Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

পোশাক খাতের রপ্তানি আয়ে চমক দেখাচ্ছে বাংলাদেশ

এম এ আহাদ শাহীন

মার্চ ২৫, ২০২১, ০৮:১৫ পিএম


পোশাক খাতের রপ্তানি আয়ে চমক দেখাচ্ছে বাংলাদেশ

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বছরে করোনা সংকটের মধ্যেও রপ্তানি আয়ে চমক দেখাচ্ছে বাংলাদেশ। গত জুলাইয়ের পর বেড়েছে রপ্তানি আয়। দেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক শিল্পের ওপর ভর করেই রপ্তানিতে আসে প্রবৃদ্ধি। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম দুই মাস পণ্য রপ্তানি আয় বেড়েছে ১.০৮ শতাংশ। একইসঙ্গে হালকা প্রকৌশল পণ্য, কৃষিপণ্য, ওষুধ, শুকনা খাবারসহ বেশির ভাগ পণ্য রপ্তানিতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তবে নেতিবাচক ধারায় রয়েছে চামড়া ও প্লাস্টিক খাতের রপ্তানি।

গত কয়েক মাস ধরে তৈরি পোশাকশিল্পে ধারাবাহিকভাবে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির পর ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে নিট পোশাকে। ওভেন পোশাকে প্রবৃদ্ধি কিছু কম হলেও নিট পোশাকে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি পোশাকশিল্পের জন্য সুখবর বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় মাসে ২৯৬ কোটি ৭০ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। এই পরিমাণ মাসভিত্তিক লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১১ দশমিক ৭২ শতাংশ কম হলেও গেলো বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় সাড়ে ৪ শতাংশ (৪.৩২) বেশি। পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩৩৬ কোটি ১০ লাখ ডলার। এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. জাফর উদ্দিন আমার সংবাদকে বলেন, ‘আমাদের রপ্তানি আয়ের অন্যতম প্রধান খাত হলো আরএমজি খাত। এই খাতের ওপর নির্ভর করেই রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি এসেছে। যদিও আমাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। তবে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি লক্ষ করা গেছে। আর এটা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনার মধ্যে কল-কারখানাগুলো খুলে দেয়ার সময়োচিত ও সাহসী সিদ্ধান্তের ফলে। এ ছাড়া নীতিগত সহায়তা, প্রণোদনা প্যাকেজসহ নানা উদ্যোগ আমাদের কমার্শিয়াল কাউন্সিরদের কঠোর পরিশ্রম ও দূতাবাসগুলোর সহযোগিতায়।’

তিনি বলেন, ‘রপ্তানি আয়ে বৈচিত্র্য আনতে আমরা বেশ কিছু কৌশল গ্রহণ করেছি। তৈরি পোশাকের অর্ডার বাতিলের পর সিদ্ধান্ত পরিবর্তনে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে কূটনৈতিক প্রক্রিয়ায় আলোচনা হয়েছে। সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে— তৈরি পোশাকের পাশাপাশি অপ্রচলিত পণ্যের রপ্তানি বাড়ানো এবং নতুন বাজার অনুসন্ধান। আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে দেশীয় পণ্যের মানোন্নয়নে প্রকল্পও গ্রহণ করা হচ্ছে।’

ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান ও সিইও এ এইচ এম আহসান জানান, রপ্তানি আয়ে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি উৎপাদন শিল্পের উদ্যোক্তা-ব্যবসায়ীদের আস্থা বাড়াতে সহায়তা করবে। ইপিবির তথ্যানুযায়ী, করোনা সংকটের মধ্যেও ২১ পণ্য রপ্তানিতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতা ধরে রেখে ২০ ধরনের পণ্যে রপ্তানি আয় বেড়েছে। রপ্তানি আয়ে প্রায় ৫০ শতাংশ (৪৯ দশমিক ৬৪) ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে সোনালি আঁশ পাট। বড় ধরনের প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে কৃষিপণ্যের রপ্তানি আয়। গত বছরের একই সময়ের চেয়ে যা ৩২ দশিক ৬৪ শতাংশ বেশি। এই দুই মাসে হিমায়িত মাছ রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হযেছে ৬১ শতাংশ (৬০ দশমিক ৯৯)। মসলা রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫২.৭৪ শতাংশ। এ সময়ে প্রায় শতভাগ (৯২ দশমিক ০৬) প্রবৃদ্ধি হয়েছে শুকনা খাবারের রপ্তানি আয়ে। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে চা রপ্তানির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১১৩ শতাংশ।

নতুন খাত হিসেবে ৩৩.৩৩ শতাংশ ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে প্রসাধনী পণ্যের রপ্তানি আয়। আর লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে না পারলেও ইতিবাচক প্রবৃদ্ধিতে রয়েছে ওষুধ রপ্তানি। প্রায় ১৯ শতাংশ (১৮ দশমিক ৯৪) প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। এছাড়া জুট ইয়ার্ন রপ্তানিতে ৬৭ শতাংশ, কার্পেট ৬৩ শতাংশ, হ্যান্ডিক্রাফটস ৬০ শতাংশ, প্রকৌশল যন্ত্রাংশ ৫৬ শতাংশ, হোম টেক্সটাইল ৪৪ শতাংশ, ইলেকট্রিক পণ্য ৩৪ শতাংশ রপ্তানি হয়েছে।

আমারসংবাদ/জেআই