Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪,

নারী সফলে সাজবে দেশ

মার্চ ৭, ২০২১, ০৯:০০ পিএম


নারী সফলে সাজবে দেশ

নারীর দক্ষতা, যোগ্যতা এবং আত্মবিশ্বাসী মনোভাবে সাজবে বাংলাদেশ। নারীরা এগিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। নারীর শিক্ষা, দায়িত্ব গ্রহণ, পারস্পরিক সহযোগিতা এবং মানসিক মুক্তির মাধ্যমে নারী তার নিজস্ব গণ্ডি থেকে বের হয়ে সামনের দিকে আরও এগিয়ে যাবে— এমনই সফল শিক্ষকদের চিত্র তুলে ধরেছেন ওবাইদুর সাঈদ

  • আত্মবিশ্বাসী মনোভাবে দূর হবে প্রতিবন্ধকতা- শামিম আরা বেগম, বিভাগীয় প্রধান, অর্থনীতি বিভাগ, ঢাকা কলেজ, ঢাকা।

আমি দীর্ঘদিন যাবত ঢাকা কলেজে (বয়েজ কলেজ) অধ্যাপনা করে আসছি। কখনো শিক্ষক পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, আবার সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছি এবং বর্তমানে অর্থনীতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও ঢাকা কলেজ রোভার স্কাউটস গ্রুপের সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। কিন্তু একজন নারী হয়েও (বয়েজ কলেজে) এ ধরনের দায়িত্ব পালনকালে কোনো ধরনের বাধা বা বৈষম্যের শিকার হইনি বরং বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমি এবং আমার শিক্ষার্থীরা সাফল্য অর্জন করেছে।

আমি মনে করি, আমার প্রতিবন্ধকতাহীন চলার পথে আমার মূল পাথেয় হচ্ছে আমার দক্ষতা, যোগ্যতা এবং আত্মবিশ্বাসী মনোভাব। আমি এটাও মনে করি, একজন শিক্ষকই পারেন শিক্ষার্থীর মধ্যে এ ধরনের মূল্যবোধ তৈরি করা যে, প্রত্যেক মানুষকে মানুষ হিসেবে মূল্যায়ন করে তার অধিকার প্রদান করা, এক্ষেত্রে লিঙ্গ কোনো বাধা হতে পারে না। আমি দৃঢ়ভাবে এটাও বিশ্বাস করি, শুধু শিক্ষা বা অর্থনীতির মুক্তিই নয় যেদিন নারী নিজেকে শুধু নারী না ভেবে মানুষ হিসেবে নিজেকে মূল্যায়ন করে বরং নিজের যোগ্যতা ও সক্ষমতার ওপর আস্থাশীল হয়ে আত্মমর্যাদায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে সেদিনই নারী পাবে তার যথাযথ মর্যাদা।

  • মানসিক মুক্তির মাধ্যমে এগিয়ে যাবে নারী- শ্রাবণী ধর, প্রভাষক, ব্যবস্থাপনা বিভাগ, ঢাকা কলেজ, ঢাকা।

আজ ৮ মার্চ, আন্তর্জাতিক নারী দিবস। এই দিবসে আমি যে বিষয়টি বেশি ভাবছি সেটা হলো, নারী একটা গণ্ডিতে আবদ্ধ। সেই গণ্ডিটা নারীর মানসিক গণ্ডি। এই গণ্ডিটাই নারীকে মানুষ হিসেবে ভাবতে বাধা দেয়। এর সাথে অর্থনৈতিক ভিত্তি না থাকাতে সিদ্ধান্তেও নারী থাকতে পারে না। পরিবারের বা ঘরের কাজ একবিংশ শতাব্দীর ২০ বছরে এখনো মেয়েদেরই। এখনো কন্যা সন্তান জন্ম সাদরে গ্রহণ করা হয় না। এই জায়গাগুলোতে নারী-পুরুষের উভয়েরই কাজ করা উচিত বলে আমি মনে করি। নারীদের চক্ষুলজ্জা থেকে বের হয়ে এসে বিয়ের পরও বাবা-মায়ের দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে। কারণ বাবা-মা উভয়েরই।

সংসারের আর্থিক দায়িত্ব যেমন নারী-পুরুষ উভয়েরই হওয়া উচিত, তেমনি সংসারের কাজের দায়িত্বের জায়গাটাও দুজনেরই হওয়া উচিত। শিক্ষা, দায়িত্ব গ্রহণ, পারস্পরিক সহযোগিতা এবং মানসিক মুক্তির মাধ্যমে নারী তার নিজস্ব গণ্ডি থেকে বের হয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসে এটাই প্রত্যাশা করছি।

  • পরিকল্পনামাফিক সুন্দরভাবে ম্যানেজ করে চলি- ড. আখতারা বানু, সহযোগী অধ্যাপক, মনোবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা কলেজ, ঢাকা।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নারীদের ভীষণ লড়াই করে এগিয়ে যেতে হয়। আমি যখন পিএইচডি করি তখন অনেক প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে করতে হয়েছে। পরিবার চাকরি সবকিছুর মধ্য দিয়ে করতে হয়েছে। আমি ঢাকা কলেজে প্রথম নারী বিএনসিসির প্লাটুন কমান্ডার হিসেবে কাজ করি। এ জন্য দেশের বাইরে অনেক সেমিনার করেছি। সবার সহযোগিতা পেয়েছি। ডিপার্টমেন্ট ও পরিবার চালানো খুব চ্যালেঞ্জিং ছিলো কিন্তু আমি পরিকল্পনামাফিক সুন্দরভাবে ম্যানেজ করে চলি তাই সমস্যা হয় না। তবে নারীদের এগিয়ে নিতে পরিবার, সমাজের আরও সচেতনতা বৃদ্ধি করা দরকার। আমি মেন্টাল হেলথ নিয়ে কাজ করতে চাই প্রতিটি শিশুর মাঝে, যাতে তারা সহযোগিতার মানসিকতা নিয়ে বেড়ে উঠে।

নারী দিবসে প্রত্যাশা হলো আমাদের নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে উদার মানসিকতা নিয়ে। নারীরা এগিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। সকল নারীদের জানাই অভিনন্দন।

আমারসংবাদ/জেআই