Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

তথ্য-প্রযুক্তিতে গুরুত্ব দিচ্ছে জনতা ব্যাংক

এম এ আহাদ শাহীন

মার্চ ১৫, ২০২১, ০৯:২০ পিএম


তথ্য-প্রযুক্তিতে গুরুত্ব দিচ্ছে জনতা ব্যাংক
  • গ্রাহকের জন্য ইন্টারনেট ব্যাংকিং, এটিএম বুথ, ডেবিট কার্ড এবং অনলাইন সেবার মাধ্যমে সময়োপযোগী ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করছি -মো. আব্দুছ ছালাম আজাদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও

জনতা ব্যাংক লিমিটেড দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংক। স্বনামধন্য এ ব্যাংকটি ব্র্যান্ডিং হিসেবে সর্বমহলে সুপরিচিত। বর্তমানে ব্যাংকটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আব্দুছ ছালাম আজাদ। তিনি ১৯৭১ সালে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় ভারতে গিয়ে প্রশিক্ষণ শেষে দেশে ফিরে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৮৩ সালে সিনিয়র অফিসার হিসেবে জনতা ব্যাংকে যোগদান করেন তিনি।

প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটি শাখায় দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে কর্মজীবন শুরু করে ২৬ বছরই বিভিন্ন ব্যাংক শাখায় ব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সিরাজগঞ্জে শাখা ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত থাকাকালে ২০০২ সালে সিরাজগঞ্জ এরিয়া সম্মেলনে তার পারফরম্যান্সের কারণে তিনি ব্যাংকের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নজরে আসেন। পরে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের উদ্যোগে প্রধান কার্যালয়ে বদলির সুবাদে তিনি ঢাকায় আসেন।

২০০৪ সালে রাজারবাগ করপোরেট শাখায় দায়িত্ব পালনের সময়কার কর্মদক্ষতা মূল্যায়ন করে তাকে ব্যাংকের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানিকারক শাখা কামাল আতাতুর্ক করপোরেট শাখার দায়িত্ব দেয়া হয়। অল্প সময়ের মধ্যে তিনি শাখাটিকে ব্যবসা-সমৃদ্ধ করে কর্পোরেট-২ থেকে কর্পোরেট-১ শাখায় উন্নীত করতে সক্ষম হন। এরপর ২০০৮ সালে ডিজিএম হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে ২০১০ সাল থেকে জনতা ভবন কর্পোরেট শাখায় দায়িত্ব পালন করেন। সেখানেও তিনি ব্যবসায়িক সফলতা বজায় রেখে শাখাটিকে ব্যবসায়িক সব সূচকে শীর্ষস্থানে নিতে সক্ষম হন। ফলে শাখাটি জিএম হেডেড শাখা হিসেবে উন্নীত হয়। ২০১১ সালে জিএম হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে তিনি ওই শাখায় দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তিনি প্রধান কার্যালয়ের মানবসম্পদ বিভাগে যোগদান করেন।

আব্দুছ ছালাম আজাদ ২০১৬ সালে উপব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে যোগদান করেন। যোগদানের তিন মাস পর আবার উপব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে জনতা ব্যাংকে যোগদান করেন। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার কর্মদক্ষতা, অভিজ্ঞতা, সততা, সুনাম বিচার-বিশ্লেষণ করে জনতা ব্যাংক লিমিটেডের সিইও অ্যান্ড এমডির দায়িত্ব অর্পণ করেন। দায়িত্ব গ্রহণের অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি বিভিন্ন জেলায় কর্মী সমাবেশ করে ঋণ আদায়সহ এসএমই খাতে ঋণপ্রবাহ বাড়ানোর তাগিদ দেন। এর ফলে আশানুরূপ সাফল্যও অর্জিত হয়। অন্যদিকে তথ্য-প্রযুক্তির কল্যাণে ব্যাংক এখন হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। ব্যাংকিং করতে গ্রাহকদের এখন আর ব্যাংকে যেতে হয় না। ঘরে বসেই এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে টাকা ট্রান্সফার করা যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, ব্যাংক এখন অ্যাপভিত্তিক সেবা দেয়া শুরু করেছে। শুধু ব্যাংক থেকে ব্যাংকে নয়, ব্যাংক থেকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সুবিধাও পাওয়া যাচ্ছে। সরকারি খাতের ও বেসরকারি খাতের সব ব্যাংকই ডিজিটাল সেবায় মনোযোগ দিচ্ছে।

এ বিষয়ে একান্ত সাক্ষাতকারে জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. আব্দুছ ছালাম আজাদ আমার সংবাদকে বলেন, ‘গত একযুগে ব্যাংকিং খাতে বিভিন্ন অনলাইন সার্ভিস চালু হয়েছে। ডিজিটাল করার কারণে করোনাকালীন সময়ে মিটিংগুলো ভার্চুয়ালি করেছি। প্রত্যন্ত অঞ্চলেও ডিজিটাল সেবার মাধ্যমে ব্যাংকিং লেনদেন হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘গ্রাহকের জন্য ইন্টারনেট ব্যাংকিং, এটিএম বুথ, ডেবিট কার্ড এবং অনলাইন সেবার মাধ্যমে সময়োপযোগী ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করছি।’

এমডি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ব্যবসায়ীদের যে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে, তা আমরাই সর্বপ্রথম প্রত্যেকটি শাখায় মেইলের মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছিলাম।’ জনতা ব্যাংকের এই প্রধান কর্মকর্তা বলেন, সরকারের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নে অন্যতম অংশীদার হিসেবে আমরা ব্যাংকের তথ্য-প্রযুক্তি খাতে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছি। আমি অত্যন্ত আশাবাদী, এই ব্যাংকের একজন কর্মী হিসেবে এর শক্তি ও দুর্বলতা সম্পর্কে আমার সম্যক জানা আছে। আমার ব্যাংকিং অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার শতভাগ প্রয়োগ করে ব্যাংকটিকে এগিয়ে নিতে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ, এই অগ্রযাত্রায় ছুটে চলেছে জনতা ব্যাংকও।

দীর্ঘ ক্যারিয়ারে আপনি কোন কাজটিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন, এমন প্রশ্নের জবাবে জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. আব্দুছ ছালাম আজাদ বলেন, ‘১৯৭১ সালে আমি অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ছিলাম। ওই বয়সেই জাতির পিতার আহ্বানে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে দেশান্তরী হয়েছিলাম। পশ্চিমবঙ্গের দিনাজপুরে গেরিলা প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিই। ওই সময় ভবিষ্যতের কোনো প্রত্যাশা আমাদের সামনে ছিলো না। দেশের স্বাধীনতায় কিশোর বয়সে রক্ত ঝরিয়েছিলাম, এটিই আমার সবচেয়ে বড় অহংকার। স্বাধীনতার পর সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে ৪০ জন মুক্তিযোদ্ধাকে ভাতা দেয়া হয়েছিল, তার মধ্যে আমি একজন।’

আমারসংবাদ/জেআই