Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

ব্যাংকের শেয়ারে সতর্ক বিনিয়োগকারীরা

এম এ আহাদ শাহীন

মার্চ ২৪, ২০২১, ০৭:৫৫ পিএম


ব্যাংকের শেয়ারে সতর্ক বিনিয়োগকারীরা

পুঁজিবাজারে নতুন কোম্পানির লেনদেন শুরু হলেই শুরু হয় হুলস্থূল। প্রথম দুদিন দিনের সর্বোচ্চ দর বাড়ার পর তৃতীয় দিন থেকে পর্যায়ক্রমে ১০ শতাংশ করে দর বেড়ে শেষে হয় অতিমূল্যায়িত। কিন্তু সে ধারা ভেঙে নেতিবাচক দৃষ্টান্ত দেখালো সদ্য তালিকাভুক্ত এনআরবিসি ব্যাংক লিমিটেড।

ব্যাংকটির প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) প্রায় ১২ গুণের বেশি আবেদন জমা পড়ে। আইপিওতে আগ্রহ থাকলেও লেনদেন শুরু হওয়ার পর সে আগ্রহ আর দেখা যাচ্ছে না। ফলে লেনদেন শুরুর দিন গত সোমবার ব্যাংকটির শেয়ার দর সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়া বা কমার সুযোগ থাকলেও বাড়ে মাত্র ৩২ শতাংশ। ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের প্রতিটি শেয়ারের দর দাঁড়ায় ১৩ টাকা ৬০ পয়সায়। দ্বিতীয় দিনের লেনদেনে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ দর বাড়ার সুযোগ ছিলো ব্যাংকটির। কিন্তু সেটিও হয়নি। বরং দিন শেষে ৬ দশমিক ৬০ শতাংশ দর কমেছে। তৃতীয় দিন গতকাল বুধবার কমেছে আরও বেশি। শতকরা হিসাবে ৬.৪৫ শতাংশ আর টাকার অংকে ৮০ পয়সা কমেছে এনআরবিসির।

এক যুগ পর গত সোমবার প্রথম ব্যাংক হিসেবে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় চতুর্থ প্রজন্মের ব্যাংক এনআরবিসি। কিন্তু দ্বিতীয় দিন থেকে ব্যাংকটির শেয়ার দর হারানোয় হতাশ সবাই। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির নীতিমালা অনুযায়ী লেনদেন শুরু হলে প্রথম দুই কার্যদিবসে কোনো প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দর ৫০ শতাংশ করে এবং পরের কার্যদিবসে ১০ শতাংশ করে বাড়তে বা কমতে পারে। তবে তৃতীয় দিন গতকাল বুধবার এনআরবিসি ব্যাংকের স্বাভাবিক দর আরও কমেছে। মিউচুয়াল ফান্ড ছাড়া গত এক বছর তালিকাভুক্ত সব কোম্পানির শেয়ার প্রথম দিন ৫০ শতাংশ বেড়েছে। তবে এই দামে বেশির ভাগ কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা শেয়ার ছাড়তে রাজি হয়নি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দ্বিতীয় দিনও ৫০ শতাংশ দাম বেড়েছে। এমনও দেখা গেছে, টানা ৯ দিন এমনকি ১৫ দিন সর্বোচ্চ পরিমাণ দাম বেড়ে আকাশচুম্বি হয়েছে দাম। সম্প্রতি তালিকাভুক্ত ই-জেনারেশনের শেয়ার প্রথম কার্যদিবসে হাতবদল হয় মাত্র ২০১টি। লুব রেফের শেয়ার হাতবদল হয় ৪২১টি। মীর আকতার শেয়ার প্রথম দিন লেনদেন হয় ৭৩০টি। অর্থাৎ সর্বোচ্চ দামেও বলতে গেলে কোনো বিক্রেতাই ছিলো না এসব কোম্পানির। যেখানে এনআরবিসি কমার্শিয়াল ব্যাংকের প্রথম দিনেই লেনদেন হয়েছে ৩ কোটি ২২ লাখ ৯৩ হাজার ৭০৫টি শেয়ার। আর দ্বিতীয় দিনে লেনদেন হয়েছে ৮৮ লাখ ৮৬ হাজার শেয়ার। ব্যাংকটি মোট ১২ কোটি শেয়ার ছেড়ে ১২০ কোটি টাকা উত্তোলন করেছে পুঁজিবাজার থেকে। এর মাধ্যমে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকের সংখ্যা দাঁড়ালো ৩১টি।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ আমার সংবাদকে বলেন, ব্যাংকগুলো ভালো লভ্যাংশ দিচ্ছে এটা কোনোভাবেই পুঁজিবাজার প্রভাবিত হয়নি। কিন্তু অন্য খাতের যে সব কোম্পানির ২ শতাংশ করে লভ্যাংশ দিচ্ছে সেগুলোর দর বেড়ে যাচ্ছে। এর কোনো যৌক্তিক কারণ জানা নেই। এর পেছনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায় আছে বলেও মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, ব্যাংকগুলো যখন ভালো করছিল তখন বাংলাদেশ ব্যাংক (লভ্যাংশের সীমা বেঁধে) একটা নির্দেশনা দিয়ে পুরো ব্যাংক খাতকে মন্দায় ঠেলে দিলো। এমন অবস্থার মধ্যে আর্থিক খাত নিয়েও তাই হলো। পরে যখন বিষয়গুলো সমাধান করে বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন নির্দেশনা দিলো তখন আর কেউ ব্যাংকের প্রতি আগ্রহী হচ্ছে না।

লেনদেন শুরুর আগের দিন ব্যাংকটি তাদের জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর ২০ সময়ের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে ব্যাংকটির আয়ের উল্লম্ফন দেখা গেছে। জানানো হয়েছে, এ সময়ে ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ২ টাকা ৪১ পয়সা। সেখানে আগের বছরের একই সময়ে ছিলো মাত্র ৩৬ পয়সা।

আমারসংবাদ/জেআই