Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

হাজারো সালাম বীর শহীদসহ ভাষাসৈনিকদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২১, ০৯:১০ পিএম


হাজারো সালাম বীর শহীদসহ ভাষাসৈনিকদের

অ, আ, ক, খ —এই অক্ষরগুলোই আমাদের প্রাণ, জয়ের গান, বিশ্বের দরবারে পরিচয় করে দিতে যার ভূমিকা অপরিসীম। মায়ের ভাষা কথাটির পেছনে অনেক রক্তঝরা শহীদের স্মৃতি বিজড়িত। মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় সালাম, রফিক, বরকত, জব্বারদের মতো বাঙালিদের রক্তের বিনিময়ে আজ এ দিনটিকে আরও বেশি স্মরণীয় করে রাখতে ইউনেস্কো ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

বিশ্বের বিভিন্ন ভাষার মানুষেরা আজকের এই পৃথিবীর মানচিত্রে সম্মান জানিয়েছে আমাদের এই ভাষা শহীদদের প্রতি। দ্বিজাতিতত্তের ভিত্তিতে মায়ের ভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করতে অনেক ঐতিহাসিক ঘটনা পরিলক্ষিত হয়েছিল ব্রিটিশ শাসন শোষণের পর। আজ আমরা স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলার মাটিতে এই মায়ের ভাষাকে প্রতিষ্ঠা করেছি সেই রক্তঝরা শহীদদের আন্দোলনের মাধ্যমে। পাকিস্তানি জান্তারা বরাবরই বাংলার মেধাবীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলো মেধাশূন্য করে তাদের উর্দু ভাষাকে পুরোপুরিভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে। কিন্তু তা কি করে সম্ভব; বাংলার মায়ের সন্তানেরা এতটা দেশপ্রেমী যেখানে যেকোনো পরাশক্তিকে প্রতিহত করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তাই মহান একুশে ফেব্রুয়ারি দিনটি কালজয়ী সাক্ষী হয়ে আছে আজকের এই বাংলাদেশ।

যেই দেশটিতে আজ সবাই মুক্তমনে তাদের মনের ভাব প্রকাশ করতে পেরেছে। এই বাংলা সংস্কৃতির ছোঁয়ায় আজ আমরা অনেক কিছুতে বিশ্বের দরবারে জানান দিতে পেরেছি মেধা বিকাশের মাধ্যমে। যেখানে আজ পৃথিবীর মানচিত্রে সিয়েরালিওন নামক রাষ্ট্রটি পর্যন্ত আজ আমাদের মায়ের ভাষাকে প্রাধান্য দিয়েছে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ ঐতিহাসিক গানটি পরিবেশন করে। ভাষা আন্দোলনের তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাখ্যা কিংবা পর্যালোচনার ইতিহাস সবারই জানা। তারপরও এই মাতৃভাষার ঐতিহাসিক পটভূমিকে স্মরণ করে রাখতে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত পুনরায় প্রকাশ করতে হলো এই প্রজন্মের কাছে। কারণ নতুন প্রজন্মকে আরও বেশি দেশপ্রেমী চিন্তা-চেতনায় উদ্বুদ্ধ হতে হবে আগের ইতিহাসকে স্মরণ করে। উৎখাত করতে হবে ১৯৫২, ১৯৭১’ এর সেই পাকিস্তানি অপশক্তিকে, যারা এখনো এই দেশের বিরুদ্ধে কোনো না কোনো রাজনৈতিক দল কিংবা ব্যক্তিস্বার্থের দোহাই দিয়ে সক্রিয় রয়েছে প্রগতিশীল ও সুষ্ঠু ধারার গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে। তাই সাড়ে ১৬  কোটি বাঙালি সজাগ থাকবে সকল অপশক্তিকে পরিহার করে বাংলাদেশকে টিকিয়ে রাখার জন্য এই স্মরণীয় দিনটিকে মনে রেখে। বাংলাদেশকে সঠিক গণতন্ত্রে পৌঁছে দিতে সরকারের পাশাপাশি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আবারো সৃষ্টি করতে হবে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের ঐতিহাসিক স্মৃতিকে লালন করে।

ভাষার লড়াইয়ের তাৎপর্যপূর্ণ পর্যালোচনা : ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট পাকিস্তান রাষ্ট্রের উদ্ভব ঘটে দ্বিজাতিতত্তের ওপর ভিত্তি করে। পূর্ব বাংলায় মসুলমানরা ছিলো সংখ্যাগরিষ্ঠতার দিক দিয়ে। তাই পূর্ববাংলাকে পাকিস্তানের অন্তর্ভূক্ত করা হয়। পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকে ওই দেশের কেন্দ্রীয় সরকার পূর্বপাকিস্তান অর্থাৎ বাংলাদেশের শিক্ষা, শিল্প, সংস্কৃতি ধ্বংস করার চেষ্টা চালায় যার পরিপ্রেক্ষিতে সৃষ্টি হয় ভাষা আন্দোলন। পাকিস্তানের নব্য উপনিবেশবাদী, ক্ষমতালোভী, উদ্ধত শাসকরা শুরু থেকেই পূর্ববাংলার মানুষের ওপর নির্যাতনের স্টিম রোলার চালাতে থাকে। তাদের প্রথম টার্গেট ছিলো কিভাবে কেড়ে নেবে এই বাংলা মায়ের মুখের ভাষা। পাকিস্তান সৃষ্টির পূর্বে আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য ড. জিয়াউদ্দিন উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। পূর্ববঙ্গ থেকে ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন এবং বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি জানান। প্রখ্যাত লেখক ড. আব্দুল ওয়াদুদ ভুইয়ার ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক উন্নয়ন’ নামক বইয়ের ১৭০ পৃষ্ঠায় স্পষ্টভাবে বিভিন্ন ভাষা-ভাষির আনুপাতিক হার পরিলক্ষিত হয়। যেখানে বাংলা ভাষার আনুপাতিক হার ছিলো ৫৪.৬, পাঞ্জাবি  ২৭.১, পশতুন ৬.১, উর্দু ৬, সিন্ধি ৪.৮ এবং ইংরেজি ভাষার আনুপাতিক হার ছিলো ১.৪ শতাংশ। তাহলে স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়, বাংলা ভাষার আনুপাতিক হার ছিলো সবচেয়ে বেশি। আর মাত্র ৬ শতাংশ ভাষা উর্দুকে পাকিস্তানি স্বৈরশাসকরা রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল।

শুধু তাই নয়, একের পর এক নির্যাতন ও বর্বরোচিত হামলা করে আমাদের প্রাণের ভাষা বাংলাকে একইবারে সর্বস্বান্ত করতে মরিয়া হয়ে উঠে। কিন্তু মায়ের ভাষাকে টিকিয়ে রাখতে এই বাংলার আকাশে-বাতাসে তখন ধ্বনিত হতে থাকে রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই নামক স্লোগান। আর এই মিছিলের কণ্ঠস্বর এত বেশিই প্রতিধ্বনিত হতে থাকে যার ফলে আজ আমরা মায়ের ভাষায় কথা বলতে পারছি। ১৯৪৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর ভারত বিভাগের ১৯তম দিনে ‘তমদ্দুন মজলিস’ গঠন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকরা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার দাবিতে সাংস্কৃতিক আন্দোলনে রূপ দেয়ার উদ্যোগ নেন। ওই বছরের ১৫  সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা না উর্দু’ শিরোনামে এই সংগঠনের উদ্যোগে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করা হয়, যা ভাষা আন্দোলনের ঘোষণাপত্র নামে পরিচিত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আবুল কাসেমী মূলত রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিকে আন্দোলনে রূপ দেয়ার প্রথম উদ্যোক্তা। তার উদ্যোগেই তমদ্দুন মজলিস নামের সাংস্কৃতিক সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৪৭ সালের নভেম্বর মাসে করাচিতে এক কেন্দ্রীয় পর্যায়ের শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পূর্ববাংলা এই  সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তখন তীব্র প্রতিবাদ শুরু করে। ১৯৪৮ সালের জানুয়ারি মাসে এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে ঢাকায় সর্বপ্রথম রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয় এবং কতিপয় দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের নীতি গঠিত হয়।

ওই বছরই পাকিস্তান গণপরিষদের প্রথম অধিবেশনে কংগ্রেস দলীয় সদস্যরা বিশেষত কুমিল্লার ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত দাবি জানান, ইংরেজি ও উর্দুর পাশাপাশি বাংলা ভাষা ব্যবহার করার জন্য। কিন্তু ১৯৪৮ সালের ১৯ মার্চ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ তার প্রথম পূর্বপাকিস্তান সফরে এসে ঢাকার এক জনসভায় ঘোষণা করেন— ‘উর্দু এবং উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা।’ তিনদিন পরে কার্জন হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন উৎসবে তিনি যখন একই ঘোষণার পুনরাবৃত্তি করেন, তখন উপস্থিত ছাত্ররা না না না... বলে এর প্রতিবাদ জানায়। পূর্বপাকিস্তানের প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর অব্যাহত দূরুভিসন্ধি দৃষ্টিভঙ্গী, বিভিন্ন ন্যায্য দাবি-দাওয়া পূরণে অস্বীকৃতি এবং ভাষার ক্ষেত্রে মুসলিম লীগ সরকারের নীতির বিরোধিতায় মজলুম জননেতা মওলানা আবদুুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে গঠিত হয় আওয়ামী মুসলিম লীগ। আর সেই সময়ের বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর, দেশপ্রেমী, সাহসী, মেধাবী আর ভাষা আন্দোলনের আরেক সৈনিক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিযুক্ত হন সহ-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে। একই সময়ে পশ্চিম পাকিস্তানেও পীর মানকি শরিফের নেতৃত্বে আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠিত হয়। পরবর্তীতে এই দুই দল একত্রিত হয়ে পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠন করে এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এর আহ্বায়ক নিযুক্ত হন। ভাসানী ১৯৪৯ থেকে ১৯৫৭ পর্যন্ত আট বছর আওয়ামী মুসলিম লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন এবং ভাষা আন্দোলনসহ পূর্বপাকিস্তানের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের নেতৃত্ব  দেন।

পাকিস্তানে প্রথম বিরোধী দল হিসেবে পূর্ব পাকিস্তানি রাজনৈতিক নেতৃত্বে গড়ে ওঠা আওয়ামী মুসলিম লীগ ভাষা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং রাজপথের আন্দোলন সংগঠনের পাশাপাশি পার্লামেন্টেও রাষ্ট্রভাষার  দাবিতে সোচ্চার ভূমিকা পালন করে। ১৯৫০ সালে প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান এবং ১৯৫২ সালে খাজা নাজিমুদ্দিন পুনরায় একই  ঘোষণা দেন যে, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। ফলে ছাত্র-বুদ্ধিজীবী মহলে দারুণ ক্ষোভ ও হতাশা সৃষ্টি হয় এবং আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করে। এ আন্দোলনের অংশ হিসেবে ১৯৫২ সালের ৩০ জানুয়ারি ঢাকাতে সর্বাত্মক ছাত্র ধর্মঘট পালিত হয়। আন্দোলনকে তীব্রতর করার লক্ষ্যে ওই দিনই এক জনসভায় সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ কমিটি গঠিত হয়। আর এই কমিটির মধ্য দিয়ে প্রতিনিয়ত রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই স্লোগান ক্রমান্বয়ে জোরদার হতে থাকে। এর ফলে ২১ ফেব্রুয়ারির ওই কর্মসূচিকে বানচাল করার জন্য তখনকার গভর্নর নুরুল আমিন সরকার ঢাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেন। কিন্তু পূর্ববাংলার ছাত্র-জনতা সকল ভয়কে উপেক্ষা করে আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকে। তারা এতে কোনোরূপ ভ্রুক্ষেপ না করে সংগ্রাম চালিয়ে যায়। সরকার কর্তৃক জারিকৃত ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন কলাভবনের সামনে থেকে শান্তিপূর্ণ মিছিল অগ্রসর হয় এবং কিছু দূর অগ্রসর হয়ে মিছিল যখন ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে আসে ঠিক তখনি পুলিশ মিছিলের ওপর গুলিবর্ষণ করে। ফলে মিছিল কিছুটা ছত্রভঙ্গ হয় এবং রফিক, বরকত, সালাম, জব্বারসহ আরও নাম না জানা অনেক ছাত্র শহীদ হন। সরকারের এই বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে সারা দেশে বিদ্রোহের আগুন দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে। ছাত্রদের পাশাপাশি সমাজের সর্বস্তরের মানুষ প্রতিবাদমুখর হয়ে শহীদের রক্তে রঞ্জিত রাজপথে নেমে আসেন এবং প্রবল প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে ওঠে।

১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি এদেশের আপামর ছাত্রসমাজ বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে যে মাতৃভাষা বাংলা অর্জিত হয়েছে তার গণ্ডি তখন শুধু দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বরং একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলনের চেতনা আজ ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্রই। ভাষার জন্য বাঙালি জাতির এ আত্মত্যাগ আজ নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছে মাতৃভাষার গুরুত্ব সম্পর্কে। তাই ১৯৫৩ সাল থেকে প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি মহান ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ দিন প্রত্যুষে সর্বস্তরের মানুষ নগ্ন পায়ে প্রভাতফেরিতে অংশগ্রহণ করে এবং শহীদ মিনারে গিয়ে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন ও পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে। সারা দিন মানুষ শোকের চিহ্নস্বরূপ কালো ব্যাজ ধারণ করে।

১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা-ইউনেস্কো বাংলাদেশসহ ২৭টি দেশের সমর্থনে সর্বসম্মতভাবে মহান একুশে ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। ইউনেস্কোর প্রস্তাবে বলা হয়— ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষার জন্য বাংলাদেশের অনন্য ত্যাগের স্বীকৃতিস্বরূপ এবং সারা বিশ্বে স্মরণীয় করে রাখতে এই দিনটিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হলো। প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি ইউনেস্কোর ১৮৮টি সদস্য দেশ এবং ইউনেস্কোর সদর দপ্তরে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করে। আর এরই ধারাবাহিকতায় ২০০০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সারা বিশ্বব্যাপী প্রথম পালিত হয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ২০০১ সাল থেকে দিবসটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে উদযাপিত হচ্ছে।

আজ আমরা হাসি-আনন্দ, দুঃখ বেদনা সবকিছুই প্রকাশ করি মায়ের ভাষায়। তাই ভাষার এ গুরুত্বের কথা ভেবেই পৃথিবীর সব দেশেই প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় মাতৃভাষার মাধ্যমে। মাতৃভাষা দিয়েই শিশুর মনে স্বদেশ প্রেমের সূত্রপাত ঘটে। আমাদের মাতৃভাষা বাংলা। ১৯৫২ সালের এই দিনে রক্তের বিনিময়ে অকাতরে জীবন দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলা ভাষার মর্যাদা— ‘আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমিকি ভুলিতে পারি।’

লেখক : সাংবাদিক, লেখক, গবেষক

আমারসংবাদ/জেআই