Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪,

বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সর্বোচ্চ শিখরে নেয়ার প্রত্যয়

বিশেষ প্রতিবেদক

মার্চ ২৬, ২০২১, ০৮:১৫ পিএম


বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সর্বোচ্চ শিখরে নেয়ার প্রত্যয়
  • মুজিবশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর ১০ দিনের অনুষ্ঠানমালা সমাপ্ত
  • আদর্শ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে তুলতে হবে: রাষ্ট্রপতি
  • স্বাধীনতা নিয়ে অনেকের আপত্তি বাংলাদেশ ভুল প্রমাণ করেছে: মোদি
  • দক্ষিণ এশিয়াকে সমৃদ্ধ অঞ্চল গড়তে আমরা বদ্ধপরিকর: শেখ হাসিনা

বিশ্বনেতাদের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে মুজিবশতবর্ষ-স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর ১০ দিনের বর্ণিল অনুষ্ঠানমালা শেষ হয়েছে। গতকাল ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর মাহেন্দ্রক্ষণের দিনে অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ইতোমধ্যে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম মোহামেদ, শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে, নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারি, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং এবং ওইসব রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা সশরীরে অংশ নিয়েছেন। অনেক দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ভিডিও বার্তায় শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর ২৩ বছরের শোষণ আর নির্যাতনে পিষ্ট মুক্তিকামী বাঙালি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বিশ্বের মানচিত্রে নতুন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশের ঘোষণা দিয়েছিল একটি ভূখণ্ড, যার নাম বাংলাদেশ। এরপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী হয়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় ছিনিয়ে আনে বাঙালি জাতি। এই বিজয়ের মধ্য দিয়ে বিশ্ব মানচিত্রে জন্ম নেয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। রক্তের মধ্য দিয়ে অর্জিত সেই স্বাধীনতার ৫০ বছর আজ। যে মহানায়কের নেতৃত্বে এসেছিল দীর্ঘদিনের কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর বছরও। একই সঙ্গে এ বছর স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশ লাভ করেছে বাংলাদেশ। এবছর তিনটি মহেন্দ্রক্ষণ একই সঙ্গে উদযাপন করছে জাতি।  ‘মুজিব চিরন্তন’ শিরোনামে ১০ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার গতকাল শেষদিনের প্রতিপাদ্য ছিলো— ‘স্বাধীনতার ৫০ বছর ও অগ্রগতির সুবর্ণরেখা’। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সভাপতির বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার ছোট বোন শেখ রেহানা, স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরীসহ বাংলাদেশ ও ভারতসহ বিভিন্ন দেশের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসহ বিশ্বনেতারা ভিডিও বার্তায় শুভেচ্ছা জানান।

আদর্শ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে তুলতে হবে : রাষ্ট্রপতি

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সকল ক্ষেত্রে নীতি-নৈতিকতা ও আদর্শ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে তুলতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি। এর আগে বক্তৃতার শুরুতেই মো. আবদুল হামিদ বঙ্গবন্ধু, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা, জাতীয় চার নেতাকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, স্বাধীনতার সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সকলকে সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে নিজ দায়িত্ব পালন করতে হবে। ব্যক্তি, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় প্রতিটি কাজে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। সকল ক্ষেত্রে নীতি-নৈতিকতা ও আদর্শ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে তুলতে হবে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর মাহেন্দ্রক্ষণে উপস্থিত থাকতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। এই শুভ মুহূর্তে আমি দেশ ও দেশের বাইরে অবস্থানরত বাংলাদেশের সকল নাগরিককে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। আজ আমরা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও তার প্রিয় স্বদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী একসঙ্গে উদযাপন করছি। বাংলাদেশ ও বাঙালির ইতিহাসে এ এক অপূর্ব মিলনক্ষণ।

আবদুল হামিদ বলেন, দেশ ও জনগণের উন্নয়ন রাজনৈতিক নেতৃত্বের একক দায়িত্ব নয়। স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে এটা আমাদের সবার দায়িত্ব ও কর্তব্য। স্বাধীনতা মানুষের অধিকার। অধিকারকে অর্জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে তা সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারলেই স্বাধীনতা অর্থবহ হয়ে ওঠে। আবার অধিকারের অপপ্রয়োগ স্বাধীনতাকে খর্ব করে। স্বাধীনতা ও স্বেচ্ছাচারিতাকে এক করে দেখলে চলবে না।

বঙ্গবন্ধু শুধু বঙ্গের বন্ধু হয়েই থাকেননি, তিনি বিশ্ববন্ধু হয়ে উঠেছেন উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সারা বিশ্বের নিপীড়িত নির্যাতিত মানুষের আপনজন। ১৯৭৩ সালে ন্যাম সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন— ‘বিশ্ব আজ দুভাগে বিভক্ত। শোষক আর শোষিত। আমি শোষিতের পক্ষে।’

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে জানা ও বুঝার জন্য জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। তবে এ উদযাপনকে আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে আমাদের নতুন ও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যাতে বঙ্গবন্ধুর জীবন-কর্ম এবং তার নীতি ও আদর্শ সম্পর্কে জানতে পারে সেদিকে গুরুত্ব দিতে হবে। বাংলাভাষা ছাড়াও বিদেশি বিভিন্ন ভাষায়ও যাতে বঙ্গবন্ধুকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যথাযথভাবে তুলে ধরা যায়, সে উদ্যোগ নিতে হবে। এক্ষেত্রে গবেষক, ইতিহাসবিদ ও রাজনীতিবিদদের অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে।’

মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের স্মৃতি স্মরণ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে দায়িত্ব পালন ও সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ আমার জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ অর্জন। মুক্তিযুদ্ধকালীন দীর্ঘ নয়মাস আমি ভারতে অবস্থানকালে সেখানে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অভ্যর্থনা, ক্যাম্প স্থাপনসহ তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি রিফিউজি ক্যাম্পের দেখাশোনার কাজও করেছি। মুজিববাহিনী (বিএলএফ)-এর সাব-সেক্টর কমান্ডার হিসেবেও আমি দায়িত্ব পালন করি।’

স্বাধীনতাযুদ্ধে ভারতের সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে আবদুল হামিদ বলেন, আমি প্রত্যক্ষভাবে দেখেছি মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারত কীভাবে আমাদের সমর্থন ও সহযোগিতা করেছে। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে এক কোটি মানুষ ভারতের বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নেয়। ভারতের তৎকালীন সরকার ও জনগণ আমাদের এক কোটি লোককে আশ্রয় দিয়েছিল, খাবারের ব্যবস্থা করেছিল। তারা মু্ক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে, অস্ত্র দিয়েছে, বহির্বিশ্বে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সমর্থন আদায়ে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়েছে, মিত্রবাহিনীর অনেক সদস্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন। মহানুভবতা ও মানবিকতার ইতিহাসে এটি একটি নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত। মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সহযোগিতা ও সমর্থনের কথা বাংলাদেশের জনগণ সবসময়ই কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিব শতবর্ষের মাহেন্দ্রক্ষণে আমি নিজে এবং বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে ভারত সরকার ও জনগণকে আবারো ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। বঙ্গবন্ধু অনুসৃত ‘কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়, সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব’— নীতি অনুসরণ করে বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কূটনৈতিক অঙ্গনে সফলতার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে ভারতের সঙ্গে স্থল সীমান্ত চুক্তি কার্যকর ও সমুদ্রসীমা বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান হয়েছে। আমি আশা করি- অচিরেই অন্যান্য অমীমাংসিত ইস্যুরও সুষ্ঠু ও মর্যাদাপূর্ণ নিষ্পত্তি হবে।

তিনি আরও বলেন, গৌরব ও ত্যাগের অনুপম বীরত্বগাঁথা আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস। আমরা রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে বিজয় অর্জনকারী জাতি। স্বাধীনতার ৫০ বছরে দাঁড়িয়ে আমরা উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির সুবর্ণ আলো দেখতে পাই। জাতির পিতার আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে আমরা উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার পথে এগিয়ে যাবো— মুজিব জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর শুভক্ষণে এটাই হোক সকলের চাওয়া-পাওয়া।

স্বাধীনতা নিয়ে অনেকের আপত্তি বাংলাদেশ ভুল প্রমাণ করেছে : মোদি

সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সুদৃঢ় সম্পর্ক কেউ নষ্ট করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশ গঠনে অনেকে আপত্তি তুলেছিল। তাদের সেই আপত্তি বর্তমান বাংলাদেশ ভুল প্রমাণ করেছে।

নরেন্দ্র মোদি বলেন, আমি আনন্দিত যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বে তার সক্ষমতা প্রদর্শন করছে। যারা বাংলাদেশ গঠনে আপত্তি করেছিলেন; যারা এখানকার মানুষকে নিচু চোখে দেখতেন, যারা বাংলাদেশের অস্তিত্ব নিয়ে সন্দিহান ছিলেন, বাংলাদেশ তাদের ভুল প্রমাণ করেছে।

আগামী ২৫ বছর ঢাকা-নয়াদিল্লির জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে নরেন্দ্র মোদি বলেন, এটি একটি আনন্দময় ও কাকতালীয় ঘটনা যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর আর ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছর একসঙ্গে পড়েছে। আমাদের উভয় দেশেরই জন্য আগামী ২৫ বছর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা ঐতিহ্যের অংশীদার, আমরা উন্নয়নেরও অংশীদার।

মোদি বলেন, মনে রাখতে হবে বাণিজ্য ও শিল্পে আমাদের জন্য একই ধরনের সম্ভাবনা রয়েছে। তেমনি সন্ত্রাসবাদের মতো সমান বিপদও রয়েছে। এই জাতীয় অমানবিক ঘটনাবলির পরিকল্পনাকারী ও বাস্তবে রূপদানকারী শক্তিগুলো এখনো সক্রিয়। আমাদের অবশ্যই তাদের থেকে সাবধান থাকতে হবে এবং মোকাবিলা করার জন্য সংগঠিতও হতে হবে। আমাদের উভয় দেশেই গণতন্ত্রের শক্তি রয়েছে, এগিয়ে যাওয়ার সুস্পষ্ট দূরদর্শিতা রয়েছে। ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ অগ্রযাত্রা এই পুরো অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য সমান জরুরি।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রমাণ করেছি যে পারস্পরিক বিশ্বাস ও সহযোগিতা থাকলে সব সমস্যার সমাধান করা যায়। আমাদের স্থল সীমান্ত চুক্তি এর সাক্ষী। করোনার এ দুঃসময়েও দুটি দেশের মধ্যে সুন্দর সম্পর্ক বজায় রয়েছে। আমরা সার্ক কোভিড তহবিল গঠনে সহযোগিতা করেছি, নিজেদের মানবসম্পদের প্রশিক্ষণে সহায়তা করেছি।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বক্তব্য দিতে গিয়ে বাংলাদেশের ভাষা শহীদদের নাম উচ্চারণ করেন এক নিঃশ্বাসে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ভাষণের সেই উদ্ধৃতি— ‘এবারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম’ বাংলায় স্পষ্ট করেই উচ্চারণ করেন। তার এ স্পষ্ট উচ্চারণ নজর কেড়েছে উপস্থিত শ্রোতাদের।

নরেন্দ্র মোদি বলেন, বাংলাকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। আর এ অঞ্চলের উন্নতির জন্য দুই দেশকে একসঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে সামনে।

মোদি বাংলাদেশের তরুণদের জন্য ভারতের সুবর্ণজয়ন্তী বৃত্তির ঘোষণা দেন। তিনি বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের ভারতে বিনিয়োগেরও আহ্বান জানান। উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের মতো ও শিখন বিনিময়ের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

নরেন্দ্র মোদি বলেন, আমি তরুণ প্রজন্মের ভাই ও বোনদের খুব গর্বের সঙ্গে একটি বিষয় স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নেয়া আমার জীবনের প্রথম আন্দোলনগুলোর মধ্যে একটি ছিলো। আমার বয়স তখন ২০-২২ বছর ছিলো। যখন আমি ও আমার অনেক সহকর্মী বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীনতার জন্য সত্যাগ্রহ করেছিলাম। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সমর্থন করায় আমি গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারেও গিয়েছিলাম।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য যতটা আগ্রহ এখানে ছিলো ততটা সেখানেও (ভারতে) ছিলো। এখানে পাকিস্তান সেনাবাহিনী কর্তৃক সংঘটিত জঘন্য অপরাধ ও নৃশংসতার চিত্রগুলো আমাদের বিচলিত করতো এবং রাতের পর রাত বিনিদ্র করে রাখতো।

গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানের বক্তব্যে নরেন্দ্র মোদি একথা বলেন।

তিনি বলেন, আমি এবং আমার সহকর্মীরা বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য সত্যগ্রহ আন্দোলন করেছিলাম। এসময় উজ্জ্বল ভবিষ্যতের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করবে বলেও গুরুত্বারোপ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতকে একসঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে, তাহলে আমরা সহজেই লক্ষ্য পৌঁছতে পারবো।

একাত্তরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয়দের অংশগ্রহণের ইতিহাস তুলে ধরে নরেন্দ্র মোদি বলেন, আমাদের এমন সম্পর্ক তৈরি করতে হবে, যা কোনোভাবেই ভাঙবে না। কোনো কূটনীতির চালের শিকার হবে না।

[media type="image" fid="117098" layout="normal" caption="1" infograph="0" parallax="0" popup="1"][/media]

দক্ষিণ এশিয়াকে সমৃদ্ধ অঞ্চল গড়তে বদ্ধপরিকর : শেখ হাসিনা

সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ভারত শুধু আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী বন্ধুরাষ্ট্রই নয়, দেশটির সঙ্গে আমাদের রয়েছে ঐতিহাসিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ঐতিহ্যগত ও ভৌগোলিক সেতুবন্ধন। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মের সঙ্গে ভারতের সরকার এবং সেদেশের জনগণ ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

সরকারপ্রধান বলেন, আমি ভারত সরকার এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি এই শুভ মুহূর্তে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মর্যাদাশীল ‘গান্ধী শান্তি পুরস্কার-২০২০’-এ ভূষিত করার জন্য। আমি মনে করি, তাকে এ পুরস্কারে ভূষিত করার মাধ্যমে ভারত দক্ষিণ এশিয়ার একজন যোগ্য নেতা এবং গান্ধীজির প্রকৃত অনুসারীকেই সম্মানিত করেছেন।

তিনি বলেন, একইসঙ্গে ভারত সরকার সব সময় সুখে-দুঃখে বাংলাদেশের মানুষের পাশে আছে। এবারো আমাদের ১০৯টি অ্যাম্বুলেন্স উপহার দিচ্ছে। আমি নরেন্দ্র মোদি, তার সরকার এবং ভারতের জনগণের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এর আগে আমাদের করোনা ভাইরাসের টিকা উপহার দিয়েছেন। এবারো দিচ্ছেন। এ জন্য আমি ধন্যবাদ জানাই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বাংলাদেশ-ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উপলক্ষে উভয় দেশ বেশকিছু যৌথ কর্মসূচি পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ উপমহাদেশের দুই বরণীয় নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এবং মহাত্মা গান্ধীকে নিয়ে ভারত সরকার বঙ্গবন্ধু-বাপু ডিজিটাল প্রদর্শনীর উদ্যোগ নিয়েছে। আমি এ জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

বঙ্গবন্ধুর জ্যৈষ্ঠ কন্যা বলেন, জাতির পিতাকে হত্যা করে যারা ক্ষমতা দখল করেছিল, তারা বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। বাংলাদেশকে আদর্শচ্যুত করেছিল। আমি শুধু এটুকু বলতে পারি আদর্শহীন কোনো জাতি কিছু অর্জন করতে পারে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের প্রতিটি রাজনৈতিক দল, মতনির্বিশেষে ভারতের জনগণ বাংলাদেশের বিষয়ে ঐকমত্য হয়। ভারত শুধু আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী বন্ধুরাষ্ট্রই নয়, ভারতের সঙ্গে আমাদের রয়েছে ঐতিহাসিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ঐতিহ্যগত এবং ভৌগোলিক সেতুবন্ধন। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মের সঙ্গে ভারতের সরকার এবং সেদেশের জনগণ ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছেন।

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সৈন্যদের অত্যাচারের মুখে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া প্রায় এক কোটি মানুষ ভারতে আশ্রয় নেয়। আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ, অস্ত্র, গোলাবারুদ দিয়ে সাহায্য করেছিল। বাংলাদেশ-ভারত মিত্র বাহিনীর যৌথ অভিযানের মধ্য দিয়ে ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। এই যুদ্ধে ভারতের এক উল্লেখযোগ্যসংখ্যক সৈন্য শহীদ হয়েছেন। আমি তাদের আত্মার শান্তি কামনা করছি। শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি তাদের আত্মত্যাগকে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের জনগণের যে আত্মত্যাগ, সাহায্য-সহযোগিতা তা কখনো ভোলার নয়। আমরা কৃতজ্ঞচিত্তে সে অবদানের কথা স্মরণ করি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে ভারতের জনগণ এবং সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট আমার পিতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। আমরা দুবোন জার্মানিতে থাকায় বেঁচে যাই। আমাদের দেশে ফিরতে বাধা দিলে আমরা আশ্রয়হীন হয়ে পড়ি। আমার পরিবার এবং আমার ছোটবোন শেখ রেহানাকে ভারত সরকার আশ্রয় দেয়।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে স্বাধীনতা সম্মাননা, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জী এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীকে মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননাসহ ২২৫ জন ভারতীয় নাগরিককে আমরা মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননায় ভূষিত করেছি। এই সম্মাননা আমরা তাদের দিয়ে নিজদের ধন্য মনে করি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের সঙ্গে বর্তমানে আমাদের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে। আমরা প্রধানমন্ত্রী মোদিজির ‘প্রতিবেশী সর্বাগ্রে’ নীতির প্রশংসা করি। বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী দেশগুলোতে করোনা ভাইরাসের টিকা পাঠানোর মাধ্যমে মোদিজির এই নীতিরই প্রতিফলন ঘটেছে। বিগত কয়েক বছরে বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, কৃষিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারত আমাদের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী দেশ।

শেখ হাসিনা বলেন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ বৃদ্ধির জন্য সম্প্রতি ফেনী নদীর উপর মৈত্রী সেতুর উদ্বোধন করা হয়েছে। এই রাজ্যগুলো এখন চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর এবং চট্টগ্রাম বিমানবন্দর ব্যবহার করতে পারবে। ব্যবহার তারা করছে। সেইসঙ্গে মোংলাবন্দরও তারা ব্যবহার করতে পারবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আঞ্চলিক সহযোগিতায় বিশ্বাসী ছিলেন। বিশ্বের নিপীড়িত মানুষের রাজনৈতিক মুক্তির পাশাপাশি তিনি স্বপ্ন দেখতেন অর্থনৈতিক মুক্তির। এ জন্য পারস্পরিক বিশ্বাস, আস্থা এবং সমতার ভিত্তিতে সহযোগিতার ওপর তিনি জোর দিতেন। ভারত এ অঞ্চলের সর্ববৃহৎ দেশ। একটি স্থিতিশীল এবং রাজনৈতিক-অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী দক্ষিণ এশিয়া গড়ে তুলতে হলে ভারতকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। আমরা যদি পরস্পরের সহযোগিতায় এগিয়ে আসি, তাহলে আমাদের জনগণের উন্নয়ন অবশ্যম্ভাবী। আমরা দক্ষিণ এশিয়াকে উন্নত-সমৃদ্ধ অঞ্চল হিসেবে গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর।

তিনি বলেন, নানা প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে আমরা বাংলাদেশকে সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যাচ্ছি। বিগত ১২ বছরে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে। আমরা ২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উচ্চমধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছি।

অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর লোগো উন্মোচন করা হয়। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর লোগো কনসেপ্ট ও ডিজাইন করেছেন রামেন্দ্র মজুমদার ও প্রদীপ চক্রবর্তী।

এছাড়া অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে দেয়া ‘গান্ধী শান্তি পুরস্কার’ হস্তান্তর করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার হাতে এ পুরস্কার তুলে দেন তিনি। গত ২২ মার্চ ভারতের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ২০২০ সালের গান্ধী শান্তি পুরস্কারের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম ঘোষণা করে। বঙ্গবন্ধুকে প্রথমবারের মতো মরণোত্তর এই পুরস্কার দেয়া হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গান্ধী শান্তি পুরস্কার দেয়ায় ভারত সরকারের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ। ২৩ মার্চ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়।

জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে আয়োজিত অনুষ্ঠানটি টেলিভিশন, বেতার, অনলাইন মিডিয়া এবং সোস্যাল মিডিয়ায় সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়, সন্ধ্যা ৬টা থেকে সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ৩০ মিনিটের বিরতি এবং দ্বিতীয় পর্বে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আলোচনা পর্বে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পর্বে ভারতের প্রখ্যাত শাস্ত্রীয় সংগীতজ্ঞ পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর পরিবেশনায় বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গ করে নবনির্মিত রাগ ‘মৈত্রী’ পরিবেশনা, ‘পিতা দিয়েছে স্বাধীন স্বদেশ, কন্যা দিয়েছে আলো’ শীর্ষক থিমেটিক কোরিওগ্রাফি।

এর আগে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর আয়োজনে অংশ নিতে গতকাল শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে দুই দিনের সফরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিমানবন্দরে তাকে অভ্যর্থনা জানান। এসময় তাকে গালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয়। পরে বিমানবন্দরে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার দেয়া হয়। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে যান নরেন্দ্র মোদি।

পরে স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটে তিনি স্মৃতিসৌধে প্রবেশ করেন। তিনি শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে একাত্তরের লাখো শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এসময় তিন বাহিনীর একটি চৌকস দল তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শন করে।

দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করে শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা করেন মোদি। স্মৃতিসৌধের পরিদর্শন বইতে স্বাক্ষর শেষে সৌধের আঙিনায় একটি অর্জুন গাছের চারা রোপণ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

আমারসংবাদ/জেআই