Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪,

আমদানি নেই চালের বাজার ঊর্ধ্বমুখী

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

জানুয়ারি ১০, ২০২১, ১০:২০ পিএম


আমদানি নেই চালের বাজার ঊর্ধ্বমুখী

চাঁপাইনবাবগঞ্জের চারটিসহ দেশে আরও ১৯টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে দুই লাখ ২৫ হাজার টন চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জের অনুমতি পাওয়া এসব ব্যবসায়ী ৩৫ হাজার টন চাল আমদানির অনুমতি পেলেও এখনো কোনো চাল আমদানির এলসি খোলেননি তারা।

এদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের চালের বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চালের দাম নতুন করে না বাড়লেও গত এক সপ্তাহ আগের বর্ধিত দামেই চাল বিক্রি হচ্ছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জে আমদানির অনুমতিপ্রাপ্ত মেসার্স হোসেন ট্রেডার্স ১০ হাজার টন, মেসার্স ইসলাম ট্রেডার্স পাঁচ হাজার টন, মেসার্স নবাব ফুড প্রোডাক্টস ১০ হাজার টন এবং মেসার্স নজরুল সুপার রাইস মিল ১০ হাজার টন চাল আমদানির অনুমতি পেয়েছে। কিন্তু এসব প্রতিষ্ঠানের কেউই বিভিন্ন অজুহাতে চাল আমদানি করছে না।

চাল আমদানির শর্তে বলা হয়েছে, বরাদ্দপত্র ইস্যুর সাতদিনের মধ্যে ঋণপত্র (এলসি) খুলতে হবে। এ সংক্রান্ত তথ্য খাদ্য মন্ত্রণালয়কে তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে হবে। ব্যবসায়ীদের মধ্যে যারা পাঁচ হাজার টন বরাদ্দ পেয়েছেন, তাদের এলসি খোলার ১০ দিনের মধ্যে ৫০ শতাংশ এবং ২০ দিনের মধ্যে পুরো চাল বাজারজাত করতে হবে। এছাড়া যেসব প্রতিষ্ঠান ১০-৫০ হাজার টন বরাদ্দ পেয়েছে তাদের এলসি খোলার ১৫ দিনের মধ্যে ৫০ শতাংশ এবং ৩০ দিনের মধ্যে সব চাল এনে বাজারজাত করতে হবে শর্ত দিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু চাঁপাইনবাবগঞ্জের ব্যবসায়ীরা এখনো চাল আমদানির কোনো উদ্যোগ নিচ্ছেন না।

এ ব্যাপারে নবাব ফুড প্রোডাক্টসের স্বত্বাধিকারী আকবর হোসেন জানান, তিনি অনুমতি পাওয়ার পর ভারতে খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছেন ভারতের বাজারে বস্তাপ্রতি ২৮ জাতের চালের দাম ২১শ টাকা থেকে ৩শ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪শ টাকায়। এছাড়া ভারতে চাল আমদানির অর্ডার দেয়া হলে ট্রাফিক জ্যামের কারণে সে চাল আসতে আরও ১৫ দিন লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকায় তিনি এখনো চাল আমদানি শুরু করতে পারেননি।

অন্যদিকে নজরুল অটোরাইস মিলের স্বত্বাধিকারী জানান, সরকারের এতো অল্প সময়ে বেঁধে দেয়া শর্ত মেনে আমাদের পক্ষে চাল আমদানি করা অসম্ভব। এরপরও আমি দেড় হাজার টন সোনামসজিদ বন্দর দিয়ে আমদানি করেছি। ভারতে আমাদের প্রতিনিধি করোনার কারণে ঢুকতে না পারায় চাল কেনা সম্ভব হয়নি। তাই চাল আমদানি করতে পারিনি।

এদিকে, সোনামসজিদ বন্দর পরিচালনাকারী পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের অপারেশন ম্যানেজার কামাল হেসেন জানান, সোনামসজিদ বন্দর দিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো চাল আমদানি হয়নি। তবে আমদানিকারক নজরুলের চাল আমদানির বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি দাবি করেন আমদানিকারকের কোনো চাল এ বন্দরে প্রবেশ করেনি।

এদিকে জেলার বিভিন্ন পাইকারি বাজারগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত সপ্তাহে চালের দাম কেজি প্রতি তিন-চার টাকা বাড়লেও বর্তমানে বাড়তি দামেই চাল বিক্রি হচ্ছে। তবে চাল আমদানি না হলে মিলাররা চালের দাম যেকোনো মুহূর্তে আবারো বাড়িয়ে দিতে পারে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের পুরাতন বাজারের চালের পাইকারি ব্যবসায়ী টি ইনসান জানান, গত এক সপ্তাহে নতুন করে চালের দাম না বাড়লেও গত সপ্তাহের বর্ধিত দামেই বর্তমানে তিনি চাল বিক্রি করছেন। তিনি চিকন ২৮ জাতের ৫০ কেজি বস্তার চাল ২৮শ, মিনিকেট তিন হাজার টাকা, মোটা স্বর্ণা জাতের ২১৫০ টাকা এবং আতব চাল রকম ভেদে কেজি প্রতি ৮৪ থেকে ৮৬ টাকা দরে বিক্রি করছেন।

প্রসঙ্গত, চাল আমদানির শুল্ক ৬২ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশে কমিয়ে লাগামহীন চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে গত ৩ জানুয়ারি এক লাখ পাঁচ হাজার টন সিদ্ধ চাল আমদানির জন্য ১০টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে এবং পরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের চারটিসহ ১৯টি প্রতিষ্ঠানকে চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছিল খাদ্য মন্ত্রণালয়।

আমারসংবাদ/জেআই