Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

মৌসুমের পরও ডেঙ্গুর প্রকোপ: নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে

ডিসেম্বর ১, ২০২০, ১০:১০ পিএম


মৌসুমের পরও ডেঙ্গুর প্রকোপ: নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে

করোনা মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি ও নানা রকম কর্মসূচি বাস্তবায়নের কারণে মশাবাহিত রোগ মোকাবিলার বিষয়টি আড়ালে চলে যাচ্ছে কি না, গত কয়েক মাসে এ প্রশ্ন বারবার দেখা দিয়েছিল। অক্টোবর ও নভেম্বরে দেশে ডেঙ্গু সংক্রমণের চিত্র পর্যালোচনা করলে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা নিয়ে আর কোনো সংশয় থাকে না।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, জানুয়ারি থেকে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দিলেও সদ্য সমাপ্ত নভেম্বর মাসে সর্বোচ্চ সংখ্যক ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, জানুয়ারিতে ১৯৯ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৪৫ জন, মার্চে ২৭ জন, এপ্রিলে ২৫ জন, মে মাসে ১০ জন, জুনে ২০ জন, জুলাইয়ে ২৩ জন, আগস্টে ৬৮ জন, সেপ্টেম্বরে ৪৭ জন, অক্টোবরে ১৬৩ জন এবং নভেম্বরে ৫ শতাধিক জন রোগী ভর্তি হন।

এসময়ে ডেঙ্গু সন্দেহে ৬ জনের মৃত্যু তথ্য পাওয়া গেলেও আইইডিসিআর ৪ জনের মৃত্যু পর্যালোচনা করে ৩ জনের মৃত্যু ডেঙ্গুজনিত বলে নিশ্চিত করেছে। অনেকে মনে করেন, ডেঙ্গু নিয়ে সারা বছরের যে চিত্র আমরা পাচ্ছি, তা প্রকৃত চিত্র নয়। করোনা সংক্রমণের শুরুর দিকে মানুষ বিভিন্ন হাসপাতালে দুর্ভোগের শিকার হয়েছে। তাই ভোগান্তির আশঙ্কায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত অনেকেই হাসপাতালে যাননি। ফলে সেসব অসুস্থ ব্যক্তি করোনা নাকি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

লক্ষ্য করা যাচ্ছে, রাজধানীর বাইরে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। দেশে অনেকেই মনে করতেন, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া- এসব রাজধানীকেন্দ্রিক সমস্যা। কিন্তু এটা স্পষ্ট হচ্ছে যে, এডিস মশা রাজধানীর বাইরেও ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়েছে। ঢাকায় ডেঙ্গুবাহী এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে কিছুদিন চিরুনি অভিযান চালানো হয়েছে।

এসময় বিভিন্ন স্থাপনায় এডিসের লার্ভা পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্টদের জরিমানাও করা হয়েছে। তবে ঢাকার বাইরে এমন তৎপরতার কথা শোনা যায়নি। যেহেতু ডেঙ্গু শুধু রাজধানীরই সমস্যা নয়, সেহেতু এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে দেশব্যাপী বিশেষ অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে। আমাদের দেশে সাধারণত জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুর মৌসুম বিবেচনা করা হয়।

কিন্তু এ বছর অক্টোবর ও নভেম্বরে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এ তথ্য বিবেচনায় নিয়ে আগামীতে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। ডেঙ্গুসংক্রান্ত আমাদের অভিজ্ঞতা মোটেও ভালো নয়। বছরব্যাপী মশক নিধন কার্যক্রম অব্যাহত না থাকলে মৌসুমের আগে-পরেও পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিতে পারে; যার আভাস এবার পাওয়া গেলো। এডিস মশার প্রজনন ক্ষেত্র কিভাবে ধ্বংস করতে হবে, তা বহুল আলোচিত। কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন উদ্যোগের সঙ্গে জনগণকে সম্পৃক্ত করলে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে সুফল মিলবে। আমরা আশা করি, অন্য বছরের মতো ডেঙ্গু পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার আগেই একটা কার্যকর পদক্ষেপ দৃশ্যমান হবে।

আমারসংবাদ/এআই