Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,

সাংবাদিক বেশে জঙ্গি তৎপরতা

নিজস্ব প্রতিবেদক

মার্চ ৫, ২০২১, ০৮:১০ পিএম


সাংবাদিক বেশে জঙ্গি তৎপরতা

নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশের (হুজি) অপারেশন শাখার প্রধানসহ তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ। গতকাল শুক্রবার দুপুরে এ তথ্য জানিয়েছেন ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) ইফতেখায়রুল ইসলাম।

তিনি জানান, গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিন জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— মো. মাইনুল ইসলাম ওরফে মাহিন ওরফে মিঠু ওরফে হাসান, শেখ সোহান সা’আদ ওরফে বার আ আব্দুল্লাহ ও মুরাদ হোসেন কবির। অভিযানে তাদের কাছ থেকে একটি প্রাইভেটকার, পাঁচটি মোবাইল ফোন, একটি মাইক্রোফোন, একটি চাপাতি, দুটি ছোরা, ১০টি ডেটোনেটর, ১৭০টি বিয়ারিং লোহার বল, একটি স্কচটেপ, পাঁচ লিটার এসিড, তিনটি আইডি কার্ড ও একটি  জিহাদি বই উদ্ধার করা হয়। 

গ্রেপ্তারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে তিনি জানান, এরা হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামির সক্রিয় সদস্য। মাইনুল ইসলামের নেতৃত্বে হুজি পুনর্গঠন, পূর্ণাঙ্গ শূরা কমিটি প্রস্তুত, সংগঠনের অর্থদাতা ও সদস্যদের কাছ থেকে অর্থের জোগান নিশ্চিত, ব্যাপক হারে রিক্রুটমেন্ট, অস্ত্র সংগ্রহ, বোমা তৈরির সরঞ্জাম সংগ্রহ, কারাগারে আটক সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের জামিনের ব্যবস্থা, বান্দরবান-নাইক্ষ্যংছড়ি পাহাড়ি দুর্গম এলাকায় জমি লিজ নিয়ে ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করার কাজে নিয়োজিত। দেশের ৬৪ জেলায় সংগঠনের বিস্তার ও সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সাংবাদিকতাসহ বিভিন্ন পরিচয়ে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলেন তারা। কারাগারে আটক ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মাওলানা আবু সাঈদ ওরফে ডাক্তার জাফর ও ২০০০ সালের কোটালিপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হত্যাচেষ্টা মামলার যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মেহেদী হাসান ওরফে আব্দুল ওয়াদুদ ওরফে গাজী খানের নির্দেশে সাংগঠনিক কাজ করছিলেন তারা।

এডিসি ইফতেখায়রুল ইসলাম আরও জানান, গ্রেপ্তার মাইনুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে হুজির প্রধান অপারেশন সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করছিলেন। সাংবাদিকতার বেশ ধারণ করে সংগঠনের দাওয়াতি কাজ, অর্থ সংগ্রহ, বোমা তৈরির সরঞ্জাম সংগ্রহ করে আসছিলেন। তার পরিকল্পনা ছিলো ঢাকা শহরে বড় ধরনের নাশকতা করে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করা। ২০১৫ সালে হুজির শীর্ষ নেতা কারাবন্দি মুফতি মঈনউদ্দিন ওরফে আবু জান্দালকে ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তিনি। সোহান সা’আদ সুনামগঞ্জের বিবিয়ানা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। ঢাকায় মিরপুর বাঙলা কলেজে পড়ার পাশাপাশি একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতেন তিনি। ২০১৬ সালে একুশে বইমেলায় নাশকতার ঘটনায় গ্রেপ্তার হন সা’আদ।

এছাড়া তিনি ২০১৭ সালে বিস্ফোরক মামলায় এবং ২০১৯ সালে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় গ্রেপ্তার হন। জামিনে বের হয়ে মাইনুলের নেতৃত্বে হুজির সক্রিয় সদস্য হিসেবে কাজ করতেন তিনি।

মুরাদ ব্যবসার আড়ালে সংগঠনের দাওয়াতি ও বায়তুল মাল দেখভালের দায়িত্ব পালন করতেন। তাদের বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়েছে। তাদের অন্যান্য সহযোগীদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালাচ্ছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা।

এদিকে গ্রেপ্তার হুজির প্রধান সমন্বয়কসহ তিনজনেরই তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল শুক্রবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ার মো. নোমান রিমান্ডের এ আদেশ দেন। তদন্ত সংস্থা কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট তিন আসামিকে আদালতে হাজির করে যাত্রাবাড়ী থানায় দায়ের করা মামলায় প্রত্যেকের ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক প্রত্যেকের তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আমারসংবাদ/জেআই