Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

হেফাজতের ঘটনাবহুল হরতাল

আবদুর রহিম ও রফিকুল ইসলাম

মার্চ ২৮, ২০২১, ০৭:৪৫ পিএম


হেফাজতের ঘটনাবহুল হরতাল
  • বিক্ষোভ-হরতালে গত তিনদিনে ঝরলো ১৪  প্রাণ! বহু আহত
  • সরাইলে পুলিশ-হেফাজত সংঘর্ষে নিহত দুজন আজ বিক্ষোভ
  • এক বছর পর সংঘর্ষ  গুলি, অবরোধ, আগুনে হরতাল পালিত 
  • জ্যামের রাজধানী গতকাল হরতালে ছিলো ফাঁকা

নরেন্দ্র মোদির সফর ঘিরে বিক্ষোভ-হরতালে গত তিনদিনে ঝরলো ১৪ প্রাণ! বহু আহত। এখনো উত্তপ্ত  সারা দেশ। গতকাল পালিত হয়েছে ঘটনাবহুল হরতাল। এক বছর এক মাস ২৬ দিন পর অন্যরকম হরতালের চিত্র দেখলো দেশের মানুষ। গত বছরের ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে হরতাল ডেকেছিল বিএনপি। সেদিন ঢিলেঢালা হরতাল পালিত হলেও হেফাজতের হরতাল ছিলো পুরোপুরি সফল।

হরতাল ডেকে ঢাকাসহ সারা দেশে মাঠে ছিলেন হেফাজতে ইসলামির নেতাকর্মীরা। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় ইসলামি দলগুলোসহ সাধারণ মানুষও। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন হেফাজতের বহু নেতাকর্মী। নিহতের ঘটনাও ঘটেছে। সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভে উত্তাল ছিলো সারা দেশ। গাড়িতে আগুন,  দফায় দফায় ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়েছে অনেক স্থানে। ঢাকার রাস্তায় অর্ধবেলা পর্যন্ত নামেনি তেমন কোনো গাড়ি। বেলা বাড়ার সাথে সাথে অল্পকিছু গণপরিবহন নামলেও ব্যক্তিগত কোনো গাড়ি তেমন দেখা যায়নি। জ্যামের রাজধানী গতকাল হরতালে ছিলো একেবারেই ফাঁকা। ঢাকার বাইরেও একই চিত্র ছিলো বলে জানা গেছে। ঢাকার সঙ্গে পূর্বাঞ্চলের দূরপাল্লার যান চলাচল বন্ধ ছিলো। সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে সিলেট ও চট্টগ্রামগামী কোনো দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যেতে পারেনি। ওদিকে গাবতলী ও মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকেও কোনো বাস ছাড়েনি। দোকানপাট, মার্কেট ও বিপণিবিতান খোলা থাকলেও তা ছিলো ক্রেতাশূন্য সুনসান। এদিকে আরও ২৪ ঘণ্টা হরতাল বাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে এক ঘণ্টা পর তা প্রত্যাখ্যান করে আজ সোমবার দেশব্যাপী বিক্ষোভের ঘোষণা দেন তারা।

দিনভর সংঘাত আর উত্তেজনা ছিলো ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড, সানারপাড় এলাকা। রাজধানীর প্রবেশপথে সকালেই অবস্থান নেন হেফাজতের নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে পুলিশ-বিজিবি সদস্যরা তাদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। শুরু হয় সংঘর্ষ। সংঘর্ষে তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে দাবি করেছেন হেফাজত নেতাকর্মীরা। মৌচাক এলাকায়ও গতকাল সকাল থেকে কাফনের কাপড় পরে সড়ক অবরোধ করে তারা। লালবাগে হেফাজতকর্মীরা সড়ক অবরোধের চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়। মোহাম্মদপুরের বসিলায় সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করেন হেফাজতকর্মীরা। ওই এলাকায় হরতালবিরোধী ও সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। পল্টন এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে হেফাজতে ইসলাম। এ সময় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে তাদের কিছুটা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। দুপুরের দিকে এ এলাকায় বড় মিছিল করেছে ইসলামি শাসনতন্ত্র আন্দোলন। দিনভর বায়তুল মোকাররমে অবস্থান ছিলো হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতাদের। তারা একাধিকবার খণ্ড খণ্ড মিছিল বের করে বক্তব্য দিয়েছেন। এ ছাড়া হরতালে উত্তাপ ছিলো ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে নগরজুড়ে। হামলা হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে। ভাঙচুরের পাশাপাশি সেখানে থাকা গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। গাড়ি ভাঙচুর করা হয় মৎস্য অফিসের। পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে সদরের ভূমি অফিস। হামলা হয়েছে প্রেস ক্লাবে। আহত হয়েছেন প্রেস ক্লাব সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন জামি। সকালে শহরের পীরবাড়ি এলাকায় পুলিশের সঙ্গে হেফাজত কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। একই সময়ে শহরের পৈরতলায় পুলিশ ও বিজিবির সদস্যদের সাথে সংঘর্ষ হয় হেফাজত সমর্থকদের। পুরো ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে থমথমে পরিস্থিতি। হরতালের সমর্থনে নরসিংদীতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা। ময়মনসিংহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায়ও কঠোর হরতাল পালিত হয়। গতকাল সকাল থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে জমায়েত হন আন্দোলনকারীরা। পরে তারা রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে ও বাঁশ ফেলে যানবাহন আটকে দেন। আন্তঃনগর সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনে হেফাজতের নেতাকর্মীদের ইট-পাটকেল ছোড়ার ঘটনায় ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রাম ও সিলেটের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। ফলে বিভিন্ন স্টেশনে ট্রেন আটকা পড়ে। সুনামগঞ্জে ভোর থেকে লাঠি হাতে সড়কে অবস্থান নিতে দেখা গেছে হেফাজতের কর্মীদের। সড়কে কোনো ধরনের যান চলাচল করতে দেয়নি তারা। এতে বিপাকে পড়েন দূরপাল্লার যাত্রীরা। হাটহাজারী-খাগড়াছড়ি মহাসড়কে খাল কেটে অবরোধ করেন বিক্ষুব্ধ মাদ্রাসাছাত্ররা। ফেনী-নোয়াখালী সড়ক অবরোধ করেন হেফাজত সমর্থকরা। ওদিকে রাজশাহী মহানগরীর ট্রাক টার্মিনালে রাখা বিআরটিসির দুটি বাসে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সংঘাতের কারণে ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রাম ও সিলেটের রেল যোগাযোগ বন্ধ ছিলো। হরতালকে ঘিরে কঠোর অবস্থানে ছিলেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। মোড়ে মোড়ে অবস্থান নেন পুলিশ, র্যাব, বিজিবি সদস্যরা। এপিসি জলকামান নিয়ে বিভিন্ন সড়কে টহল দেন তারা। এদিকে পুলিশের পাশাপাশি মাঠে ছিলেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তারা রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে অবস্থান নেন।

সরাইলে পুলিশ-হেফাজত সংঘর্ষে নিহত ২ : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে পুলিশের সঙ্গে হেফাজত কর্মীদের সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে কালন মিয়ার বাড়ি উপজেলার বুধল ইউনিয়নের খাটিহাতা গ্রামে। তার বড় ভাই মাওলানা আবদুর রহিম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘পুলিশের গুলিতে তার ভাই নিহত হয়েছেন’। নিহত আরেকজন হলেন উপজেলা সদরের কুট্টাপাড়া গ্রামের সুফি আলীর ছেলে আল আমীন। হাসপাতালে নেয়ার পর সে মারা যায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বেলা ১১টার কিছু পর ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে সরাইল বিশ্বরোড মোড়ে খাটিহাতা হাইওয়ে থানার সামনে জলকামানে অগ্নিসংযোগ করে হরতাল সমর্থকরা। এ সময় হাইওয়ে থানায়ও হামলার ঘটনা ঘটে। পুলিশ গুলি চালায়।

রূপগঞ্জে মহাসড়ক অবরোধ : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হেফাজতের ডাকা হরতালের সমর্থনে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করে হেফাজত ইসলাম রূপগঞ্জ উপজেলা শাখা।  সকালে মহাসড়কে ভুলতা এলাকার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে তারা এ কর্মসূচি পালন করে। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ রূপগঞ্জ থানা শাখার নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এ সময় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

রাজশাহীতে বাসে আগুন :  হেফাজতে ইসলামের ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতালের কেন্দ্র করে রাজশাহীতে দুটি বাসে আগুন লাগিয়ে দেয়  দুর্বৃত্তরা। গতকাল সকাল সাড়ে ৬টার দিকে মহানগরীর আমচত্বর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

হবিগঞ্জে হেফাজত-পুলিশ সংঘর্ষে ওসিসহ পাঁচ পুলিশ আহত :  হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে হেফাজত-পুলিশ সংঘর্ষে ওসিসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হন। এ সময় ওসির গাড়ি ভাঙচুর করে বিক্ষোভকারীরা। হেফাজতের হরতালের কর্মসূচি পালনের সময় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে আহত পুলিশ সদস্যরা বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা রয়েছেন।

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ : সকাল-সন্ধ্যা হরতালের সমর্থনে পটিয়ায় মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা। ফলে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। গতকাল রোববার সকালে পটিয়ার খরনা রাস্তার মাথা, থানার মোড়, কলেজ গেট, বাস স্টেশন ও শান্তিরহাট এলাকায় হেফাজত নেতাকর্মীরা সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় তারা পটিয়া থানার মোড় ও ডাকবাংলো মোড় এলাকায় সড়ক অবরোধ করে অবস্থান করেন। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েন ওই সড়ক দিয়ে চলাচল করা যাত্রীরা। সিলেটের রাজপথে ছিলো হেফাজত ইসলামের দখলে— হরতালের সমর্থনে রাস্তা অবরোধ, পিকেটিং, বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচিতে সিলেটের রাজপথ দখলে রাখে হেফাজতের নেতাকর্মীরা। ফজরের নামাজের পরপরই তারা রাজপথে পিকেটিংয়ে নামে। দখলে নেয় সিলেটের কোর্ট পয়েন্ট এলাকা। সকাল থেকে কোর্ট পয়েন্টের ওভারব্রিজের নিচে হেফাজতের নেতারা অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। একই সাথে নগরীর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকা দক্ষিণ সুরমায় হেফাজতের নেতারা অবস্থান নেন। শহরের বিভিন্ন এলাকায় হরতালের সমর্থনে ওই এলাকায় দফায় দফায় মিছিল করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিভিন্ন মোড়ে অবস্থান নেয় পুলিশ।

হরতাল ন্যায়ের পক্ষে ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে বললেন বাবুনগরী : সারা দেশে হরতালের এমন পরিস্থিতিতে গতকাল জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় সংবাদ সম্মেলন তিনি বলেন, ‘গত শুক্রবার আমাদের হাটহাজারী মাদ্রাসার শান্তিপূর্ণ মিছিলে প্রশাসন পুলিশবাহিনী (বিশেষভাবে হাটহাজারী থানার ওসি) গুলি করে সাতজনকে শহীদ করেছে। একজন নিরীহ মানুষ, তাবলিগি ভাই-তাকেও শহীদ করেছে। ঢাকায়, হাটহাজারী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মোট ১৬ জনের মৃত্যুর সংবাদ আমরা পেয়েছি। এটা কোনো সাধারণ বিষয় নয়। এ কারণে আমরা হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের পক্ষ থেকে হরতালের ডাক দিয়েছিলাম। আমাদের হরতালের কর্মসূচি ছিলো অত্যন্ত সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণ।’

হরতালের সমর্থনে মাঠে  ড. এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী : হরতালে সমর্থন দিয়ে মাঠে নামেন আব্বাসী মনজিলের পীর ড. এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী। গতকাল বেলা ২টায় রাজধানীর চিটাগাং রোড মাদানীনগর এলাকায় তিনি অবস্থান করেন। এ সময় তিনি হেফাজত কর্মীদের পানি, রুটি, কলা, বিস্কুটসহ অন্যান্য শুকনা খাবার বিতরণ করেন। তিনি বলেন, ‘আজকে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশে পরাধীন অবস্থায়। একের পর এক আমাদের ভাইয়েরা শাহাদৎবরণ করে চলছে। তা কোনো অবস্থায়ই মেনে নেয়ার মতো নয়।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের নেতৃত্বকে আরো কঠোর হতে হবে। ইনশা আল্লাহ, তাদের পাশে সারা বাংলাদেশের জনগণ উপস্থিত আছে। আমাদেরকে ধৈর্যের সাথে একমত, এর সাথে মোকাবেলা করতে হবে।

সৈয়দ ফয়জুল করীমের নেতৃত্বে মাঠে ইসলামি আন্দোলন :  মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীমের নেতৃত্বে মাঠে নামে ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের হরতালের সমর্থনে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে তারা। গতকাল বাদ জোহর বায়তুল মোকাররম মসজিদ থেকে মিছিল নিয়ে বের হয়ে পুরানা পল্টন মোড়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করে দলটি। ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে প্রায় পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন। এ সময় পুরানা পল্টন-মুক্তাঙ্গন এলাকায় হরতালকারী হেফাজতের কর্মীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। লাঠি ও বাঁশ নিয়ে একে অপরকে ধাওয়া করে উভয় পক্ষ। মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেন, ‘আমাদের আজকের এই কর্মসূচি রাজনৈতিক নয়। আমাদের কয়েকজন মুসল্লিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আমরা তার প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’ হেফাজতে ইসলামের ঢাকা মহানগরের সহ-সভাপতি ও খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মামুনুল হক বলেছেন, ‘আর যদি আমার কোনো ভাইকে হত্যা করা হয়, আবার যদি গুলি চলে, আর যদি কোনো ভাইয়ের রক্ত ঝরে, তাহলে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া গোটা বাংলাদেশ অচল করে দেয়া হবে।’ মামুনুল হক আরও বলেন, ‘আজ হেফাজতের হরতাল কর্মসূচি ছিলো, আওয়ামী লীগের কোনো কর্মসূচি ছিলো না। তবু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে মাঠে দেখা গেছে আওয়ামী পাণ্ডাদের। আমার শান্তিপ্রিয় ভাইদের ওপর পুলিশ-বিজিবি নির্বিচারে গুলি ছুড়েছে। মধুগড়ের বর্ষীয়ান আলেম হেফাজতের নায়েবে আমির মাওলানা আবদুল হামিদ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এটা কলঙ্কজনক অধ্যায় রচনা করলো। মনে রাখবেন, এভাবে গুলি করে হেফাজতকে দমানো যাবে না, আপনি আপনার গদি টেকাতে পারবেন না।’

আমারসংবাদ/জেআই