Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

উদ্ভাবন ও উন্নয়নে কৃষিতে সাফল্য

বেলাল হোসেন

মার্চ ২৫, ২০২১, ০৮:১৫ পিএম


উদ্ভাবন ও উন্নয়নে কৃষিতে সাফল্য

বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালে এ দেশে দারুণভাবে বিঘ্নিত হয় কৃষি উৎপাদন। ওই সময় লাঙল ছেড়ে যুদ্ধের অস্ত্র হাতে তুলে নেন অনেক কৃষক। বাড়ি ছেড়ে যুদ্ধশিবিরে চলে যায় অনেক কৃষকের সন্তান। ১৯৭২ সালে প্রদত্ত এক বক্তৃতায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেন, ‘আমার চাল নাই, ডাল নাই, রাস্তা নাই, রেলওয়ে ভেঙে দিয়ে গেছে, সব শেষ করে দিয়ে গেছে ফেরাউনের দল।’ ফলে যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে খাদ্য ঘাটতি চরম আকার ধারণ করে। ১৯৭১-৭২ সালে দেশে খাদ্য ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৩০ লাখ টন। এটি ছিলো মোট উৎপাদনের প্রায় ৩০ শতাংশ। বাংলাদেশে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে স্বাধীনতার পর ১৯৭২-৭৩ সাল থেকে। তখন থেকেই কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তির ধারণ উৎসাহিত করা হয়। সহজ ও সুলভ করা হয় কৃষি উপকরণ সরবরাহ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত একযুগে কৃষি খাতে প্রযুক্তির ছোঁয়ায় অভাবনীয় সাফল্য দেখিয়েছে। এতে করে উৎপাদনে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের। বেড়েছে কৃষির সার্বিক উৎপাদন। বাংলাদেশ এখন খাদ্যশস্যের উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ।

চাল উৎপাদনে এখন আমরা উদ্বৃত্ত। কৃষি খাতে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে। খাদ্য উৎপাদনে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানে পৌঁছাতে বাংলাদেশের কৃষক প্রভূত সাফল্য দেখিয়েছে। ১৯৭২-৭৩ সালে খাদ্যশস্য উৎপাদনের পরিমাণ ৯৯ দশমিক ৩০ লাখ টন ছিলো। বর্তমানে সেই উৎপাদন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৫১ কোটি টনে। আয়তনে বিশ্বের ৯৪তম দেশ হলেও সবজি উৎপাদনে তৃতীয় এবং মৎস্য উৎপাদনে বিশ্বে চতুর্থ অবস্থানে আছে বাংলাদেশ।

খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণতা বিশ্বে রোল মডেল : স্বাধীনতার মাত্র ৫০ বছরে খাদ্য উৎপাদনে বিস্ময়কর সাফল্য দেখিয়েছে বাংলাদেশ। জন্মলগ্নে ক্ষুধা আর দরিদ্রতার প্রতিচ্ছবি লাল সবুজের বাংলাদেশ এখন খাদ্য উৎপাদনেও বিশ্বের কাছে রোল মডেল। চাল, সবজি, মাছ, আম, আলু উৎপাদনে শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে আছে বাংলাদেশ। সামনে লক্ষ্য, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্যের রপ্তানিকারক দেশ হয়ে ওঠার, সেই জন্য সাজানো হয়েছে পরিকল্পনাও। ১৯৭৩-৭৪ সালে বাংলাদেশের চাল উৎপাদন ছিলো ৯৯ লাখ টন। যা স্বাধীনতার মাত্র ২৫ বছরে হয়েছে দ্বিগুণ আর বাংলাদেশের বয়স ৫০ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই চালের উৎপাদন সাড়ে তিনগুণ বেড়ে হয়েছে তিন কোটি ৬৬ লাখ টন। শুধু চাল নয়, আধুনিক জ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যবহারে কৃষিপণ্যের উৎপাদন বেড়েছে বহুগুণ। বৈচিত্র্যময় ফসল এখন কৃষকের ক্ষেতে। তলাবিহীন ঝুড়ির দুর্নাম ঘুঁচিয়ে বাংলাদেশ এখন খাদ্যে আত্মনির্ভর। চাল ও সবজি উৎপাদনে বিশ্বে তৃতীয়, মাছ ও ছাগল উৎপাদনে চতুর্থ এবং আম ও আলু উৎপাদনে সপ্তম ও অষ্টম শীর্ষ দেশ বাংলাদেশ। নিজেদের চাহিদা মেটানোর পর দৃষ্টি বিশ্ববাজার দখলের। আর সেজন্য নজর দেয়া হচ্ছে কৃষিপণ্যের প্রক্রিয়াজাতকরণে। অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় শিল্পায়িত ও বাণিজ্যিক কৃষি খাত গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। যা বাস্তবায়ন হলে এ খাতের রপ্তানি আরও বাড়বে।

আমারসংবাদ/জেআই