Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪,

বঙ্গবন্ধুর সমান বয়সি আমাদের প্রিয় স্বাধীনতা

মোতাহার হোসেন

মার্চ ১৬, ২০২১, ১০:১৫ পিএম


বঙ্গবন্ধুর সমান বয়সি আমাদের প্রিয় স্বাধীনতা

এক সাগর রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আজ ১৭ মার্চ বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন। তার নেতৃত্বে ও আহ্বানে স্বাধীনতা অর্জিত হয় ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ। সময়ের হিসেবে এ ১৭ মার্চে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী আর স্বাধীনতা অর্জনের ৫০তম বার্ষিকী তথা স্বাধীনতনার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন হচ্ছে সাড়ম্বরে। কিন্তু বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনকের অনুপস্থিতিতে উদযাপিত হচ্ছে জাতির জনকের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব। এ উৎসব পালনের মধ্য দিয়ে আমরা নতুনভাবে নতুন মাত্রায়,গুরুত্বে, সম্পূর্ণ নতুন আঙ্গিকে অনন্য উচ্চতায় নতুন প্রজন্মের সামনে আমরা বঙ্গবন্ধু এবং স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাসকে তুলে ধরার সুযোগ পাচ্ছি। অবশ্য আমার ব্যক্তি অনুভূতি হচ্ছে ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ নদীবিধৌত সবুজ শ্যামল বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চল গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম নেয়া বঙ্গবন্ধুর জন্মের মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের স্বাধীনতার বীজ অঙ্কুরিত হয় সেদিন। কারণ বঙ্গবন্ধুর শৈশব, কৈশোর, যৌবন এবং জীবনের পরবর্তীকালে সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে তার ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়া, দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন সংগ্রামই স্বাধীনতা অর্জনের দিকে, মানুষের মুক্তি অর্জনের পরিচয় মেলে এই সুদীর্ঘকালের পথনির্দেশনার পর্যালোচনায়। সেই আঙ্গিকে বেশি বলা হবে না যে, বঙ্গবন্ধুর জন্মের মধ্যেই লুকায়িত ছিলো বাংলাদেশের স্বাধীনতা।

বাঙালির হাজার বছরের পরাধীনতার শিকল, গোলামির জিঞ্জির ভেঙে স্বাধীনতার লাল সূর্যের রঙের সাথে মিশে আছে ত্রিশ লাখ শহীদের রক্ত, দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম হারানোর বেদনা এবং বিপুল সম্পদ ক্ষতির মাসুল। বিশ্বের অন্য কোনো জাতি, অন্যকোনো দেশের স্বাধীনতা অর্জনে এত ত্যাগের নজির ইতিহাসে বিরল এবং অনন্য। এবারের স্বাধীনতা অর্জনের ৫০তম বছরে এবং স্বাধীনতা অর্জনের মাসে বিনম্র চিত্তে বীর শহীদদের স্মরণ করছে জাতি। কিন্তু এবারের দিবসের মাহাত্ম্য, মর্মার্থ, ব্যপ্তি, গুরুত্ব নতুন করে অনুধাবন, অনুস্মরণের আলাদা বৈশিষ্ট্য নিহিত আছে। কারণ বাঙালির গৌরব উজ্জ্বল স্বাধীনতা, দেশ, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নতুন করে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে পাকিস্তানি পরাজিত শত্রু এবং এদেশীয় বিশ্বাসঘাতক, উগ্রগোষ্ঠী। কয়েকমাস আগে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙ্গার মধ্য দিয়ে আস্ফস্ফলন দেখালো সেই চক্র। এতে শুধু যে জাতির জনকের ভাস্কর্য ভাঙ্গা হলো তা নয়, একইসাথে স্বাধীনতা, মহান মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশের ওপরও হামলা বলে প্রতীয়মান হয়েছে। এই অপশক্তির নেপথ্যে ইন্ধনদাতা, উস্কানিদাতাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার দাবি দেশের আপামর জনতার এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের রাজনৈতিক দলের ।

আসছে ২৬ মার্চে স্বাধীনতা অর্জনের ৫০ বছরের সুবর্ণয়জয়ন্তী উদযাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বাঙালি জাতি। এবারের স্বাধীনতা দিবসের গুরুত্বের এটি হলো এক কারণ। দ্বিতীয়টি হচ্ছে, আমরা সাড়ম্বরে ১৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করবো। কাজেই স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী, জাতির জনকের জন্মশতবার্ষিকী এবং তৃতীয়ত-এবারের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং জাতির জনকের জন্মশতবার্ষিকীর আগ মুহূর্তে গত ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের ৬ দিন আগে বহুল প্রত্যাশিত ‘পদ্মা সেতু’র শেষ স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে সূচিত হলো বাঙালির আরেকটি বিজয় অর্জন। এ তিনটি অর্জনকে সমগ্র জাতি সানন্দে, সাড়ম্বরে, উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপনে প্রস্তুত। প্রসঙ্গত বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সাহসী নেতৃত্বে শেষ স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে জাতির স্বপ্ন পূরণ ও স্বপ্ন ছুঁয়েছে প্রমত্ত পদ্মায় এপার-ওপার। তিন বছর দুমাস দশদিনের মাথায় এলো সেই স্বপ্নের দিন। ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর সেতুতে শেষ স্প্যান বসানোর পর প্রমত্তা পদ্মার দুই পাড়ে রচিত হলো সেতুবন্ধন। বিশ্বনেতৃবৃন্দ ও বিশ্ববাসীকে তাক লাগিয়ে বিশ্বের ইতিহাসে স্থান করে নিল এই সেতু। এক মহাকর্মযজ্ঞের সাক্ষী হয়ে অবশেষে মাথা তুলে দাঁড়াল স্বপ্নের পদ্মা সেতু। যুক্ত হলো প্রমত্ত পদ্মার এপাড়-ওপাড়। শুরু থেকেই দেশি-বিদেশি স্বার্থান্বেষী মহল ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলো। এত বাধা-বিপত্তি পেছনে ফেলে বঙ্গবন্ধুকন্যা নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেন। এবং শতভাগ সফলতা অর্জন করে ঠিক যেমন করে ১৯৭১ সালে আজকের দিনেই তৎকালীন বিশ্বের অন্যতম প্রধান পেশাদার পশ্চিমা পাক বাহিনী বাংলাদেশের দামাল তরুণদের কাছে পরাস্ত হয়েছে, হার মেনেছিল। সেদিন পাকিস্তানিদের বর্বরতার বিরুদ্ধে বিজয়ী হয়েছিল শান্তির বিহঙ্গ এ বাংলাদেশ। সেদিন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ছাড়াও দেশি, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নানা ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে পূর্ব দিগন্তে বাংলাদেশের স্বাধীনতার যে রক্তিম সূর্য উদিত হয়েছিল, তা ছিলো বিশ্বের বিস্ময়। সুমহান স্বাধীনতা অর্জনের এই দিনে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আমরা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি শহীদ, মুক্তিযোদ্ধা, বীরাঙ্গনা, শরণার্থীসহ মুক্তিকামী সব মানুষকে। যাদের আত্মত্যাগ ও স্বজন হারানোর বেদনার মধ্য দিয়ে আমরা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ পেয়েছি। আমরা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি স্বাধীনতার মহানায়ক আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চার নেতাসহ মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব ও সংগঠকদের। যাদের সংগ্রাম ও ত্যাগের বিনিময়ে আমরা বিজয় অর্জন করেছি, তাদের প্রতি শ্রদ্ধাবনত চিত্তে স্মরণ করে আজকের দিনে আরেকবার শপথ নিতে চাই, বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে সম্মান ও মর্যাদার সঙ্গে রাখবোই।

স্বীকার করতে হবে, পঁচাত্তরে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যার পর স্বাধীনতা অর্জনের জনআকাঙ্ক্ষার, জনপ্রত্যাশার বিপরীত মুখে হেঁটেছিল বাংলাদেশ। স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বগাঁথা ইতিহাস বিকৃতি, জাতির জনকের নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা এমন কি ’৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার বিচার আইন করে বন্ধ করা হয়েছিল। একই সাথে গণতন্ত্র, মানবিক মর্যাদা, মানবাধিকার, অর্থনৈতিক সাম্য, সাম্প্রদায়িক সমপ্রীতির জন্য আমাদের যৌথ স্বপ্ন ছিঁড়ে দিয়েছিল মুষ্টিমেয় স্বাধীনতাবিরোধী, পাকিস্তানের পরাজিত শত্রু, গুটিকতক উচ্চাভিলাষী সেনা কর্মকর্তার নৃশংসতায়। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির জনকের অসমাপ্ত স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে। একইসঙ্গে স্বাধীনতা অর্জনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সক্ষমতা ও বৈষম্যহীনতার যে স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু আমাদের দেখিয়ে ছিলেন তাও আজ হাতের মুঠোয়। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির দৃশ্যমান অর্জনও করেছে। ইতোমধ্যে আমরা অর্থনৈতিকভাবে নিম্ন আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে উত্তরণ ঘটাতে সক্ষম হয়েছি। স্বাধীনতার পর থেকেই বয়ে বেড়ানো ‘স্বল্পোন্নত’ তকমা ঝেড়ে ফেলাও এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। একদা বৈদেশিক অনুদান ও ঋণ ছাড়া মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন অকল্পনীয় ছিল। এখন আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা বহুমুখী সেতুর মতো বড় বড় মেগা প্রকল্পসহ প্রমত্ত পদ্মার বুকে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের সক্ষমতার জয়গান গাইছে।

বিচারহীনতার এক নিকষ আঁধার আমাদের ঘিরে ধরেছিল। জাতির পিতা হত্যারই বিচার হবে না- খোদ সংবিধানে এমন ধারা সংযোজিত হয়েছিল। এ দেশের স্বাধীনতার যারা বিরোধিতা করেছে, বিদেশি প্রভুর আজ্ঞায় দেশের মা-বোন-ভাইয়ের ওপর যারা ঝাঁপিয়ে পড়েছিল; তাদেরও বিচারের দাবি গুমরে গুমরে কেঁদে ফিরেছে। আমরা দেখছি, ইতোমধ্যে নেতৃস্থানীয় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন হয়েছে। অন্যরাও প্রায় পাঁচ দশক পরে হলেও কৃতকর্মের শাস্তির দিন গুণছে। কেবল দেশের অভ্যন্তরে নয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিকভাবেও শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী, অনেক বেশি মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত। বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল ও সম্ভাবনার অপার বিস্ময়কর একটি উদীয়মান অর্থনীতির দেশ। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় আমরা প্রতিবেশী দেশ ভারতে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছিলাম; আর এখন বাংলাদেশই হয়ে উঠছে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয়, খাদ্য ও নির্ভয়ে জীবনযাপনের জোগানদাতা। এর আগে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ায় বিশ্ব প্রচারমাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘মাদার অব হিউনিটি’ তথা মানবতার জননী খেতাবে ভূষিত করেছে। আবার এই বিজয়ের মাসেই নোয়াখালীর ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের উন্নততর জীবনযাপনের মহতী উদ্যোগে মানবতার জননী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরেকটি বিস্ময়কর দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। বিশ্বের আর কোনো দেশে এভাবে বিপুল সংখ্যক শরণার্থী আশ্রয়ের নজির যেমন নেই তেমনি দীর্ঘ সময় অবস্থানেরও নজির নেই। শরণার্থীদের আমরা আশ্রয় দিয়েছি; কিন্তু তাদের নিজ দেশেই যত দ্রুত সম্ভব ফেরত যেতে হবে।

সামাজিক ও অর্থনৈতিক সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশের তুলনায় আমরা এগিয়ে রয়েছি। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মধ্য দিয়েই তা প্রমাণ করেছি। বাংলাদেশ হওয়ার শুরুর দিকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’র চিত্রকল্পটি আমাদের মনে দারুণভাবে দাগকাটলেও আমরা তখনো বুঝতে পারিনি, এই সর্বপ্রচারমুখী কাল্পনিক চিত্রকল্পটি আসলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের রক্তক্ষয়ী দিকটি, বিশেষ করে স্বাধীনতা লাভ করার জন্য আমরা যে অকাতরে যুদ্ধে নিয়োজিত ছিলাম, যুদ্ধ করতে করতে শহীদ হয়েছিল, সে দৃশ্যপটটি একান্তই নেপথ্যে আড়ালে চলে যায়। যুদ্ধকালে আমরা শরণার্থী হিসেবে ভারতে আশ্রয় নিলেও স্বাধীনতা অর্জনের পরপরই আমরা স্বদেশে চলে আসি। কিন্তু রোহিঙ্গা শরণর্থীরা এখানে জেঁকে বসেছে। যদিও বিশ্বব্যাপী রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা যেমন গুরুত্ব পাচ্ছে শুধু মানবতার সংকট হিসেবে; কিন্তু এটা যে বাংলাদেশের জন্য সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, পরিবেশগত, প্রতিবেশগত ঝামেলা তৈরি করেছে, সে সম্পর্কে বিশ্ব শক্তিগুলো স্পষ্ট। রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনে দৃশ্যত এবং কার্যত কোনো ভূমিকা নিচ্ছে না। ২০১৭ সালের ২৬ আগস্ট থেকে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা প্রায় সাড়ে এগারো লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে নিয়মিত তিনবেলা খাওয়াচ্ছে, তাদের বাসস্থান, চিকিৎসা, তাদের সন্তানদের লেখা-পড়ার ব্যবস্থা করছে। বিশ্বের শরণার্থী আশ্রয়ের এমন নজির অনন্য এবং বিরল।  স্বাধীনতা অর্জনের কারণেই বাংলাদেশের বর্তমান আর্থ-সামাজিক অবস্থাগত কয়েক দশকের চেয়ে যে শীর্ষে অবস্থান করছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে বর্তমান সরকার যেভাবে কার্যকর ভূমিকা পালন করে, মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি এনে দিয়েছে তা রীতিমতো পৃথিবীর কাছে বিস্ময়কর। সরকার দেশ থেকে দারিদ্র্য দূরীকরণে সফলতা অর্জন করেছে। ফলে আমাদের দেশে এখন ভিক্ষাবৃত্তিসহ সামাজিক বৈষম্য বহুলাংশে কমে এসেছে। গ্রাম্যপ্রধান বাংলাদেশের সকল গ্রামকে সাজানো হচ্ছে শহরের আদলে সকল সুযোগ-সুবিধা দিয়ে।

ঢাকা শহরে যানজট নিরসনের জন্য নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ঢাকায় প্রথমবারের মতো মেট্রোরেল স্থাপন করার যুগান্তকারী পদক্ষেপও নিয়েছে সরকার। আর এসব সম্ভব হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়। ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন স্বপ্ন নয় সত্য। তথ্য প্রযুক্তির প্রয়োগ, প্রসার, ব্যবহারে দেশ অনেক দূর এগিয়েছে। বিশ্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল থেকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে মহাকাশে বিচরণ করছে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা।  উল্লেখ্য, স্বাধীনতা পরবর্তী কল্পিত তলাবিহীন ঝুড়ির দেশ বাংলাদেশ, এখন আঠারো কোটি মানুষের খাদ্য চাহিদা পূরণ করছে। উপরন্তু সাড়ে এগারো লাখ রোহিঙ্গাকে নিয়মিত তিন বেলা খাওয়ানোর পরও খাদ্যে উদ্বৃত্তে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। স্বাধীনতা অর্জনের এটাও অন্যমত প্রাপ্তি। নারীর ক্ষমতায়ন, নারী শিক্ষা, বিনামূল্যে প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বই বিতরণ, মাতৃ ও শিশু মৃত্যু হ্রাস, শতভাগ বিদ্যুতায়ন, মানুষের গড় আয়ু, গড় আয়ু বৃদ্ধি, জীবন মানের উন্নয়ন, ব্যাংকের রির্জাভ, রেমিটেন্স, রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি আশাজনক অবস্থানে রাখা সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার দূরদর্শী, সাহসী এবং প্রাজ্ঞ রাজনৈতিক নেতৃত্বের কারণেই। এই ধারা অব্যাহত থাকলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণ আমাদের হাতের নাগালেই। নির্দ্বিধায় আমরা বলতে পারি, ‘যতদিন শেখ হাসিনার হাতে থাকবে দেশ, ততদিন পথ হারাবে না বাংলাদেশ।’ একইভাবে যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকবেন দেশে, প্রবাসে, বিশ্বে। তাই বঙ্গবন্ধু অমর হোক - জয়তু শেখ হাসিনা, জয়তু বাংলাদেশ, স্বাধীনতা ও বিজয়ের গৌরবে অভিষিক্ত হোক দেশের প্রতিটি মানুষ।

লেখক : সাংবাদিক, সাধারণ সম্পাদক- বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরাম

আমারসংবাদ/জেআই