Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,

দ্বিতীয় ঢেউ অপ্রতিরোধ্য!

মাহমুদুল হাসান

মার্চ ৩১, ২০২১, ০৮:৩০ পিএম


দ্বিতীয় ঢেউ অপ্রতিরোধ্য!
  • শনাক্ত-মৃত্যু দুই সূচকই ঊর্ধ্বমুখী
  • ১৮ দফা বাস্তবায়নে কঠোর প্রশাসন
  • ৯ হাজার ছাড়িয়ে গেলো মৃত্যু

আগ্রাসী করোনা ৩৮৯দিন অতিক্রম করলো। গত তিনদিন টানা পাঁচ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে। গতকাল বুধবার পাঁচ হাজার ৩৫৮ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর আগে গত সোমবার পাঁচ হাজারের বেশি রোগী শনাক্তের রেকর্ড হয়। ওইদিন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ছয় লাখ ছাড়িয়ে যায়। গতকাল আরও ৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে। সাত মাসে এটাই সর্বোচ্চ মৃত্যু।

গত বছরের ২৬ আগস্ট এরচেয়ে বেশি ৫৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল। গত সোম ও মঙ্গলবার দুইদিন ৪৫ জন ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। একদিনের ব্যবধানে মৃত্যু বেড়েছে সাতজনের। এ নিয়ে দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা ৯ হাজার ছাড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গতকাল বুধবার বিকেলে করোনা ভাইরাসবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

যুক্তরাজ্য, আফ্রিকা ও ব্রাজিলে শনাক্ত হওয়া নতুন ধরনের করোনা ভাইরাস দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। যে ভাইরাস সাধারণ করোনার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু বাস্তবতা হলো মানুষ করোনাকে ভয় করছে না। স্বাস্থ্যবিধি এখনো উপেক্ষিত। মাস্ক পরিধানে যেনো সবার মধ্যে অনীহা। এভাবে স্বাস্থ্যবিধি অবজ্ঞা করে চলতে থাকলে করোনায় শনাক্ত-মৃত্যু দুটোই আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন জনস্বাস্থ্যবিদরা।

এদিকে ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্যানুযায়ী, বিশ্বে ৩৩তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশে গত সোমবার আক্রান্তের সংখ্যা ছয় লাখ অতিক্রম করে। আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ লাখ অতিক্রম করার সময় বাংলাদেশে ছিলো ২৭তম দেশ। চার লাখ সংক্রমণের সময় ছিলো ১৮তম স্থানে এবং সংক্রমণ সাড়ে চার লাখের সময় ২৫তম অবস্থানে ছিলো বাংলাদেশ। সাড়ে তিন লাখ সংক্রমণের সময় ১৫তম স্থানে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গতকাল রাজধানীসহ সারা দেশে নতুন করে আরও পাঁচ হাজার ৩৫৮ জনের নমুনায় করোনার উপস্থিতি মিলেছে। এ নিয়ে দেশে করোনা শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ছয় লাখ ১১ হাজার ২৯৫ জনে। তার মধ্যে গতকাল সুস্থ হয়ে উঠেছে আরও দুই হাজার ২১৯ জন। এ নিয়ে সুস্থ রোগীর সংখ্যা বেড়ে পাঁচ লাখ ৪২ হাজার ৩৯৯ জন হয়েছে। এছাড়াও গতকাল ৫২ জনের মৃত্যুর মধ্যদিয়ে দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯ হাজার ৪৬ জনে পৌঁছেছে।

সংক্রমণের চিত্র

এক লাখ ছাড়ায় : সংক্রমণের ১০৩তম দিনে গত বছরের ১৮ জুন আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ দুই হাজার ২৯২ জনে এবং মৃত্যুর সংখ্যা এক হাজার ৩৩৪ জনে পৌঁছায়। সংক্রমণের ৮৭তম দিনে গত বছরের ২ জুন মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫২ হাজার ৪৪৫ জনে এবং মৃতের সংখ্যা ৭০৯ জনে পৌঁছায়। পরবর্তী ১৬ দিনে আক্রান্ত হন ৪৯ হাজার ৮৪৭ জন এবং মৃত্যুবরণ করেন ৬৩৪ জন।

দুই লাখ ছাড়ায় : সংক্রমণের ১১৭তম দিনে গত বছরের ২ জুলাই আক্রান্তের সংখ্যা সংখ্যা এক লাখ ৫৩ হাজার ২৭৭ জনে এবং মৃতের সংখ্যা এক হাজার ৯২৬ জনে পৌঁছায়। অর্থাৎ ১২ দিনে ৫০ হাজার ৯৮৫ জন আক্রান্ত এবং ৫৯২ জন মৃত্যুবরণ করেন। সংক্রমণের ১৩৩তম দিনে গত বছরের ১৮ জুলাই আক্রান্তের সংখ্যা দুই লাখ দুই হাজার ৬৬ এবং মৃতের সংখ্যা দুই হাজার ৫৮১ জনে পৌঁছায়। অর্থাৎ ১৬ দিনে আক্রান্ত হন ৪৮ হাজার ৭৮৯ এবং মৃত্যুবরণ করেন ৬৫৫ জন।

তিন লাখ ছাড়ায় : সংক্রমণের ১৫৩ দিনে গত বছরের ৭ আগস্ট মোট আক্রান্তের দুই লাখ ৫২ হাজার ৫০২ এবং মৃতের সংখ্যা তিন হাজার ৩৩৩ জনে পৌঁছায়। অর্থাৎ ২০ দিনে ৫০ হাজার ৪৩৬ জন আক্রান্ত এবং মৃত্যুবরণ করেন ৭৫২ জন। সংক্রমণের ১৭২তম দিনে গত বছরের ২৬ আগস্ট আক্রান্তের সংখ্যা তিন লাখ দুই হাজার ১৪৭ এবং মৃত্যুর সংখ্যা চার হাজার ৮২ জনে পৌঁছায়। অর্থাৎ ১৯ দিনে ৪৯ হাজার ৬৪৫ জন আক্রান্ত এবং ৭৪৯ জন মৃত্যুবরণ করেন।

চার লাখ ছাড়ায় : সংক্রমণের ১৯৮তম দিনে গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর আক্রান্তের সংখ্যা তিন লাখ ৫০ হাজার ৬২১ এবং মৃতের সংখ্যা চার হাজার ৯৭৯ জনে পৌঁছায়। অর্থাৎ ২৬ দিনে মোট ৪৮ হাজার ৪৭৪ জন আক্রান্ত এবং ৮৯৭ জন মৃত্যুবরণ করেন। সংক্রমণের ২৩৩তম দিনে গত বছরের ২৬ অক্টোবর আক্রান্তের সংখ্যা চার লাখ ২৫১ এবং মৃতের সংখ্যা পাঁচ হাজার ৮১৮ জনে পৌঁছায়। অর্থাৎ ৩৫ দিনে ৪৯ হাজার ৬৩০ জন আক্রান্ত এবং ৮৩৯ জন মৃত্যুবরণ করেন।

পাঁচ লাখ ছাড়ায় : সংক্রমণের ২৬২তম দিনে গত বছরের ২৪ নভেম্বর আক্রান্তের সংখ্যা চার লাখ ৫১ হাজার ৯৯০ এবং মৃতের সংখ্যা ছয় হাজার ৪৪৮ জনে পৌঁছায়। অর্থাৎ ২৯ দিনে ৫১ হাজার ৭৩৯ জন আক্রান্ত এবং ৬৩০ জন মৃত্যুবরণ করেন। সংক্রমণের ২৮৮তম দিনে গত বছরের ২০ ডিসেম্বর আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ লাখ ৭১৩ এবং মৃতের সংখ্যা সাত হাজার ২৮০ জনে পৌঁছায়। অর্থাৎ ২৬ দিনে ৪৮ হাজার ৭২৩ জন আক্রান্ত এবং ৮৩০ মৃত্যুবরণ করেন।

ছয় লাখ ছাড়ায় : সংক্রমণের ৩৬৫তম দিনে চলতি বছরের ৭ মার্চ আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ লাখ ৫০ হাজার ৩৩০ এবং মৃতের সংখ্যা আট হাজার ৪৬২ জনে পৌঁছায়। অর্থাৎ ৭৭ দিনে ৪৯ হাজার ৬১৭ জন আক্রান্ত এবং এক হাজার ১৮২ জন মৃত্যুবরণ করেন। সংক্রমণের ৩৮৯তম দিনে গতকাল ৩১ মার্চ আক্রান্তের সংখ্যা ছয় লাখ ১১ হাজার ২৯৫ জনে এবং মৃতের সংখ্যা ৯ হাজার ৪৬ জনে পৌঁছালো। অর্থাৎ সর্বশেষ ২৪ দিনে ৬০ হাজার ৯৬৫ জন এবং মৃত্যুবরণ করেন এক হাজার ৫৮৪ জন।

উচ্চ ঝুঁকিতে ২৯ জেলা : এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে দেশের ২৯টি জেলাকে করোনা সংক্রমণের তিনটি ক্যাটাগরিতে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে উচ্চ ঝুঁকির ছয় জেলা— ঢাকা, মুন্সীগঞ্জ, চট্টগ্রাম, খুলনা, নারায়ণগঞ্জ ও চাঁদপুর। মধ্যম থেকে উচ্চ ঝুঁকির ১৯ জেলা মৌলভীবাজার, সিলেট, নরসিংদী, রাজবাড়ী, ফেনী, শরীয়তপুর, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, বরিশাল, রাজশাহী, নড়াইল, নীলফামারী, গাজীপুর, ফরিদপুর, মাদারীপুর, নওগাঁ, রংপুর, কিশোরগঞ্জ ও টাঙ্গাইল। কম ঝুঁকি থেকে উচ্চ ঝুঁকির পাঁচ জেলা নোয়াখালী, বগুড়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, যশোর ও নাটোর।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ১৮ দফা নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। তার মধ্যে মধ্যে ১০টিই কার্যকর করার দায়িত্ব পড়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বাইরের অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের ওপর। কমপক্ষে ১০টি মন্ত্রণালয় সরাসরি সম্পৃক্ত থেকে নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়ন করবে। মন্ত্রণালয়গুলো হচ্ছে— জনপ্রশাসন, স্বাস্থ্য, পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র, স্থানীয় সরকার, সড়ক, নৌপরিবহন, বিমান, শিল্প ও বাণিজ্য এবং ধর্ম মন্ত্রণালয়। আবার কয়েকটি নির্দেশনা কার্যকর করতে হবে সমন্বিতভাবে।

এ ক্ষেত্রে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জেলা প্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পুলিশ ও অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপরই বেশি দায়িত্ব পড়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য মন্ত্রণালয় যার যার সেক্টরের জন্য প্রযোজ্য নির্দেশনাগুলো কার্যকর করবে।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস স্বাক্ষরিত সোমবারের নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে, ‘সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর, সংস্থা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’ এছাড়া ‘সিদ্ধান্তসমূহ অবিলম্বে সারা দেশে কার্যকর হবে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত আপাতত দুই সপ্তাহ পর্যন্ত বলবৎ থাকবে’।

সেখানে বলা হয়েছে, সব ধরনের জনসমাগম (সামাজিক-রাজনৈতিক-ধর্মীয়-অন্যান্য) সীমিত করতে হবে। উচ্চ সংক্রমণযুক্ত এলাকায় সব ধরনের জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হলো। বিয়ে-জন্মদিনসহ যেকোনো সামাজিক অনুষ্ঠান উপলক্ষে জনসমাগম নিরুৎসাহিত করতে হবে; মসজিদসহ সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে; পর্যটন-বিনোদনকেন্দ্র, সিনেমা হল-থিয়েটার হলে জনসমাগম সীমিত করতে হবে এবং সব ধরনের মেলা আয়োজনে নিরুৎসাহিত করতে হবে; গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে এবং ধারণক্ষমতার ৫০ ভাগের বেশি যাত্রী পরিবহন করা যাবে না; সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় আন্তঃজেলা যান চলাচল সীমিত করতে হবে, প্রয়োজনে বন্ধ রাখতে হবে; বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের ১৪ দিন পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক (হোটেলে নিজ খরচে) কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে হবে; নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী খোলা-উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি পরিপালনপূর্বক ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবস্থা করতে হবে; ওষুধের দোকানে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে; স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলো মাস্ক পরিধানসহ যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে; শপিং মলে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েরই যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে; সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাদ্রাসা, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়) ও কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে; অপ্রয়োজনীয় ঘোরাফেরা-আড্ডা বন্ধ করতে হবে।

জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাত ১০টার পর বাইরে বের হওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে হবে; প্রয়োজনে বাইরে গেলে মাস্ক পরিধানসহ সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে। মাস্ক পরিধান না করলে কিংবা স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে; করোনায় আক্রান্ত-করোনার লক্ষণযুক্ত ব্যক্তির আইসোলেশন নিশ্চিত করতে হবে। করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা অন্যদেরও কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে হবে; জরুরি সেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান ছাড়া সব সরকারি-বেসরকারি অফিস-প্রতিষ্ঠান শিল্প-কারখানাগুলো ৫০ শতাংশ জনবল দ্বারা পরিচালনা করতে হবে। গর্ভবতী-অসুস্থ-বয়স ৫৫-ঊর্ধ্ব কর্মকর্তা-কর্মচারীর বাড়িতে অবস্থান করে কর্মসম্পাদনের ব্যবস্থা নিতে হবে; সভা, সেমিনার, প্রশিক্ষণ, কর্মশালা যথাসম্ভব অনলাইনে আয়োজনের ব্যবস্থা করতে হবে; সশরীরে উপস্থিত হতে হয় এমন যেকোনো ধরনের গণপরীক্ষার ক্ষেত্রে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে, হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোতে ধারণক্ষমতার ৫০ শতাংশের বেশি মানুষের প্রবেশ বন্ধ করতে হবে, কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ এবং অবস্থানকালীন সর্বদা বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরিধানসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে।

আমারসংবাদ/জেআই