Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪,

প্রার্থী নির্বাচনে কঠোর আ.লীগ

রফিকুল ইসলাম

ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২১, ০৬:৪০ পিএম


প্রার্থী নির্বাচনে কঠোর আ.লীগ
  • তৃণমূলের রেজ্যুলেশন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ
  • রাজনৈতিক পরিচয় চুলচেরা বিশ্লেষণ করবেন দায়িত্বপ্রাপ্তরা

তৃণমূলের হাইব্রিড, সুবিধাবাদি ও বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে শক্তিশালী তৃণমূল গঠনে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর অংশ হিসেবে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী নির্বাচনে রূপরেখা চূড়ান্ত করেছেন তিনি। প্রার্থীদের রাজনৈতিক পরিচয় চুলচেরা বিশ্লষণ করে ত্যাগী, পরিশ্রমী, জনসম্পৃক্ত নেতাদের মনোনয়ন দেবেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে তৃণমূলের রেজ্যুলেশন পর্যায়ক্রমে কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশনা দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

তথ্যমতে, আগামী ১১ এপ্রিল ভোটগ্রহণের মধ্যদিয়ে সারা দেশে শুরু হবে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। ওই দিন প্রথম ধাপে ৬৩টি উপজেলার ৩২৩টি ইউনিয়নে ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। মার্চের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচনের তফসিল মতো আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এবার বেশ কয়েক ধাপে গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে ইসি।

এদিকে গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ও চলমান পৌরসভা নির্বাচনের মতোই আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও ভোটের সুফল ঘরে তুলতে চায় আওয়ামী লীগ। এ জন্য আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের রাজনৈতিক পরিচয় চুলচেরা বিশ্লষণ করবেন ক্ষমতাসীন দলটির কেন্দ্রীয় সিনিয়র ও বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। বিশেষ করে দলের জন্য নিবেদিত, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় মাঠের আন্দোলন-সংগ্রামে পরীক্ষিত, দুর্দিনের ত্যাগী, পরিশ্রমী ও জনপ্রিয় এবং  জনসম্পৃক্ত নেতাদের মনোনয়ন দেবেন তারা।

একই সাথে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কোনোভাবেই যেনো ক্ষমতালোভী, সুবিধাবাদি, অনুপ্রবেশকারী, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে আগত হাইব্রিড ও দলীয় পদের অপব্যবহার করে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িতরা মনোনয়ন না পায় সে দিকেও কঠোর নজর দিচ্ছে ক্ষমতাসীন দলটি। এ জন্য ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের রেজ্যুলেশন পর্যায়ক্রমে কেন্দ্রে পাঠানোর জন্য জেলা, মহানগর, উপজেলাসহ তৃণমূলের বিভিন্ন ইউনিটির দায়িত্বশীল নেতাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

ওই রেজ্যুলেশনে বলা হয়েছে— ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের সুনির্দিষ্ট গঠনতান্ত্রিক বিধি মোতাবেক তৃণমূলের রেজ্যুলেশনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের অনুচ্ছেদ ২৮(৩) (ঙ) অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ বর্ধিত সভার আয়োজন করবে এবং আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আগ্রহী প্রার্থীদের একটি প্যানেল সুপারিশের জন্য কেন্দ্রে পাঠাবে। ওই প্যানেলটি জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের (মোট ছয়জন) যুক্ত স্বাক্ষরে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডিস্থ রাজনৈতিক কার্যালয়ে (বাড়ি-৫১/এ, সড়ক-৩/এ, ধানমন্ডি আ/এ, ঢাকা) দপ্তর বিভাগে জমা দেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

তৃণমূল আ.লীগের  অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, টানা একযুগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জর্জরিত। বিশেষ করে স্থানীয় এমপি ও প্রভাবশালী নেতাদের বয়লভিত্তিক রাজনীতির কারণে সৃষ্টি হয়েছে ভাই লীগ, এমপি লীগ। দলীয় নেতাকর্মীদের এমন অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও দ্বন্দ্ব দিশাহারা তৃণমূল আওয়ামী লীগ। কোনো কোনো সাংসদ নিজ নিজ বলয়ের ক্ষমতা ধরে রাখতে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে পছন্দের প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয়ার অপচেষ্টা করেন। গত পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ও চলমান পৌরসভা নির্বাচনে নৌকার মনোনয়নের ক্ষেত্রে কার্যত এমন চিত্র উঠে আসে।

বিশেষ করে কোথাও কোথাও সাংসদপন্থিরা মনোনয়নবঞ্চিত হওয়ায় বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন অনেকেই।  এতে ভোটের মাঠে ভরাডুবি হয়েছে নৌকার প্রার্থীর। নৌকা ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মাঝে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কঠোর নির্দেশনারও তোয়াক্কা করেনি কোনো কোনো সাংসদ ও সাংসদপন্থিরা। তাই আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে স্থানীয় এমপি-মন্ত্রী এবং প্রভাবশালী নেতাদের প্রভাবমুক্ত রাখতে চায় আওয়ামী লীগ। এ জন্য তৃণমূল থেকে পাঠানো তালিকায় থাকা প্রার্থীদের রাজনৈতিক পরিচয় বিশ্লেষণ করা হবে।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম বলেন, ‘তৃণমূলের ত্যাগী, পরিশ্রমী ও রাজনৈতিকভাবে সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে নৌকার মনোনয়ন দেয়া হবে। কোনোভাবেই যেনো হাইব্রিড, সুবিধাবাদি ও বিতর্কিতরা নৌকার মনোনয়ন না পায়, সেদিকে বেশি নজর দেয়া হচ্ছে।

আমারসংবাদ/জেআই