Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,

সুষ্ঠুভাবেই চলছে টিকাদান

মাহমুদুল হাসান

ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২১, ০৭:৪০ পিএম


সুষ্ঠুভাবেই চলছে টিকাদান
  • কর্মসূচিতে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এসএমএস পাঠিয়ে টিকাদান করা হচ্ছে -জাহিদ মালেক, মন্ত্রী, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়
  • যেসব জায়গায় নিবন্ধন বেশি হচ্ছে সেখানে টিকাদান বুথ বাড়ানো হচ্ছে -মো. আবদুল মান্নান, সচিব, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ডের গণটিকাদান চলছে। মৃদু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকায় এ টিকায় মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচি ইতোমধ্যে সফলতার মুখ দেখেছে। গুজব ও অপপ্রচারকে পাশ কাটিয়ে ইতোমধ্যে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে সোয়া দুই লাখের বেশি মানুষ টিকা নিচ্ছে। সংখ্যার হিসাবে এ পর্যন্ত পৌনে ১৬ লাখের বেশি মানুষ টিকা গ্রহণ করেছে। তাদের মধ্যে মাত্র ৫০০ ব্যক্তির শরীরে মৃদু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া লক্ষ করা গেছে। তারা সবাই ইতোমধ্যে সুস্থও হয়ে উঠেছে। আরও বেশি মানুষকে টিকার আওতায় আনতে সুরক্ষা ওয়েবসাইটে বয়সের সীমারেখা শিথিল করা হয়েছে। এখন থেকে ৪০ বছর বয়সিরাও টিকার জন্য নিবন্ধন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলা এড়াতে টিকাকেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে নিবন্ধন ও টিকা গ্রহণ কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে।

সেই সাথে অভয় দিয়ে বলা হয়েছে, টিকায় মানুষের আগ্রহ বাড়লেও কোনো সঙ্কট তৈরি হবে না। চলতি মাসেই ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড টিকার দ্বিতীয় চালান আসবে। তিন কোটি ডোজের ইতোমধ্যে ৫০ লাখ এসেছে। চলতি মাসে আরও ৫০ লাখ আসার কথা রয়েছে। সুষ্ঠুভাবে টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে সারা দেশে ৫০ হাজারেরও বেশি স্বাস্থ্যকর্মী এক হাজারের বেশি হাসপাতালে কাজ করছে। সরকারের চলমান গণটিকাদান কর্মসূচির সার্বিক বিষয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে কোভিড-১৯ জাতীয় কারিগরি কমিটি। তাদের পরামর্শেই এখন থেকে অন্তত আট সপ্তাহ পর টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন্স অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের তথ্যমতে, গতকাল বুধবার রাজধানীসহ সারা দেশের এক হাজার ১০টি হাসপাতালে আরও দুই লাখ ২৬ হাজার ৭৫৫ জন নর-নারী টিকা গ্রহণ করেছেন। তার মধ্যে এক লাখ ৪৫ হাজার ২০৩ জন পুরুষ এবং ৮১ হাজার ৫৫২ জন নারী। এদের মধ্যে ২০ জনের শরীরে মৃদু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া লক্ষ করা গেছে। এ পর্যন্ত ১৫ লাখ ৮৬ হাজার ৩৬৮ জন ব্যক্তি করোনার টিকা গ্রহণ করেছেন। তাদের মধ্যে বেশির ভাগ পুরুষ। সংখ্যার হিসাবে ১০ লাখ ৬৮ হাজার ৭১৯ জন পুরুষ এবং পাঁচ লাখ ১৭ হাজার ৬৪৯ জন নারী। এ পর্যন্ত টিকা গ্রহীতাদের মধ্যে ৫১০ জনের শরীরে মৃদু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া লক্ষ করা গেলেও এখন তারা সবাই সুস্থ। সারা দেশের টিকাদান কর্মসূচিতে ৫০ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী কাজ করছেন বলেও জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান বলেন, ‘আমাদের টিকার পরবর্তী চালানে ৫০ লাখ ডোজ আসা নিয়ে কোনো ধরনের শঙ্কার অবকাশ নেই। টিকার দ্বিতীয় চালান ৫০ লাখ ডোজ চলতি মাসের শেষে বা পরের মাসের প্রথম সপ্তাহে আসবে।’ তিনি বলেন, ‘টিকাদান কেন্দ্রে কেউ যাতে বলতে না পারে এখানে খারাপ অবস্থা হচ্ছে বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা খুব ধীরে যাচ্ছি, যেহেতু আমাদের হাতে সময় আছে। আমরা চাচ্ছি না একটি ভ্যাকসিনও অপচয় হোক। এই কারণে আমরা চমৎকারভাবে করার (টিকাদান) চেষ্টা করছি। সচিবালয় ক্লিনিকে দুটি বুথ বাড়ানো হয়েছে। যেসব জায়গায় বেশি বুথের প্রয়োজন হচ্ছে সেখানে বাড়ানো হচ্ছে। টিকার যেনো অপচয় না হয় সেভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘প্রতিটি টিকাদান কেন্দ্রের দৈনিক টিকাদান করার একটি সক্ষমতা ঠিক করা আছে। কিন্তু প্রতিদিন নিবন্ধন হচ্ছে এর চেয়ে অনেক বেশি। ফলে অনেকের মোবাইলে টিকা দেয়ার দিন তারিখ জানিয়ে এসএমএস যেতে দেরি হচ্ছে। আমরা যখন শুরু করলাম, তখন নিবন্ধনের সংখ্যা কম ছিলো। যারা টিকা নিতে আসতে, এমন মানুষের সংখ্যাও কম ছিলো। এখন নিবন্ধন অনেক হয়ে গেছে। যেখানে প্রতিদিন এক হাজার জনকে টিকা দেয়ার ক্ষমতা আছে, সেখানে প্রতিদিন তিন হাজার জনের নিবন্ধন হয়, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা দেরি হবে। এ কারণে সময় নিয়ে তারিখ দিচ্ছে। যারা এসএমএস পায়নি এখনো তারাও এসএমএস পেয়ে যাবে।’ তিনি বলেন, ‘প্রথমে বয়সসীমা ৫৫ বছর করা হয়েছিল। কিন্তু নিবন্ধন করতে আগ্রহী মানুষের সংখ্যা কম থাকায় বয়সসীমা ৪০ বছর করা হয়েছিল। আমরা এটা ৪০ থেকে বাড়িয়ে দেবো না। কিন্তু কমিয়েও দেয়া হবে না।

আমারসংবাদ/জেআই