Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

ডিজিটালাইজড হচ্ছে চলতি বছরই

নিজস্ব প্রতিবেদক

জানুয়ারি ১৯, ২০২১, ০৮:০৫ পিএম


ডিজিটালাইজড হচ্ছে চলতি বছরই

প্রতিষ্ঠালগ্নে শহরভিত্তিক এবং সেবামূলক কার্যক্রম দিয়ে যাত্রা শুরু করলেও সময়ের প্রেক্ষাপটে বর্তমানে দেশব্যাপী তৃণমূল পর্যায়েও বিস্তৃতি লাভ করেছে সমাজসেবা অধিদপ্তরের কার্যক্রম। সরকারের অন্যতম জাতিগঠনমূলক দপ্তর হিসেবে দেশের দুস্থ, দরিদ্র, অবহেলিত, অনগ্রসর, সুযোগ-সুবিধাবঞ্চিত, সমস্যাগ্রস্ত পশ্চাৎপদ ও প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীকে সেবা প্রদান করে আসছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়াধীন সমাজসেবা অধিদপ্তর।

লক্ষ্যভুক্ত এসব জনগোষ্ঠীকে মানবসম্পদে পরিণত করে সমাজসেবা অধিদপ্তর দারিদ্র্যবিমোচন এবং সামাজিক নিরাপত্তা প্রদানের মাধ্যমে দেশের সার্বিক উন্নয়নেও রাখছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। এরই মধ্যে সুবিধাভোগীদের কেন্দ্রীয় ডিজিটাল তথ্যভাণ্ডারের আওতায় আনয়ন এবং ই-সার্ভিসের (ই-পেমেন্ট) মাধ্যমে স্বল্প ব্যয়ে, স্বল্প সময়ের মধ্যে দক্ষতা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে সুবিধাভোগীদের দোরগোড়ায় কাঙ্ক্ষিত মানের সেবা পৌঁছে দিতে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জের বিপরীতেই সার্বিক কার্যক্রম বাস্তবায়নে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে সমাজসেবা অধিদপ্তর।

এছাড়া সুবিধাভোগী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে একটি স্বচ্ছ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে Targeting Error  (নির্বাচনগত ভুল) হ্রাস করাও অধিদপ্তরের একটি বড় চ্যালেঞ্জ। নিবন্ধনপ্রাপ্ত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কার্যক্রমের যথাযথ পরিবীক্ষণ, সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ সুবিধাভোগীদের স্বাবলম্বীকরণ, শিশুপরিবার ও বেসরকারি এতিমখানাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রতিপালিত শিশুদের কর্মমুখী শিক্ষা ও কর্মসংস্থান নিশ্চিতকরণ এবং ভিক্ষুক পুনর্বাসনের অন্যতম চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায়ও অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শেখ রফিকুল ইসলামের দক্ষ ব্যবস্থাপনায় এগিয়ে যাচ্ছে সমাজসেবা অধিদপ্তর। 

সমাজসেবা অধিদপ্তরের তথ্যে জানা যায়, গত তিন বছরে ৪৪ লাখ বয়স্ক ভাতাভোগী, ১৭ লাখ বিধবা, স্বামী নিগৃহীতা মহিলা ভাতাভোগী এবং ১৫.৪৫ লাখ অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতাভোগী, এক লাখ প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর উপবৃত্তিসহ মোট ৭৭.৪৫ লাখ হাজার ভাতাভোগীর নামে ব্যাংক হিসাব খুলেছে অধিদপ্তর। ভাতাভোগীকে G2P (Government to Person) ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে ও ভাতাভোগীর ব্যাংক হিসাবে সরাসরি ভাতার অর্থ পরিশোধও করা হচ্ছে। ১৮ লাখ প্রতিবন্ধী ব্যক্তির প্রতিবন্ধিতা শনাক্তকরণ, তার মাত্রা নিরূপণ ও পরিচয়পত্র প্রদান করা হয়েছে। ১১.২৩ লাখ ভাতা গ্রহীতাকে ই-পেমেন্টে ভাতা প্রদান করার পাশাপাশি জেলাপর্যায়েও জেলা সমাজসেবা কমপ্লেক্স নির্মাণ কার্যক্রমও শুরু করেছে সমাজসেবা অধিদপ্তর। 

এছাড়াও সেবাদানে শুদ্ধাচার অনুশীলন নিশ্চিতকরণ, ইনোভেশনকে উৎসাহিত করা, সেবাগ্রহীতার পরিতৃপ্তির জন্য কার্যকর পরিষেবা প্রদান এবং সেবা প্রদান পদ্ধতিকে ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটালাইজ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সমাজসেবা অধিদপ্তর। ২০২১ সালের মধ্যে সমাজসেবা অধিদপ্তরের সকল সেবাগ্রহীতার একটি সমন্বিত ডিজিটাল তথ্য ভাণ্ডার তৈরি ও G2G পদ্ধতিতে সকল ভাতাভোগীকে ভাতা প্রদান সম্পন্ন করা হবে বলেও জানিয়েছে অধিদপ্তর।

সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমকে করা হবে গতিশীল। শিশু সুরক্ষা কার্যক্রমে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ গতিশীল করার মাধ্যমে দক্ষ জনবল বৃদ্ধির গৃহীত পরিকল্পনার বাস্তবায়নে চলতি অর্থবছরে ৪৯ লাখ ব্যক্তিকে বয়স্কভাতা, ২০ লাখ ৫০ হাজার জনকে বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা এবং ১৮ লাখ জন ব্যক্তিকে অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা ও এক লাখ প্রতিবন্ধী শিশুকে উপবৃত্তি প্রদান, ৭০  হাজার দরিদ্র ব্যক্তিকে উদ্বুদ্ধকরণ ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে বলে জানায় অধিদপ্তর।

বিনিয়োগ ও পুনঃবিনিয়োগের মাধ্যমে ১৩০ কোটি টাকা সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ প্রদান করা হবে, যাতে নিম্নআয়ের জনগোষ্ঠী ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তির আত্মকর্মসংস্থান, নিজস্ব পুঁজি সৃষ্টি, দারিদ্র্য হ্রাস এবং ক্ষমতায়ন নিশ্চিত হয়। সমাজের বিশেষ শ্রেণি বিশেষত- হিজড়া, বেদে ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে পাঁচ হাজার ২০ ব্যক্তিকে প্রশিক্ষণ, ৫২ হাজার ৬০০ ব্যক্তিকে বিশেষ ভাতা ও ২৭ হাজার ১৪০ শিশুকে শিক্ষাবৃত্তি চালুর মাধ্যমে ব্যক্তির জীবনমান উন্নয়নের পাশাপাশি ৮৫টি সরকারি শিশু পরিবারের মাধ্যমে ১০ হাজার ৩০০ সুবিধাবঞ্চিত শিশুর আবাসন, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ নিশ্চিত, প্রতিবন্ধিতা শনাক্তকরণ জরিপের কেন্দ্রীয় তথ্য ভাণ্ডারে সংরক্ষিত ১৮ লাখ প্রতিবন্ধী ব্যক্তির তথ্য বিশ্লেষণ করে তাদের উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় আনার ব্যবস্থা গ্রহণ, ২২ জেলায় জেলা সমাজসেবা কমপ্লেক্স তৈরি সম্পন্ন, বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে ছয় হাজার ২১৮ জন কামার-কুমার, নাপিত, মুচি, বাঁশ-বেত ও কাঁসা-পিতল প্রস্তুতকারকের দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে উদ্যোক্তা ও চাকরির উপযুক্ত হিসেবে রূপান্তর ও SDG এর লক্ষ্যমাত্রা ৫.৪.১ এর আলোকে অবৈতনিক গৃহস্থালি কাজের মর্যাদা উন্নীতকরণেও সচেতনতা বৃদ্ধি করা হবে বলে জানিয়েছে সমাজসেবা অধিদপ্তর।

আমারসংবাদ/জেআই