Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪,

‘বঙ্গবন্ধুর জীবনই বাঙালির সংগ্রামের ইতিহাস’

বিশেষ প্রতিবেদক

মার্চ ২৭, ২০২১, ০৮:৫৫ পিএম


‘বঙ্গবন্ধুর জীবনই বাঙালির সংগ্রামের ইতিহাস’
  • যশোরেশ্বরীতে কমিউনিটি হল, কাশিয়ানিতে স্কুল করার ঘোষণা নরেন্দ্র মোদির
  • পাঁচ সমঝোতা স্মারক সই
  • ভারত-বাংলাদেশ মিতালী এক্সপ্রেসের উদ্বোধন উপহারের অ্যাম্বুলেন্স ও টিকা হস্তান্তর

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সফররত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ সময় বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা উপস্থিত ছিলেন।

গতকাল শনিবার দুই দিনের সফরের শেষ দিনে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধে পৌঁছান নরেন্দ্র মোদি। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা ফুলের তোড়া দিয়ে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল কমপ্লেক্সে নরেন্দ্র মোদিকে অভ্যর্থনা জানান। বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। বঙ্গবন্ধু এবং ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অন্যান্য শহীদদের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা করে বিশেষ প্রার্থনাও করা হয়। এরপর ভারতের প্রধানমন্ত্রী সেখানে রাখা পরিদর্শক বইয়ে স্বাক্ষর এবং সেখানে একটি গাছের চারা রোপণ করেন।

অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বাঙালির যে দীর্ঘ ত্যাগ আর সংগ্রামের ইতিহাস, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনকে তারই প্রতিচিত্র হিসেবে দর্শনার্থী বইয়ে বর্ণনা করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি লিখেছেন, অধিকার, নিজস্ব সংস্কৃতি ও আত্মপরিচয়ের জন্য বাংলাদেশের মানুষের যে সংগ্রাম, বঙ্গবন্ধুর জীবন তারই প্রতিচিত্র। তার অবিনাশী চেতনা আর অদম্য সাহস কোটি মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে, বহু বাধা বিপত্তি পেরিয়ে তারা পরিণত হয়েছে বিজয়ী জাতিতে।

দর্শনার্থী বইয়ে তিনি লেখেন, ভারতবাসী বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করে একজন বীর হিসেবে, সেই ভারতবাসীর পক্ষে আমি ২০ শতকের এই মহান রাষ্ট্রনেতার প্রতি বিনীত শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। বঙ্গবন্ধু ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় নাম, যে ইতিহাসকে তিনি নতুন রূপ দিয়েছেন দৃঢ় সংকল্প আর আত্মত্যাগের প্রবল শক্তি দিয়ে। এরপর দুপুরের দিকে কাশিয়ানীতে মতুয়া সম্প্রদায়ের তীর্থস্থান ওড়াকান্দি মন্দিরে যান ভারতের প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তিনি হরিচাঁদ ঠাকুরের বাড়িতে শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ও গুরুচাঁদ ঠাকুরের মন্দিরে পূজা-অর্চনা করেন। প্রার্থনা শেষে মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের এক সমাবেশে যোগ দেন তিনি। এ সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ভারত ও বাংলাদেশ নিজেদের বিকাশ ও প্রগতির চেয়ে সমগ্র বিশ্বের উন্নতি দেখতে চায়। বিশ্বে অস্থিরতা, আতঙ্ক, সন্ত্রাস ও অশান্তির পরিবর্তে শান্তি ও স্থিতিশীলতা দেখতে চায় উভয় দেশ। শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের দেখানো পথে আমরা এক সমান ও সামঞ্জ্যপূর্ণ সমাজের দিকে এগুচ্ছি। তিনি বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের সামনে যে ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে, দুই দেশের একজোট হয়ে প্রত্যেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা উচিত। এটা দুই দেশের কোটি কোটি জনগণের কল্যাণের পথ।

নরেন্দ্র মোদি বলেন, এখানে আসার আগে আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে গিয়েছি। সেখানে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেছি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্ব, উনার ভিশন (লক্ষ্য) ও মানুষের প্রতি তার বিশ্বাস উদাহরণস্বরূপ। তিনি আরও বলেন, যেভাবে ভারত-বাংলাদেশের সরকার দুই দেশের স্বাভাবিক সম্পর্ককে শক্তিশালী করছে, সাংস্কৃতিকভাবে এই কাজই ঠাকুর বাড়ি ও শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের বার্তা বহু বছর ধরে করে আসছে। একভাবে এই স্থান ভারত-বাংলোদেশের আত্মিক সম্পর্কের তীর্থ ক্ষেত্র। আমাদের সম্পর্ক মানুষের সঙ্গে মানুষের, মনের সঙ্গে মনের।

কাশিয়ানীতে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের ইচ্ছা পোষণ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, মেয়েদের শিক্ষার প্রসারে ওই এলাকার মাধ্যমিক স্কুলের আধুনিকায়নের ঘোষণা দেন। মোদি বলেন, আজ প্রতিটি ভারতবাসীর সৌভাগ্য যে তারা এখানে বাংলাদেশে শ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুরের যে প্রচেষ্টা, তার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন। ওড়াকান্দিতে শিক্ষা প্রসারের প্রচেষ্টায় ভারতের জনগণ যুক্ত হবেন। ওড়াকান্দিতে ভারত সরকার মেয়েদের মাধ্যমিক স্কুলগুলোর আধুনিকায়ন করবে। এসব স্কুলে নতুন ও আধুনিক সুবিধা দেবে। একইসঙ্গে ভারত সরকার এখানে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও স্থাপন করবে। এটি ভারতের কোটি মানুষের পক্ষ থেকে হরিচাঁদ ঠাকুরের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি। আমরা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ, যারা এই কাজে আমাদের সঙ্গে রয়েছেন।

ওড়াকান্দি মন্দিরে ভারতের নাগরিকদের আসার পথ সহজ করার জন্য ভারত সরকার কাজ করবে বলে জানান নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, মতুয়া সম্প্রদায়ের আমাদের ভাই-বোনেরা হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মজয়ন্তীর পুণ্যলগ্নে প্রতিবছর বারুনি স্নান পালন করে থাকেন। এ জন্য ভারত থেকে প্রচুর পুণ্যার্থী ওড়াকান্দিতে আসেন। ভারতের মতুয়া সম্প্রদায়ের ভাই-বোনদের জন্য এই তীর্থযাত্রা যেনো আরও সহজ হয়, সে জন্য ভারত সরকারের পক্ষ থেকে আরও বেশি প্রয়াস নেয়া হবে। ঠাকুরবাড়ির গৌরবময় ইতিহাসকে তুলে ধরতে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন ও বিভিন্ন কাজের জন্য আমরা সংকল্পবদ্ধ।

বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কের কথা তুলে ধরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবার সঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে সবার উন্নয়নের মন্ত্র নিয়ে ভারত এগিয়ে চলেছে। ভারতের এই যাত্রায় বাংলাদেশ সহযাত্রী। বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বুকে উন্নয়ন ও পরিবর্তনের এক শক্তিশালী উদাহরণ। বাংলাদেশের সেই প্রচেষ্টাতেও ভারত আপনাদের সহযাত্রী।

হরিচাঁদ ঠাকুরের স্মৃতিধন্য ওড়াকান্দি মন্দিরে আসার মাধ্যমে দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়েছে বলে অনুষ্ঠানে বলেন নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, হরিচাঁদ ঠাকুরের কৃপায় আমার ওড়াকান্দি ঠাকুরবাড়ির এই পুণ্যভূমি প্রণাম করার সৌভাগ্য হলো মতুয়া সম্প্রদায়ের লাখ লাখ মানুষ এখানে এসে যেমনটি অনুভব করেন, আমি আজ ঠিক তেমনটিই অনুভব করছি। এই দিনের এই পবিত্র মুহূর্তের প্রতীক্ষা আমার বহু বছর ধরে ছিলো। তিনি বলেন, ২০১৫ সালে যখন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে প্রথম বাংলাদেশ এসেছিলাম, তখনই এখানে আসার ইচ্ছা পোষণ করেছি। আজ আমার সেই ইচ্ছা পূরণ হলো।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার বক্তব্যে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ভারতের ১৩০ কোটি জনগণের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের নাগরিকদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, এখানে আসার আগে বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধে গিয়েছিলাম। সেখানে আমি তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছি। শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্ব, ভিশন এবং বাংলাদেশের মানুষের ওপর তার আস্থা ও বিশ্বাস উদাহরণস্বরূপ। আজ যেভাবে বাংলাদেশ ও ভারতের সরকার দুই দেশের স্বাভাবিক সম্পর্ককে শক্তিশালী করছে, সাংস্কৃতিকভাবে ঠাকুরবাড়ি ও হরিচাঁদ ঠাকুরের শিক্ষা বহু বছর ধরে একই কাজ করে আসছে। এর আগে গতকাল সকালে সাতক্ষীরার শ্যামনগরের প্রায় আটশ বছরের পুরনো যশোরেশ্বরী কালী মন্দিরে পূজা দেন নরেন্দ্র মোদি। ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে রওনা দিয়ে সকাল পৌনে ১০টার দিকে শ্যামনগরের এ সোবাহান মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠের হেলিপ্যাডে নামেন নরেন্দ্র মোদি। সেখান থেকে ১০টার দিকে পৌঁছান ঈশ্বরীপুর যশোরেশ্বরী কালী মন্দিরে। মন্দির চত্বরে নরেন্দ্র মোদি পৌঁছালে শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি ও ঢাকের বাদ্যে তাকে স্বাগত জানানো হয়। এ সময় মা কালীর হাতে সোনার তৈরি মুকুট পরিয়ে দেন তিনি। পরে সেখানে পূজাসহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সারেন। এই মন্দিরকে কেন্দ্র করে বিরাট এক মা কালী মেলা হয়। সীমান্তের দুই পাড়ের অসংখ্য ভক্ত সেখানে সমবেত হন। প্রার্থনার পর সে বিষয়টি উল্লেখ করে নরেদ্র মোদি বলেন, মন্দির সংলগ্ন এলাকায় একটি কমিউিনিটি হলের প্রয়োজন, ভারত সরকার সেটি তৈরি করবে। যারা মন্দিরে আসবেন, তারা বহু উদ্দেশ্যে হলটি ব্যবহার করতে পারবেন। সামাজিক, ধর্মীয় ও শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান এবং আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা যাবে।

গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকা ফিরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন মোদি। এরপর রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সন্ধ্যায় ঢাকা ছাড়েন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

পাঁচ সমঝোতা স্মারক সই

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সফররত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্য দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পাঁচটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে এসব সমঝোতা স্মারক সই হয়। এ ছাড়া কয়েকটি প্রকল্প উদ্বোধন করা হয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে উপহার দেয়া ১০৯টি অ্যাম্বুলেন্সের চাবি ও ১২ লাখ করোনা টিকা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তুলে দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

সমঝোতা স্মারকগুলো হলো— দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, রেজিলেন্স এবং প্রশমন বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সই করে বাংলাদেশ ও ভারত। এ ছাড়া বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি) এবং ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর অব ইন্ডিয়ার (আইএনসিসি) মধ্যে সহযোগিতা বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক, বাণিজ্য নিয়ে একটি সহযোগিতা ফ্রেমওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক, বাংলাদেশ-ভারত ডিজিটাল সার্ভিস অ্যান্ড অ্যামপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড ট্রেনিং (বিজিএসটি) সেন্টারের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য, কোর্সওয়ার অ্যান্ড রেফারেন্স বুক সরবরাহ, প্রশিক্ষণ বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক, রাজশাহী কলেজ মাঠ এবং আশপাশের এলাকায় স্পোর্টস সুবিধা প্রতিষ্ঠার বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়।

এর আগে গতকাল বিকেল ৫টায় নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আসেন। এ সময় তাকে অভ্যর্থনা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে দুই দেশের প্রতিনিধি পর্যায়ে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক হয়। এরপর দুই নেতার উপস্থিতিতে পাঁচটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং স্বাস্থ্য, বাণিজ্য, সংযোগ, শক্তি, উন্নয়ন সহযোগিতা এবং আরও অনেক ক্ষেত্রে অর্জনের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করেন।

বৈঠকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে নতুন যাত্রীবাহী ট্রেন মিতালী এক্সপ্রেস ভিডিও কনফারেন্সে যৌথভাবে উদ্বোধন করেন সফররত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে অংশগ্রহণ করেন রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে উপস্থিত ছিলেন রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্র নাথ মজুমদারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে নতুন এ আন্তঃদেশীয় যাত্রীবাহী ট্রেন চালু হলো। তবে গতকাল উদ্বোধন হলেও করোনা পরিস্থিতি খারাপ থাকায় আপাতত যাত্রা করছে না ট্রেনটি। দু’দেশের করোনা পরিস্থিতি উন্নতি হলে ও ভারতীয় পর্যটন ভিসা চালু হলে ট্রেনটি শিডিউল অনুযায়ী ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থেকে পশ্চিমবঙ্গের নিউ জলপাইগুড়ি রুটে চলাচল করবে। ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থেকে চিলাহাটি হয়ে ভারতের নিউ জলপাইগুড়ি যাবে ট্রেনটি। ঢাকা থেকে চিলাহাটির দূরত্ব ৪৫৩ কিলোমিটার ও চিলাহাটি থেকে নিউ জলপাইগুড়ির দূরত্ব ৬১ কিলোমিটার। আপাতত ভারতীয় রেক সপ্তাহে দু’দিন চলাচল করবে। ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থেকে নিউ জলপাইগুড়ি সোমবার ও বৃহস্পতিবার এবং নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রোববার ও বুধবার চলাচল করবে। 

ট্রেনটিতে চারটি এসি কেবিন, চারটি এসি চেয়ার ও দু’টি পাওয়ার কার ব্রেক ভ্যানসহ মোট ১০টি কোচ রয়েছে। মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনের ভাড়া হচ্ছে এসি কেবিন (বার্থ) চার হাজার ৯০৫ টাকা। এসি সিট তিন হাজার ৮০৫ টাকা। এসি চেয়ার দুই হাজার ৭০৫ টাকা। এ ভাড়ার সঙ্গে যুক্ত থাকবে ভ্যাট ও ট্রাভেল ট্যাক্স। সন্ধ্যা ৭টার দিকে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ সময় বঙ্গভবনে তাকে স্বাগত জানান রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। বৈঠকে তারা দুই দেশের সম্পর্ক, উন্নয়ন, অগ্রগতিসহ নানা বিষয় নিয়ে আলাপ করেন। পরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বঙ্গভবনের পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করেন। বঙ্গভবন থেকে বের হয়ে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে যান মোদি এবং দুই দিনের সফর শেষ করে দিল্লি ফিরে যান।

আমারসংবাদ/জেআই