Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪,

ইন্টারনেটের ধীরগতি পরিষেবা বৃদ্ধিতে পদক্ষেপ নিন

ডিসেম্বর ৩, ২০২০, ০৬:৫৫ পিএম


ইন্টারনেটের ধীরগতি পরিষেবা বৃদ্ধিতে পদক্ষেপ নিন

দেশে ইন্টারনেট ব্যবহার মানুষের দৈনন্দিন বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপ, ভাইবার বা অন্য কোনো অ্যাপে প্রবাসে থাকা সন্তান বা আত্মীয়দের সঙ্গে সকাল-বিকাল ভিডিও কলে কথা বলা, গ্রুপ মিটিং, এমনকি সেমিনার-ওয়ার্কশপ পর্যন্ত অনলাইনে করা এখন স্বাভাবিক বিষয়।

ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আর্থিক লেনদেন, বিভিন্ন ইউটিলিটির বিল প্রদান, দৈনন্দিন বাজার থেকে শুরু করে নানা ধরনের কেনাকাটা, সরকারি-বেসরকারি নানা ধরনের সেবা- সবই এখন ইন্টারনেটে পাওয়া সম্ভব।

করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর ইন্টারনেটের প্রয়োজন আরও বেড়ে গেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় চলছে অনলাইন ক্লাস। গান শোনা, সিনেমা দেখা বা বিনোদনও এখন অনলাইননির্ভর হয়ে পড়ছে। ডিজিটাইজেশন যত বাড়ছে, তত বাড়ছে ইন্টারনেটের ব্যবহার।

কিন্তু সে তুলনায় বাড়ছে না ইন্টারনেটের গতি। মাঝেমধ্যেই সংযোগ কেটে যাচ্ছে। ডাউনলোড হতে সময় লাগছে অনেক বেশি। শহরের চেয়ে গ্রাম এলাকায় এ সমস্যা অনেক বেশি। ডাউনলোডের স্পিড কয়েক কিলোবাইটের বেশি হয় না। এই অবস্থায় সরকার ‘ফাইভ-জি’ সহায়ক শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে।

পাশাপাশি চাহিদা অনুযায়ী উচ্চগতির ইন্টারনেট নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশকে তৃতীয় সাবমেরিন কেবলের সঙ্গে যুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে। এ জন্য ‘বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে তৃতীয় সাবমেরিন কেবল স্থাপন’ শীর্ষক একটি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।

ইন্টারনেটের গতি কম থাকায় গ্রাহকরা শুধু সমস্যায়ই পড়ছেন না, প্রতারিতও হচ্ছেন। তারা যে পরিমাণ ইন্টারনেট কিনছেন নির্ধারিত মেয়াদে তা ব্যবহার করতে পারছেন না। সব মোবাইল অপারেটরের সিম সব এলাকায় ঠিকমতো কাজও করে না।

অথচ দেশের দুটি সাবমেরিন কেবল থেকে পাওয়া প্রচুর পরিমাণে ব্যান্ডউইডথ অব্যবহূতই থেকে যাচ্ছে। মোবাইল অপারেটররা প্রয়োজন অনুযায়ী স্পেকট্রাম কিনছে না। যেখানে দরকার ১০০ মেগাহার্জ, সেখানে তারা কিনছে ৪০ মেগাহার্জ। এতে দিন দিনই গ্রাহকদের ভোগান্তি বাড়ছে।

এ কারণে মোবাইল ফোন গ্রাহকদের একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে ২৮ নভেম্বর ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব, বিটিআরসি চেয়ারম্যান ও চার মোবাইল ফোন অপারেটরের প্রধান নির্বাহীদের আইনি নোটিস পাঠানো হয়েছে।

নোটিসে বলা হয়েছে, সাত দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া না হলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। গ্রাহকদের এভাবে ক্ষুব্ধ হওয়ার আরও অনেক যুক্তিসংগত কারণ রয়েছে। এসব ব্যাপারে বিটিআরসির আরও সক্রিয়া হওয়া প্রয়োজন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় তৃতীয় সাবমেরিন কেবল স্থাপন প্রকল্প ছাড়াও টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক আধুনিকীকরণ প্রকল্পের ব্যয় দুই হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে তিন হাজার ৩১৪ কোটি ৯৪ লাখ টাকা করা হয়েছে। কাজ সম্পন্ন করার মেয়াদও বাড়ানো হয়েছে।

পৃথিবী দ্রুত বদলে যাচ্ছে। সেই বদলের সঙ্গে তাল মিলিয়েই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আর সে ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তিতে আমাদের আরও অনেক দূর এগোতে হবে। আশা করি, আমাদের নীতিনির্ধারকরা সেভাবেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন। ইন্টারনেটের ধীরগতির কারণে মানুষের জরুরি কাজ যেনো ব্যাহত না হয় সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি দিতে হবে।

আমারসংবাদ/এআই