Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

নজিরবিহীন আধুনিকায়নে বিচারবিভাগ!

মার্চ ২৫, ২০২১, ০৮:১৫ পিএম


নজিরবিহীন আধুনিকায়নে বিচারবিভাগ!

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছে দেশ। ইতিহাসের এমনই এক সন্ধিক্ষণে উপনীত এবারের স্বাধীনতা দিবস। দিবসটির প্রাসঙ্গিকতায় যুক্ত হয়েছে নানা মাত্রা, নানা তাৎপর্য। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী পালনের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। জাতির চূড়ান্ত বিজয়ের দুর্লভ মুহূর্তগুলো নতুন প্রজন্মের ইতিহাসবোধ নির্মাণে নতুন উপাদান, নতুন দর্শন হাজির করছে।

একটি মুক্তসমাজ গঠনের সংকল্পে বাঙালির এ উত্থান সে সময় খুব একটা স্বাভাবিক ঘটনা ছিল না। ৫০ বছরের ধারাবাহিক উন্নয়ন শত্রু রাষ্ট্রকেও ভাবিয়ে তুলছে। বাংলাদেশই এখন তাদের কাছে অনুকরণীয়। নজিরবিহীন উন্নয়ন হয়েছে রাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গে। রাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গের সাথে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় আইন ও বিচারবিভাগ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। অতীতে বিভিন্ন সরকারের সময় বহুকাল ব্রিটিশ আমলের পুরানো ধাচেই চলেছে বিচারব্যবস্থা। তবে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় এক যুগ ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার নানা ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ করেছে। আইন ও বিচারবিভাগকে উন্নত দেশের মতই ঢেলে সাজাচ্ছে। প্রযুক্তির ছোঁয়া লেগেছে বিচারবিভাগেও।

গেলো দশ বছরে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং বিভাগের পাশাপাশি আইন মন্ত্রণালয় ও বিচার বিভাগের ক্ষেত্রে উন্নয়ন ও অভাবনীয় সাফল্য এসেছে। বাংলাদেশের বর্তমান আইন ও বিচার ব্যবস্থা প্রায় দুইশ বছরের পুরানো। ব্রিটিশরা যে আইন করে গেছে তার অনেকটাই এখনো রয়ে গেছে। তবে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ  সরকার ক্ষমতায় আসার পর বহু আইন সংস্কার করে যুগোপযোগী করা হয়েছে। অপরাধ দমনে সৃষ্টি করা হয়েছে নুতন নতুন আইন ও ট্রাইব্যুনাল। সেইসাথে বিচার বিভাগের আমূল পরিবর্তন করে ঢেলে সাজানো হয়েছে। ব্যাপকহারে করা হয়েছে অবকাঠামোগত উন্নয়ন। নিয়োগ দেয়া হয়েছে প্রয়োজনীয়সংখ্যক বিচারক ও সহায়ক জনবল। বিচার বিভাগের উন্নয়নে পুরানো যেসব আইন ও বিচারব্যবস্থা বর্তমানের সঙ্গে খাপ খায় না সেগুলো নিয়ে রিভিউ করা হচ্ছে। সেটা এখনো অব্যাহত রয়েছে।  এছাড়া বিচার প্রক্রিয়া আগের মতো নথির মাধ্যমে না রেখে সেগুলো ডিজিটাল করাও তোড়জোড় চলছে। কিছু ক্ষেত্রে ইতোমধ্যে ডিজিটালাইজেশনের ছোঁয়া লেগেছে। এর মধ্য দিয়ে বিচারিক কর্যক্রম গতিশীল হচ্ছে। করোনা ভাইরাসের সময় উচ্চ আদালত ও অধস্তন আদালতে ভার্চুয়াল আদালত গঠন করে বিচার জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে গেছে সরকার। আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা ঘরে বসেই ভার্চুয়ালি পেয়েছে বিচারিক সুবিধা। গত ১১ মে থেকে সারা দেশে ভার্চুয়াল আদালতের মাধ্যমে এ পর্যন্ত লক্ষাধিক মামলা নিষ্পত্তি করা হয়েছে। বিচার বিভাগের ইতিহাসে এই প্রথম সর্বোচ্চ আদালতে এখনো ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে বিচারকাজ পরিচালিত হচ্ছে।

জানা যায়, বিচার বিভাগকে আধুনিকায়ন করতে তৎপর সরকার। সেই লক্ষ্যে দুই হাজার ৮০০ কোটি টাকার ই-জুডিশিয়ারি প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্ন সোনার বাংলা গড়ার অন্যতম অনুসঙ্গ হলো আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা। এই আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বিচারকদের ভূমিকা অগ্রগণ্য। বিচারব্যবস্থায় সফলতার আরেক নাম লিগ্যাল এইড সেবা। বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি অধিক কার্যকর করার লক্ষ্যে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসকে ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। আইনে সংশোধনী এনে বিভিন্ন স্তরে মামলার সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে। দ্রুততম সময়ে সাক্ষী হাজির করার জন্য বিদ্যমান সমন জারির পাশাপাশি মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে মামলার তারিখ সম্পর্কে সাক্ষীকে অবগত করার কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে। বিচারকদের বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জেলায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের জন্য ভবন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শেষ পর্যায়ে বিচারকদের পরিবহন সমস্যা সমাধানে করেছে সরকার। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিচারকদের দক্ষতা উন্নয়নে বর্তমান সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। অতিতে অস্ট্রেলিয়া, জাপান, ভারত ও চীনে ট্রেনিং প্রোগ্রামে পাঠানো হয়েছে। বিচারকদের বিচারিক কাজ চালানোর জন্য আরও উন্নত দেশে ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করার চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। গত এক দশকে সারা দেশে মামলা নিষ্পত্তির পরিমাণ বাড়াতে বিচারক নিয়োগ, আইন প্রণয়ন, জনবল কাঠামো বৃদ্ধি, আদালত ভবন নির্মাণসহ নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু হত্যা ও জেলহত্যামামলার বিচার, যুদ্ধাপরাধের বিচার, বিডিআর হত্যামামলার বিচার, ২১ আগস্ট হত্যামামলার বিচারসহ অনেক দুর্নীতি এবং গুরুত্বপূর্ণ ও চাঞ্চল্যকর হত্যার বিচার সম্পন্ন হয়েছে এই সরকারের আমলে। আধুনিক ও তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর বিচারব্যবস্থা গড়ে তুলতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে এই সরকার, যা সারা দেশের মানুষের কাছে প্রশংসিত হয়েছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন ও যুদ্ধাপরাধীর বিচার : স্বাধীনতার ৪৫ বছর পর বর্তমান সরকারের অন্যতম সাফল্য হচ্ছে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করা। আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহার অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধে বিচার করতে ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। এ পর্যন্ত আটটি মামলা সর্বোচ্চ আদালতে চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি হয়েছে। ছয় যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। ট্রাইব্যুনালে এ পর্যন্ত ৪১টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে, যা দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্য ও প্রশংসিত হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু হত্যামামলা ও জেলহত্যামামলার বিচার : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নৃশংস হত্যাকা্ল ও জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচার করা হয়েছে। ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর পাঁচ খুনি এবং গত এপ্রিল মাসে একজনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। বিদেশে পলাতক আরও পাঁচ খুনিকে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।

চাঞ্চল্যকর মামলা নিষ্পত্তি : বর্তমান সরকারের আমলে বঙ্গবন্ধু হত্যামামলা, ১০ ট্রাক অস্ত্রমামলা, বিডিআর বিদ্রোহ ও হত্যার বিচার, সিলেটের শিশু রাজন হত্যা, খুলনার শিশু রাকিব হত্যা, নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের মামলা, জাপানি নাগরিক কুনিও হোশির হত্যামামলা, সৌদি দূতাবাসের কর্মকর্তা খালাফ হত্যা, ২১ আগস্ট বোমাহামলার মামলা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর ঈশ্বরদীতে বোমাহামলা, গুলশানে হলি আর্টিসান বেকারিতে বোমাহামলা, পুরান ঢাকার বিশ্বজিৎ হত্যা, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলা, তারেক রহমানের দুর্নীতির মামলা, গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের দুর্নীতির মামলা, উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের ছাত্রী রিশা হত্যামামলা, সড়ক দুর্ঘটনায় দিয়া খানম মিম ও রাজীবের মামলা, গাইবান্ধার এমপি লিটন হত্যামামলা, ফেনীর নুসরাত জাহান রাফি হত্যাসহ অসংখ্য আলোচিত ও গুরুত্বপূর্ণ মামলার বিচার সম্পন্ন হয়েছে। যা সবার কাছে প্রশংসনীয় হয়েছে।

মামলা নিষ্পত্তি ও  আইন প্রণয়ন : ২০০৯ সাল থেকে গত ডিসেম্বর পর্যন্ত সারা দেশের আদালতগুলোতে এক কোটি ৪২ লাখ মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। এই সময় নতুন মামলা দায়ের ও পুনর্জীবিত হয়েছে এক কোটি ৬৩ লাখ মামলা। ২০০৯ সাল থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিভাগের সহযোগিতায় ৫০১টি আইন, ৪৩টি অধ্যাদেশ, চার হাজার ৩৪৭টি এসআরও ইত্যাদি প্রণয়ন করা হয়েছে।

বিচারক নিয়োগ ও অবকাঠামো উন্নয়ন :  ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১১ বছরে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে ২৪ জন, হাইকোর্ট বিভাগে ৮৭ জন এবং অধস্তন আদালতে এক হাজার ১২৮ বিচারক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এই সময়ে দুই হাজার ১৪৪ জন বিচারককে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের এজলাস ও চেম্বারের অবকাঠামোগত অপ্রতুলতা দূর করতে ২০১৭ সাল থেকে সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় ১৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ১২ তলা ভবন নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। ১১৭ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৫ তলাবিশিষ্ট নান্দনিক বার কাউন্সিল ভবন নির্মাণকাজ চলছে। এই সময়ে ১৬২ কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪২টি জেলায় জেলা জজ আদালত ভবনগুলোর ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ করা হয়েছে। একাধিক সিজিএম ভবন নির্মাণের পাশাপাশি ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, ফরিদপুর ও মুন্সীগঞ্জ জেলায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।

ট্রাইব্যুনাল বা আদালত স্থাপন : নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে ৫৪টি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাশাপাশি আরও ৪১টি ট্রাইব্যুনালে বিচারক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সন্ত্রাসবিরোধী মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে সাতটি বিভাগীয় শহরে ট্রাইব্যুনাল স্থাপন করা হয়েছে। ঢাকায় একটি সাইবার ট্রাইব্যুনালও গঠন করা হয়েছে। এভাবে গত ১১ বছরে শতাধিক আদালত বা ট্রাইব্যুনাল সৃজন করা হয়েছে। আরও সহস্রাধিক আদালত বা ট্রাইব্যুনাল সৃজনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। তৃণমূল বিচারপ্রার্থীর দোরগোড়ায় ন্যায়বিচার পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে ৯টি জেলার ১৩টি উপজেলায় ১৯টি চৌকি আদালত স্থাপন করা হয়েছে।

ই-জুডিশিয়ারি প্রকল্প : দেশের উচ্চতর ও অধস্তন আদালতকে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তিসম্পন্ন হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ‘ই-জুডিশিয়ারি’ প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের সহায়তায় আইন মন্ত্রণালয় দুই হাজার ৮৭৬ কোটি টাকার পাঁচ বছরমেয়াদি একটি উন্নয়ন প্রকল্প পরিকল্পনা (ডিপিপি) প্রণয়ন করেছে। প্রস্তাবটি গত ২৩ জুলাই পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) কাছে পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদে (একনেক) যাবে। বিচার বিভাগের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় উন্নয়ন প্রকল্প হচ্ছে ই-জুডিশিয়ারি।

বিচারক ও আইন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ : মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য ২০০৯ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সাড়ে চার হাজার বিচারক, জিপি-পিপি, আদালত কর্মচারীসহ মোট ছয় হাজার ১৭০ জনকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়া, ভারত, জাপান ও চীনে ছয় শতাধিক বিচারক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।

জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার সাফল্য : গত ১০ বছরে পাঁচ লাখ ২১ হাজার ৪৮১ জন দরিদ্র-অসচ্ছল মানুষকে বিনামূল্যে আইনগত সহায়তা দেয়া হয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত আইন মন্ত্রণালয়ের অধীন জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার মাধ্যমে এ সহায়তা দেয়া হয়। একই সময়ে সংস্থাটি ৫২৫ জন দরিদ্র-অসহায় মানুষের জন্য ৩৮ কোটি ২৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ আদায় করেছে। পাশাপাশি ৭৯ হাজার আর্থিকভাবে অসচ্ছল কারাবন্দিকে আইনি সহায়তা দেয়া হয়েছে। একই সময়ে সংস্থাটি এক লাখ ৩০ হাজার ৪৯২টি মামলা নিষ্পত্তি করেছে।

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপন : বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের অনুমোদন সাপেক্ষে আইন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার ওয়েস্টার্ন সিডনি ইউনিভার্সিটিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আবক্ষ ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে। বিশ্বের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ভাস্কর্য স্থাপন এটিই প্রথম।

পরিদপ্তর থেকে অধিদপ্তর ও রাজস্ব আয় : ২০১৮ সালে নিবন্ধন পরিদপ্তর উন্নীত হয়েছে অধিদপ্তরে। সৃজন হয়েছে ৪৯১টি নতুন পদ। এছাড়া জেলা রেজিস্ট্রি অফিস এবং সাব-রেজিস্ট্রি অফিসগুলোকে ভৌত অবকাঠামো সুবিধা দিতে ১৮টি জেলা রেজিস্ট্রি অফিস, ৪২টি সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। ২৬৮ জনকে সাব-রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। গত ১১ বছরে নিবন্ধন অধিদপ্তরের মাধ্যমে মোট রাজস্ব আয় হয়েছে প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকা।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে শক্তিশালী করা : ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন সংসদে পাস করে। এ আইন অনুযায়ী ২০১০ সালে সাত সদস্যবিশিষ্ট কমিশন পুনর্গঠিত হয়। এরপর সরকার মানবাধিকার সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও নিশ্চিত করার সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে কমিশনকে আরও শক্তিশালী করেছে।

বিচার বিভাগের উন্নয়নের বিষয়ে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, গত ১১ বছরে আইন অঙ্গন ও বিচার বিভাগে যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে বিচারব্যবস্থা কেন্দ্রীয় যত উন্নয়ন হয়ে তার চেয়ে বেশি হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের ১১ বছরে। অতীতের সকল উন্নয়নকে ছাপিয়ে গেছে সেটা এখনো অব্যাহত রয়েছে। এটা সরকারের অনেক বড় সাফল্য। বিচার বিভাগ যে স্বাধীনভাবে কাজ করছে, এটাই তার বড় প্রমাণ।

বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ন বলেন, সরকার বিচার বিভাগে কী উন্নয়ন করেছে, তা দৃশ্যমান। মহামারি করোনার সময় সরকার ভার্চুয়াল আদালত গঠন করে বিচার ব্যবস্থা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক প্রচেষ্টার কারণে জুডিশিয়ারিতে যথেষ্ট উন্নয়ন ঘটেছে।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এএম আমিনউদ্দিন বলেন, সরকারের অনেক সাফল্যের মধ্যে বিচার বিভাগের বিভিন্ন সাফল্য অন্যতম। তিনি বলেন, ১৭ কোটি মানুষের দেশে বিচার বিভাগকে আরও উন্নত ও আধুনিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। ই-জুডিশিয়ারি বাস্তবায়ন করতে হবে।

আমারসংবাদ/জেআই