Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

সেবা দিতে প্রস্তুত ঢামেক হাসপাতাল

মাহমুদুল হাসান

মার্চ ২০, ২০২১, ০৭:১০ পিএম


সেবা দিতে প্রস্তুত ঢামেক হাসপাতাল

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল চিকিৎসাসেবায় একটি আস্থা ও নির্ভরশীল প্রতিষ্ঠানের নাম। প্রতিষ্ঠার পর থেকে সীমিত সম্পদ আর নির্দিষ্ট সংখ্যক লোকবল নিয়ে অসংখ্য মানুষকে সেবায় ব্রত প্রতিষ্ঠানটি। প্রায় আড়াই হাজারের বেশি শয্যা রয়েছে। তবে নির্ধারিত শয্যার কয়েকগুণ বেশি রোগী সবসময় হাসপাতালটিতে ভর্তি থাকে। বাড়তি চাপ নিয়েই চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা সেবা দিয়ে আসছেন।

গত বছর মার্চের শুরুতে দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ শনাক্তের পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তখন থেকে হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা নিরলস চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন। কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল হওয়া সত্ত্বেও ঢামেক হাসপাতালটিতে নন-কোভিড রোগীদের চিকিৎসাসেবাও অব্যাহত রয়েছে। সম্প্রতি করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। প্রতিনিয়ত শনাক্ত রোগী ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছে।

অভয় দিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, করোনা ভাইরাস মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রস্তুত। এ জন্য গত এক বছরের অভিজ্ঞতার আলোকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে প্রস্তুত তারা। গেলো বছর ১৬ নভেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৫১তম পরিচালক হিসেবে যোগ দেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক। এর আগে তিনি আরও বেশ কয়েকটি হাসপাতাল পরিচালনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন।

নিজের অর্জিত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাকে সমৃদ্ধ করতে দায়িত্ব গ্রহণের পর একদিন গভীর রাতে একাকী হাসপাতাল পরিদর্শনে বেরিয়ে পড়েন। প্রতিটি ক্ষেত্র নিজের মতো করে পর্যবেক্ষণ করেন। এরপর সেই চিন্তার আলোকে একটি পরিকল্পনা করে তিনি কাজ করছেন। তিনি যোগদানের পর বলেছিলেন, ‘ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল একটি জাতীয় হাসপাতাল। সারা দেশ থেকে রোগীরা এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে। হাসপাতালে বেড খালি না থাকলে রোগীদের ফ্লোরে রেখে চিকিৎসা দেয়ারও ইতিহাস আছে। এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত আছে। আমারও ছোট-বড় কয়েকটি হাসপাতালে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। কিন্তু ঢাকা মেডিকেল কলেজ অনেক বড় একটি হাসপাতাল। এরই মধ্যে আমি একদিন রাত ৩টার দিকে হাসপাতালে এসেছিলাম। তখন দেখি, হাসপাতালের জরুরি বিভাগসহ সবখানেই রোগীদের সেবার জন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন সবাই।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন্স অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের তথ্যমতে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল-২ ও বার্ন ইউনিটে ৮৮৩টি সাধারণ শয্যা ও ২৪টি আইসিইউ শয্যা রয়েছে। তার মধ্যে গতকাল ৫৫৪ সাধারণ শয্যায় রোগী ভর্তি রয়েছে। আরও ৩২৯টি শয্যা খালি রয়েছে। আর আইসিইউতে ১১টি শয্যা খালি রয়েছে।

করোনা ভাইরাস মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল আগে থেকেই সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে। এছাড়া, করোনা ইউনিট ছাড়াও ঢাকা মেডিকেলের পুরনো ভবনে প্রায় সব বিভাগে স্বাভাবিকভাবে রোগী ভর্তি কার্যক্রম চলছে। গতকাল শনিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও আমাদের করোনা মোকাবিলার প্রস্তুতি ও সক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে। আমাদের ৯ শতাধিক শয্যা রয়েছে করোনা রোগীর জন্য। সেখানে এখন ৫৬৭ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। আমাদের চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের এক বছরেরও বেশি সময়ের অভিজ্ঞতা রয়েছে। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে কোভিড-১৯ রোগীদের কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে আমরা বদ্ধপরিকর। ভর্তি রোগীদের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্র (আইসিইউ) শয্যা সঙ্কট নেই। তবুও করোনা রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার লক্ষ্যে নতুন একটি অত্যাধুনিক আইসিইউ ইউনিট স্থাপনের প্রস্তুতি চলছে।’

তিনি বলেন, ‘সব রোগীর তো আইসিইউ প্রয়োজন হয় না। অধিকাংশ রোগী সাধারণ শয্যায় চিকিৎসা নিয়েই সুস্থ হয়ে যায়। তারপরও রোগীদের আইসিইউতে নেয়ার আগেই সবার জন্য রয়েছে ৪০ শয্যার এনআইসিইউ। আছে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সুবিধা। হাই-ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা। এসব কারণে ঢাকা মেডিকেল কলেজে করোনা রোগীরা সর্বাধুনিক কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন। প্রতিনিয়ত আরও ভালো সেবা দেয়ার লক্ষ্যে কাজ করছি।’

আমারসংবাদ/জেআই