Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪,

কেউ দুর্নীতি করলেই ব্যবস্থা

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক

জানুয়ারি ১৩, ২০২১, ১০:৩০ এএম


কেউ দুর্নীতি করলেই ব্যবস্থা

সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতি নিয়ে এক ধরনের হাইপ (জোয়ার) উঠে গেছে উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেছেন, কোনো কোনো ক্ষেত্রে টিম ওয়ার্কেও দুর্নীতি আছে। তবে ব্যক্তিগত দুর্নীতিই বেশি। দুর্নীতি হলে তা প্রতিকারের ব্যবস্থা আছে। জনপ্রতিনিধি হিসেবে টাকা ব্যয়ের ক্ষেত্রে আমাদের দেখার বিষয়। তবে বিধি-বিধানের বাইরে আমরা কিছু করতে পারবো না।

তিনি বলেন, সরকারপ্রধান দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনগণের শক্ত ভূমিকার প্রতি সরকারের দৃষ্টি রয়েছে। তাই কেউ দুর্নীতি করলে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এ জন্যই উন্নয়নকাজের ব্যয়ের ক্ষেত্রে ফেজিবিলিটি স্টাডি করা দরকার। 

গতকাল ‘উন্নয়ন প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদনের খসড়া রূপরেখা চূড়ান্তকরণ’ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব আসাদুল ইসলাম। এ সময় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অধিদপ্তরের সচিব, অতিরিক্ত সচিব, মহাপরিচালক, নির্বাহী পরিচালক, যুগ্ম প্রধান, উপ-প্রধান, উপ-সচিব উপস্থিত ছিলেন।

খসড়া রূপরেখা উপস্থাপন করেন ডিজিটাল ডাটাবেইজ সিস্টেম ও আর্কাইভ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এনইসি- একনেক ও সমন্বয় অনুবিভাগের সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক ইউনূস মিয়া।

পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, সারা দেশে উন্নয়নের জোয়ারে মানুষের প্রচণ্ড আগ্রহ। তাই উন্নয়নকাজে সচেতন থাকতে হবে। কে মন্ত্রী সেটা বিষয় নয়। কারণ মন্ত্রিত্ব স্থায়ী নয়। আজ আছে কাল নেই। 

তিনি বলেন, যেখানেই যাই, যে আলোচনায় যাই, দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্ন করে। আমি বিরক্ত হই। দুর্নীতিতো কোনো প্রশ্নের বিষয় নয়। এটা একটা ক্রিমিনাল অ্যাক্ট। পকেটমার একটা ক্রিমিনাল বিষয়। এটা নিয়ে আলোচনা করা, সেমিনার করার কোনো অর্থ হয় না। পকেটমার কী, আমরা বুঝি-জানি। দুর্নীতি হচ্ছে। এর ব্যবস্থাও আমাদের কাছে আছে। দুর্নীতি হলে কী করতে হবে, সেই বিধান তো আছে। আমরা এর বাইরে কিছু করতে পারবো না। তবে দুর্নীতি নিয়ে সচেতন থাকতে হবে। 

জনগণের মধ্যে যখন এত আলোচনা হচ্ছে, তখন বুঝতে হবে নিশ্চয়ই কিছু না কিছু ভিত্তি আছে। আলো-আঁধারির বিষয় আছে। এটাকে এড়িয়ে চলতে হবে। আমি বিশ্বাস করি না যে, দুর্নীতিবাজদের সাথে কাজ করি। কারণ সরকারপ্রধান খুবই সচেতন। কঠোর অবস্থানে দুর্নীতির বিরুদ্ধে। জনগণেরও ঘৃণা রয়েছে এর বিরুদ্ধে। 

মন্ত্রী বলেন, এতদিন সম্ভাব্যতা যাচাই নিয়ে ফরম্যাট না থাকায় একটি বড় দুর্বলতা ছিলো। আমি মনে করি, সরকারি অর্থ ব্যয়ে প্রকল্প গ্রহণ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই সম্ভাব্যতা যাচাই করা প্রয়োজন। এই রূপরেখা বাংলায় করতে হবে। তাছাড়া শুধু কাগজে কলমে থাকলেই হবে না। যারা ব্যবহার করার কথা তারা সঠিকভাবে ব্যবহার করছে কি না সেটি তদারকি করতে হবে। আমি ইঞ্জিনিয়ার নই। তাই ওই বিষয়টি বলতে চাই না। কিন্তু অর্থ ব্যয়ের বিষয়টি বুঝি। তাছাড়া মানুষ এখন শিক্ষিত বেশি। সেটি পরিমাণ এবং গুণগত মানের দিক থেকে বেড়েছে।

সিনিয়র সচিব আসাদুল ইসলাম বলেন, উন্নয়ন প্রকল্প সঠিকভাবে বাস্তবায়নের জন্য প্রথম পর্যায়েই সম্ভাব্যতা যাচাই আবশ্যক। এটি ভালোভাবে হলে পরবর্তী সময়ে সবকিছুই ভালো হবে। 

ইউনূস মিয়া বলেন, প্রকল্প তৈরি পর্যায়েই সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা গেলে পরবর্তী সময়ে আর কোনো জটিলতা থাকবে না। বেস্ট ইনভেস্টমেন্টের জন্য অবশ্যই সম্ভাব্যতা যাচাই করতে হবে। এ চিন্তা করেই বিভিন্ন সময়ে মিটিং করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই কমিটি খসড়া রূপরেখা তৈরির আগে সবগুলো মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মতামত নিয়েছে। এখন খসড়াটি চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। 

এটিতে বলা হয়েছে সমস্যা কোথায়, কারা লাভবান হবে, বাস্তবায়নকাল, কস্ট-বেনিফিট, ফিনানসিয়াল, সোশ্যাল, হিউম্যান, অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ এবং লিগ্যাল অ্যানালাইসিস করতে হবে ফেজিবিলিটি স্টাডিতে। এভাবে ১৩টি সেকশন রয়েছে। ফেজিবিলিটি স্টাডিতে এসব তুলে ধরা হলে প্রকল্পটি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হবে। এর সাথে সমন্বয় করে বিদ্যমান প্রকল্প প্রণয়ন, অনুমোদন ও সংশোধন গাইডলাইনও সংশোধন করতে হবে।

আমারসংবাদ/জেডআই