গরু নিয়ে ছুটছে তার জমির উদ্দেশ্যে। বাংলাদেশের গ্রামের কথা মনে হলে এই একটা আবছা কল্পনা ভেসে আসে আমাদের মস্তিষ্কে। কিন্তু প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় বাপ-দাদার আমলের জমি চাষের সেই গরু লাঙলের জায়গায় আমাদের দিয়েছে ট্রাক্টর আর পাওয়ার টিলার।

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা প্রাচীনকাল থেকেই চাষাবাদ ও ফসল উৎপাদনের এক অপার সম্ভাবনার স্থান। উপজেলার বারোবাজারের সবজি, বালিয়াডাঙ্গার ফুলচাষ, দুলাল মুন্দিয়ার পান, কোলা-কালা এলাকার ধানের আবাদ সবসময়ই কালীগঞ্জের কৃষিতে দারুণ ভূমিকা রেখে চলেছে।

এই চাষাবাদ করতে প্রয়োজন হয় চাষ জমি কর্ষণের। আর সেই কাজটি করা হতো লাঙল আর গরু দিয়ে। আজ থেকে পনেরো বা বিশ বছর পেছনে ফিরে তাকালে দেখা যায়, তখন এলাকার প্রতিটি চাষির ঘরে লাঙল-গরু ছিলো। যা চাষিরা তাদের সন্তানের মতো ভালোবাসতো ও যত্ন নিতো। বর্তমানে সেই লাঙল-গরুর জায়গাটি দখল করে নিয়েছে ট্রাক্টর। অল্প সময়ে অধিক জমি চাষাবাদ করা যায় বলে আজ ট্রাক্টরের কদর অনেক বেশি।

উপজেলায় ইরি মৌসুমকে সামনে রেখে শুরু হয়েছে জমিচাষ। দিনরাত এক করে যন্ত্রগুলো চষে বেড়াচ্ছে মাঠের পর মাঠ। তারপরও এখনো দেখা মিলছে গ্রাম-বাংলার সেই আইকনিক লাঙল-গরু দিয়ে জমিচাষ। হয়তো আর পাঁচ-দশ বছর পর পরবর্তী প্রজন্ম হয়তো লাঙল চিনবে শুধু বইয়ের পাতায় কিংবা জাদুঘরের ছবিতে। এখন আর চোখে পড়ে না গরু-লাঙল দিয়ে চাষাবাদ। জমি চাষের প্রয়োজন হলেই অল্প সময়ের মধ্যেই পাওয়ার টিলারসহ আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে চালাচ্ছে জমি চাষাবাদ।

তাই যারা লাঙল গরু দিয়ে জমি চাষকে পেশা হিসেবে নিয়েছিল তারাও এখন পেশা বদলি করে অন্য পেশায় ঝুঁকছেন। ফলে দিন দিন কমে যাচ্ছে গরু, লাঙল, জোয়াল দিয়ে জমিতে হাল-চাষ।

কালীগঞ্জ উপজেলার ঝনঝনিয়া গ্রামের কৃষক আইয়ুব হোসেন জানান, আধুনিক যন্ত্রপাতির থেকে গরুর লাঙলের চাষ বেশ ভালো হয়। জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি ও ফসলের চাষাবাদ করতে সার ও কীটনাশক সাশ্রয় হয়। কষ্ট হলেও গরু দিয়ে হালচাষ করতে খুব ভালো লাগতো। এখন মনে পড়লেই কষ্ট হচ্ছে।

আমারসংবাদ/এসটিএম