Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক আবুল কাসেম

নিজস্ব প্রতিবেদক

মার্চ ৩১, ২০২১, ০৮:৩৫ পিএম


বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক আবুল কাসেম

দীর্ঘ ৬০ বছরেরও অধিক সময় ধরে ঢাকার মতিঝিল, গুলিস্তান, আরামবাগ, কমলাপুর এলাকার আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে বিশ্বস্ত, ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল কাসেম। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনায় শহীদ পরিবারের এই বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল কাসেম ছাত্রজীবনেই যুক্ত হন পাকিস্তানবিরোধী আন্দোলনে। মৃত্যুর ঝুঁকি উপেক্ষা করে তিনি সরাসরি অংশগ্রহণ করেন মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে। ১৯৭১ সালের ১ এপ্রিল যুদ্ধকালীন সময়ে তারই বড় ভাই প্রকৌশলী মো. ফজলুর রহমান, ছোট ভাই মো. রফিকুল ইসলাম (বাসেত) ও ভাগিনা মো. আনোয়ার হোসেনকে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করে পাকবাহিনী। এ সময় অন্যান্যদের সাথে তাদের গণকবর দেয়া হয়।

৭৫-এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হলে বিচারের দাবিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাসেম। একই সাথে স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলন, ২০০১ পরবর্তী বিএনপি-জামায়াত সরকারের দুঃসময়, এক-এগারো সময়ে শেখ হাসিনা মুক্তি আন্দোলনসহ দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অকুতোভয় সৈনিক হিসেবে ছিলেন সামনের সারিতে। ঢাকার মতিঝিল, গুলিস্তান, আরামবাগ, কমলাপুর এলাকাসহ আশপাশের প্রতিটি আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল কাসেম।

সাবেক ৩২নং ওয়ার্ড (বর্তমান ৯নং ওয়ার্ড) আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল কাসেম। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে বহুবার ষড়যন্ত্র মামলার মুখোমুখি হন। বহুবার পুলিশের নির্যাতনের শিকার হন, এখনো নির্যাতনের চিহ্ন বয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। 

দেশ স্বাধীনের আগে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের ঢাকা মহানগর শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল কাসেম ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসার পর পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে রাজপথে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ওই সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ডাকে প্রতিটি হরতাল ও কর্মসূচিতে শত শত নেতাকর্মী নিয়ে অংশ নেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল কাসেম। চারদলীয় জোট সরকারের আমলে নানামুখী অপকর্মের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম করতে গিয়ে পুলিশের হাতে হয়রানি হতে হয় এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে। এক-এগারো পরিস্থিতির সময় শেখ হাসিনা-জলিল-মেনন-ইনুসহ ৪৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যামামলার অন্যতম আসামি শহীদ পরিবারের এই আবুল কাসেম। যেখানে তৎকালীন সময়ে প্রতিদিনই পত্র-পত্রিকায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল কাসেমের আন্দোলনসহ এসব ছবি ছাপা হতো।

এক-এগারোর সময়ে বিশেষ বন্দি থাকাকালীন সময়ে শেখ হাসিনার মুক্তির দাবিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল কাসেমের নেতৃত্বে সাধারণ মানুষের গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে দলীয় দপ্তরে জমা দেন। বন্দি শেখ হাসিনার বিশেষ কারাগারের আশপাশে প্রতিদিন ৬০ জনের মতো নেতাকর্মী নিয়ে পাহারা দিতেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল কাসেম।

২০০৮ সালে দল ক্ষমতায় আসার পর সিটি কর্পোরেশন ও জাতীয় নির্বাচনে নৌকার মনোনীত প্রার্থীদের বিজয় নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি। তবে বর্তমানে সুবিধাবাদী আর নব্য আওয়ামী লীগের দাপটে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল কাসেম ও তার অনুসারীরা। দুঃসময়ে মাঠ দাবড়িয়ে বেড়ানো বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল কাসেম আস্তে আস্তে নিজ এলাকায় পরগাছা হয়ে পড়েন। প্রতিহিংসা আর ক্ষমতামুখী রাজনীতিবদদের কবলে পড়ে ছিটকে পড়েন।

শেখ হাসিনার সিপাহশালার বিশ্বস্ত-আস্থাভাজন ও কর্মীবান্ধব এ নেতা এখন অনেকটা নিভৃতে সময় কাটান। বয়সের জৌলুস না থাকলেও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের প্রতিটি কর্মসূচিতে অংশ নেন। কিন্তু যোগ্য মর্যাদা পাননি। ২০০৮ সালে দলে ভিড়ে অনেকে বড় নেতা হলেও বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল কাসেম এখন পদশূন্য। জানতে চাইলে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল কাসেম বলেন, আমার নেত্রী ও দেশরত্ন শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে আজীবন কাজ করেছি। যতদিন বাঁচবো নেত্রীর আদর্শ হতে বিচ্যুত হবো না।

আমারসংবাদ/জেআই