Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪,

আমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

এম দুলাল আহাম্মেদ, গুইমারা (খাগড়াছড়ি)

ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২১, ০৭:৫০ পিএম


আমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা
  • খাগড়াছড়িতে আমগাছগুলো মুকুলের সাজ সাজ রব ঘ্রাণ আর মৌমাছির মৌ মৌ গন্ধে জেলার সর্বত্র জানান দিচ্ছে এ বছর আমের বাম্পার ফলন হবে

ফাল্গুনের ছোঁয়ায় ফাগুন সেজেছে, পলাশ শিমুলের বনে লেগেছে আগুন রঙা ফুলের মেলা। শীতের জড়তা কাটিয়ে কোকিলের সেই সুমধুর কুহুতানে মাতাল করতে আবারো ফিরে এলো ঋতুরাজ বসন্ত। পাহাড়ের রঙিন বনফুলের সমারোহে প্রকৃতি যেমন সেজেছে বর্ণিল সাজে। তেমনি নতুন সাজে যেন জেগে উঠেছে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার আম্রপালির বাগানগুলো। আম গাছগুলো মুকুলের সাজ সাজ রব ঘ্রাণ আর মৌমাছির মৌ মৌ সুর জেলার সর্বত্র জানান দিচ্ছে এ বছর আমের বাম্পার ফলন হবে। শোভা ছড়াচ্ছে আম্রমুকুল তার নিজস্ব মহিমায়। মুকুলে মুকুলে ভরে গেছে জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাগানগুলো। প্রায় ৯০ শতাংশ গাছেই মুকুল এসেছে। বাগান মালিক, কৃষিবিদ, আমচাষিরা আশা করছেন বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে খাগড়াছড়িতে আমের বাম্পার ফলন হবে।

আমচাষি, বাগান মালিকরা বাগানে পরিচর্চা নিয়ে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। অবশ্য গাছে মুকুল আশার অনেক আগে থেকেই  গাছের পরিচর্চা করে আসছেন চাষিরা। যাতে করে গাছে মুকুল বা গুটি বাধার সময় কোনো সমস্যার সৃষ্টি না হয়। মুকুল থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছিরা মধু আহরণে ব্যস্ত, মৌ মৌ সুবাসে মুখরিত এখন আম্রপলির বাগন। বাগানের সারিবদ্ধ গাছে ভরপুর আমের মুকুল যেন শোভা ছড়াচ্ছে তার নিজস্ব মহিমায়।

কথা হয় আম চাষে সফল কৃষক আবদুর রব, মফিজুল ইসলাম, মো. লিটন মিয়াসহ অনেকের সাথে। তারা জানান, শীতের জড়তা কাটিয়ে বসন্তে আগমনে ধীরে ধীরে উষ্ণ হাওয়া সাথে সাথে প্রতিটি বাগানের প্রায় ৯০ ভাগ গাছে মুকুল শোভা পাচ্ছে। এ বছর ক্ষতিকারক পোকার আক্রমণ কম থাকায় এবার কাঙ্ক্ষিত ফলনের আশা করছেন তারা। খাগড়াছড়ির মাটি ও আবহাওয়া আম্রপলি, ফজলি, নেংরা, মল্লিকা, ব্যানানা, গোপাল ভোগ, মালদাসহ অন্য জাতের আম চাষের উপযোগী হওয়ায় দিন দিন বাগান ও চাষির সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০০৩ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতায় পাহাড়ের টিলাভূমিতে আমসহ মিশ্র ফল বাগান গড়ে উঠে। এসব বাগানের সুবিধাভোগীদের সুফল দেখে চাষিরা আম চাষে উৎসাহিত হয়ে নিজ উদ্যোগে প্রথমে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কুড়িগ্রাম থেকে চারা সংগ্রহ করে আমের বাগান করলেও বর্তমানে তারা নিজেরাই চারা উৎপাদন করে নিজ নিজ উদ্যোগে নতুন নতুন বাগান করছেন এবং তাদের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য প্রাণপণ সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। ধীরে ধীরে পার্বত্যাঞ্চলে সমপ্রসারিত হচ্ছে আমের বাগান। পার্বত্যাঞ্চলে উৎপাদিত আম মানসম্মত হওয়ায় চাহিদাও রয়েছে অনেক। এক সময়ে হয়তো পার্বত্য চট্টগ্রামের উৎপাদিত আম দেশের সিংহভাগ চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করতে পারতে সক্ষম হবে।

জেলা কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মর্তুজা আলী জানান, খাগড়াছড়ির মাটি আমচাষের জন্য খুবই উপযোগী। আমচাষে অল্প সময়ে ফলন পাওয়া যায়। মাত্র ২-৩ বছর বয়স থেকে আমের ফলন শুরু হয় এবং দীর্ঘসময় পর্যন্ত টানা ফলন পাওয়া যায়। এ বছর খাগড়াছড়িতে ৩২শ হেক্টর ভূমিতে আমের বাগান রয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামশ্য দিয়ে সহযোগিতা করছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় আমের উৎপাদন গত বছরের চেয়ে বৃদ্ধি পাওয়ার আশা করছেন তিনি।

তিনি জানান, খাগড়াছড়ি জেলায় উৎপাদিত আমের গুণগতমান খুব ভালো, তাই এ জেলায় উৎপাদিত আমারে চাহিদাও প্রচুর।

আমারসংবাদ/জেআই