মার্চ ৩, ২০২১, ০৭:২০ পিএম
খালেদা জিয়ার স্থায়ী মুক্তি নিয়ে বড় আশা দেখছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। দলটির তৃণমূল থেকে হাইকমান্ডেও মুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছে। দলটির নেতাকর্মীরা মনে করছেন, খালেদা জিয়া খুব শিগগিরই মুক্তি পেয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যেতে পারবেন। গতকাল আমার সংবাদের সঙ্গে কথা হয় বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে।
জানতে চাইলে খালেদা জিয়ার আইনজীবী কেন্দ্রীয় বিএনপির আইন-বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল আমার সংবাদকে বলেন, ‘এখন সর্ব মহল থেকে যে স্থায়ী জামিনের কথা বলা হচ্ছে এটি সরকারের ওপর নির্ভর করছে। আমরা চূড়ান্ত শুনানির জন্য আপিল করেছি। সরকারের সদিচ্ছা থাকলে খুব শিগগিরই খালেদা জিয়া ন্যায়বিচার পাবেন। কিন্তু এখন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা পেতে মূল বাধা হচ্ছে সরকার। এই সরকার কোনোভাবে চায় না খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা হোক। খালেদা জিয়া স্বাভাবিক থাকুক। তিনি মুক্ত হয়ে রাজনীতিতে আসুক। যদি চাইত তাহলে খালেদা জিয়াকে সাময়িক মুক্তি অবস্থায় ও উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যেতো। বর্তমানে যে সমস্ত পেন্ডিং মামলা রয়েছে আমরা সেগুলো খুব দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য আবেদন করেছি। শুনানি হলে অবশ্যই খালেদা জিয়া ন্যায়বিচার পাবেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যেতে আর কোনো বাধা থাকবে না।’
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন আমার সংবাদকে বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্র চিকিৎসার জন্য সাময়িকভাবে মুক্তি দিলেও খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা হচ্ছে না। খালেদা জিয়ার এখন প্রয়োজন উন্নত চিকিৎসা যেটাকে আমরা চিকিৎসকের ভাষায় বলি আধুনিক চিকিৎসা। খালেদা জিয়া অতীতে লন্ডন, নিউইয়র্কসহ যেখানে যে চিকিৎসা নিয়েছেন এখন সেখানেই সে চিকিৎসাগুলো নিতে হবে। বাসায় খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসা দেয়া সম্ভব নয়। এখন তার প্রয়োজন স্থায়ী জামিন, স্থায়ী চিকিৎসা— তাহলেই তিনি আধুনিক চিকিৎসা পেতে পারেন।’ তিনি আরো বলেন, ‘এক বছরে তার অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে। কারো সাহায্য ছাড়া চলাফেরা বা নিজের কোনো কাজই করতে পারেন না। ৭৬ বছর বয়সি খালেদা জিয়ার রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, চোখের প্রদাহ, হূদরোগ সমস্যাসহ নানা রকম শারীরিক জটিলতা রয়েছে।’
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী আমার সংবাদকে বলেন, ‘আমরা এতদিন বলে আসছি— খালেদা জিয়া আসলে মুক্ত নন, তিনি বন্দি থেকে গৃহবন্দি। আজ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী স্বীকার করেছেন খালেদা জিয়া যেখানে আছেন সেটিই কারাগার। কারাগারে কখনোই কারো উন্নত চিকিৎসা হতে পারে না। আদালত বলেছে খালেদা জিয়াকে অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্ট দিতে। কিন্তু তিনি এখন যেখানে আছেন সেখানে তা সম্ভব নয়। রোগীরও একটা পছন্দ থাকে। খালেদা জিয়া আগে যেখানে ট্রিটমেন্ট নিয়েছে এখন তা জরুরি হয়ে পড়েছে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা যতটুকু জানি তিনি (বেগম খালেদা জিয়া) খুবই অসুস্থ। তার সুচিকিৎসা প্রয়োজন, যে চিকিৎসা এখানে সম্ভব নয়। এমন কি যে হাসপাতালে তিনি ছিলেন সেখানেও সম্ভব হয়নি। সুচিকিৎসার জন্য তার বাইরে যাওয়া জরুরি দরকার। এ ব্যাপারে সরকারেরে একটা নিষেধাজ্ঞা আছে, আপনারা জানেন। আমরা আশা করবো, তা উঠে যাবে। আমরা দাবি জানাবো, এই ব্যাপারে যে নিষেধাজ্ঞা সেটা প্রত্যাহার করা হোক এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার এই মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা হোক, যেন— তিনি তার চিকিৎসার প্রয়োজনে যখন যেখানে যেতে চান তিনি যেতে পারেন।’
আমারসংবাদ/জেআই