Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪,

দেড় কোটি টাকা আত্মসাৎ

আসাদুজ্জামান আজম

ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২১, ০৮:০০ পিএম


দেড় কোটি টাকা আত্মসাৎ

বগুড়া জেলার দুপচাঁচিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. বেলাল হোসেনের বিরুদ্ধে পৌরসভার ৭১ কর্মচারীর প্রভিডেন্ট ফান্ড, আনুতোষিক ফান্ড ও ঋণের কিস্তির দেড় কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ করে প্রতিকার না পেয়ে আদালতে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী কর্মচারীরা।

এছাড়াও মন্ত্রণালয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে পছন্দের প্রার্থীদের পৌরসভায় নিয়োগ দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। সরকারি ভ্যাট, আইটি সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। ভুয়া ভ্রমণ বিল দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা গ্রহণ করেছেন। তার এসব কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের বগুড়া অঞ্চলের উপ-পরিচালকের কাছে আবেদন করলেও কোনো প্রতিকার না পেয়ে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। বিষয়টি আমলে নিয়ে তদন্তে নেমেছে দুদক। দুদকে করা অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, পৌরসভার ৭১ জন কর্মচারী, পৌর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৭ জন শিক্ষক, স্টাফদের প্রভিডেন্ট ফান্ড, আনুতোষিক ফান্ড ও ঋণের কিস্তির এক কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। পৌরসভার দুই হাটের বাংলা ১৪২৫ ও ১৪২৬ সনের মুুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ খাত, ভূমি রাজস্ব খাত, ভ্যাট আইটির ৫০ লাখ টাকা অ্যাকাউন্টগুলোতে জমা না দিয়ে তিনি আত্মসাৎ করেছেন। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে টাকা জমার অনুরোধ করলেও তিনি তা জমা করেননি। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র ছাড়াই দুপচাঁচিয়া পৌর বালিকা বিদ্যালয়ের চারটি পদে নিয়োগ দেয়া হয়। বিপুল আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে নিয়োগের শর্ত লঙ্ঘন করে নিয়োগের অভিযোগ রয়েছে মেয়রের বিরুদ্ধে।

২০১৭ সালে পৌরসভায় ১৯ জন জনবল নিয়োগের ছাড়পত্রের জন্য তথ্য চায় স্থানীয় সরকার বিভাগ। সেখানে কর্মচারীদের বেতন-ভাতা এবং বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকলেও ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে সবকিছু হালনাগাদ রয়েছে বলে তথ্য দেয়া হয়। এভাবে ৩০ জন কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছেন তিনি। এই কর্মচারী নিয়োগে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য করেন মেয়র বেলাল হোসেন।

এছাড়াও দুপচাঁচিয়া পৌরসভায় যানবাহন থেকে ২০১৬ ও ১৭ সালে ২৫ লাখ টাকা, ২০১৮ সালে ২০ লাখ টাকা জমা হলেও ২০১৯ সালে মেয়র কোনো টাকা জমা না করে নিজে আত্মসাৎ করেন। বিধিবহির্ভূতভাবে সড়ক ও জনপথ বিভাগের রাস্তার উন্নয়নকাজের নামে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৬১ লাখ ৬২ হাজার ৩৮২ টাকা এবং একই অর্থবছরে ৯০ লাখ টাকা বিল প্রদান করেন। উভয় কাজের ঠিকাদার বেলাল হোসেনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত মেসার্স শিমু কন্সট্রাকশনের মালিক আবুল কালাম আজাদ।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দুপচাঁচিয়া থানা বিএনপির সহ-সভাপতি ছিলেন বেলাল হোসেন। ২০১৪ সালে এ পদে থেকে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে পৌর মেয়র নির্বাচিত হন তিনি। এরপর ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগে যোগ দেন তিনি। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের থানা কমিটির সহ-সভাপতিও হয়েছেন তিনি। এতে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন বিএনপির সময়ে নির্যাতনের শিকার হওয়া নেতাকর্মীরা। জানতে চাইলে দুপচাঁচিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. বেলাল হোসেন বলেন, অভিযোগটি তদন্তাধীন আছে। দেখা যাক। এর বাইরে কোনো কথা বলেননি তিনি।

আমারসংবাদ/জেআই