Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

আজ বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস

ডা. মুহাম্মদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ

এপ্রিল ৬, ২০২১, ০৮:১০ পিএম


আজ বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস

ভয়াবহ করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে গোটা বিশ্ব যখন হিমশিম খাচ্ছে, প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ আক্রান্ত ও মারা যাচ্ছে, সংকটপূর্ণ স্বাস্থ্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ডাক্তার, নার্স, টেকনোলজিস্টসহ স্বাস্থ্যকর্মীরা হিমশিম খাচ্ছেন। এমনই এক বৈশ্বিক দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে আজ ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস ২০২১’ পালিত হচ্ছে। স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। শারীরিক সুস্থতার নামই স্বাস্থ্য। অসুস্থ শরীর যার, তার পক্ষে সুখ লাভ অসম্ভব। স্বাস্থ্য এক অমূল্য সম্পদ। ভালো স্বাস্থ্যই সুস্থ ও সতেজ জীবনের চাবিকাঠি। একথা আমরা ছোটবেলা থেকেই শুনে আসছি। আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে সাধারণ মানুষের ভালো স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান বাধা যেমন দারিদ্র্য, তেমনই আর একটি প্রধান বাধা সচেতনতার অভাব। স্বাস্থ্যসংক্রান্ত সচেতনতা এমন একটি বিষয়, যার ওপর একটি দেশের মানবসম্পদ অনেকাংশে নির্ভরশীল। নাগরিকের সুস্বাস্থ্যের অভাব দেশের উৎপাদনশীলতা কমে, কমে যায় উন্নয়নের গতি। বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের গুরুত্ব এখানেই।

স্বাস্থ্যসংক্রান্ত সমস্যা ও উদ্বেগগুলোর প্রতি সাধারণ জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য আজ বুধবার বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস একটি বার্ষিক ইভেন্ট হিসেবে পালিত হচ্ছে। একটি নির্দিষ্ট থিম নির্বাচিত করা হয় বছরব্যাপী স্বাস্থ্য কার্যক্রম চালানোর জন্য। এ দিনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। প্রতি বছর সংস্থাটি এমন একটি স্বাস্থ্য ইস্যু বেছে নেয়, যা বিশেষ করে সারা পৃথিবীর জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। সে কারণে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে পালিত হয় এ দিবসটি। ১৯৪৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাষ্ট্রসংঘ অর্থনীতি ও সমাজ পরিষদ আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের সম্মেলন ডাকার সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৪৬ সালের জুন ও জুলাই মাসে আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাংগঠনিক আইন গৃহীত হয়, ১৯৪৮ সালের ৭ এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রথম সম্মেলনটি হয়েছিল, প্রতিষ্ঠার দুমাসের মাথায় ১৯৪৮ সালের ২৪ জুনে। নির্ধারিত দিনে জেনেভায় সংস্থাটির প্রথম সম্মেলনে উপস্থিত ছিলো ৪৬টি দেশ, এই সংগঠন আইন আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হয়। এই দিন ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস’ বলে নির্ধারিত হয়। ১৯৫০ সাল থেকে নিয়মিতভাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে পৃথিবীর নানা প্রান্তে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস পালিত হয়ে আসছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংস্থার সদস্যভুক্ত দেশগুলোতে প্রতি বছর যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে দিবসটি পালিত হয়।

স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সদস্যপদ পাওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দিবসটি পালন করে আসছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জোরালোভাবে প্রস্তাব করেছে, পৃথিবীর প্রতিটি রাষ্ট্র অবশ্যই সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নীতি চালু করবে, যাতে বিশ্বের একজন মানুষও স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হওয়ার ঝুঁকিতে না থাকে। প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা পেতে গিয়ে বছরে বিভিন্ন দেশে কমপক্ষে এক কোটি মানুষ ১.৯ ডলারের কম উপার্জনক্ষম মানুষের বলয়ে ঢোকে, অর্থাৎ চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে অবস্থান করতে বাধ্য হয়। গড়ে ৮ কোটি মানুষ তার প্রাত্যহিক মোট খরচের ১২ শতাংশের বেশি স্বাস্থ্যসেবার জন্য খরচ করে। এটি একটি ব্যাপক অর্থনৈতিক ঝুঁকি তৈরি করে। উন্নত দেশগুলোর নাগরিকরা ব্যক্তিগতভাবে অথবা রাষ্ট্রীয় পলিসির কারণে এ স্বাস্থ্যসেবাটুকু নিতে সমর্থ হয়। কিন্তু এশিয়া, আফ্রিকা, দক্ষিণ আমেরিকা— এসব মহাদেশের রাষ্ট্রগুলো বা এদের জনগণ এ সুবিধা দিতে বা পেতে ব্যর্থ হচ্ছে। সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা বলতে সব মানুষের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তির নিশ্চয়তা বোঝায়, যাতে তাকে অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়তে না হয়। একইসঙ্গে এটি সব মানুষের বিনামূল্যে চিকিৎসাপ্রাপ্তির বিষয়টি বোঝায় না। এটি আসলে রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্যসেবা নীতিকে এমনভাবে ঢেলে সাজাতে উৎসাহ দেয়, যাতে যেকোনো রাষ্ট্র তার অর্থনৈতিক কাঠামোর মধ্যেই জনগণের অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করে সব মানুষের স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে।

এখানে স্বাস্থ্যসেবা বলতে শুধু ওষুধ প্রদানকে বোঝায় না। স্বাস্থ্যসেবা বলতে আরও বোঝায়— ক. সব রোগীর প্রয়োজনীয় চিকিৎসা, খ. সম্ভাব্য সব অসংক্রামক রোগের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাপনা, গ. মৌসুমভিত্তিক সংক্রামক রোগের সময়োচিত প্রতিরোধ ও চিকিৎসাব্যবস্থাপনা, ঘ. জীবনব্যাপী সব মানুষের আদর্শ সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সব প্রাতিষ্ঠানিক, সামাজিক কাঠামো তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করা। স্বাস্থ্যসংক্রান্ত সমস্যা ও উদ্বেগগুলোর প্রতি সাধারণ জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য এটি একটি বার্ষিক ইভেন্ট হিসেবে পালিত হয়, একটি নির্দিষ্ট থিম নির্বাচিত করা হয় বছরব্যাপী স্বাস্থ্য কার্যক্রম চালানোর জন্য।

বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের কিছু পরামর্শ

* একটি স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা নির্বাচন করুন এবং ধীরে ধীরে তার সঙ্গে অভ্যস্ত হওয়ার চেষ্টা করুন।

* শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য ব্যায়াম বা শারীরিক কসরত খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শারীরিকভাবে কর্মক্ষম এবং সক্রিয় থাকার চেষ্টা করুন।

* নানা ধরনের খাবার খান, তবে সেগুলো যেন স্বাস্থ্যকর হয় সেদিকে নজর দিন। অতিরিক্ত ক্যালোরিসমৃদ্ধ খাবার বর্জন করে চলুন। যাতে অযথা ওজন বেড়ে না যায়।

* শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।

* কখনো কোনো খাবার বাদ দিয়ে যাবেন না। সময় মতো প্রাতরাশ-মধ্যাহ্নভোজ এবং রাতের খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। উপবাসে শরীরের ক্ষতি হয়।

* প্রক্রিয়াজাত এবং প্যাকেটজাত খাবার বর্জন করুন। এর মধ্যে উপকারের থেকে বেশি ক্ষতিকারক উপাদান থাকে।

* মৌসুমী সবজি ও ফল দিনে এক থেকে দুটো করে খাওয়ার চেষ্টা করুন।

* নুন এবং চিনি খাওয়ার ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ রাখুন। এর থেকে অসুস্থতা, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং হার্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

* শরীরে পানির ভারসাম্য বজায় রাখুন।

* দুশ্চিন্তা এবং হতাশাকে দূরে রাখুন। এর জন্য প্রয়োজনে যোগাভ্যাস মেডিটেশন নিয়মিত করতে হবে। যেকোনো স্ট্রেসফুল পরিস্থিতিকে এড়িয়ে চলুন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, বর্তমানে যে ভাইরাস আক্রমণ করছে, নোভেল-১৯ করোনাকে মহামারি ঘোষণা করেছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আরও আটটি দিবস পালন করে। যে আটটি স্বাস্থ্যসংক্রান্ত প্রচারমূলক কাজ করে তার অন্যতম হলো— বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস। অন্যগুলো বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস, বিশ্ব রোগ প্রতিরোধ সপ্তাহ, বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস, বিশ্ব তামাকবিরোধী দিবস, বিশ্ব রক্তদাতা দিবস, বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস এবং বিশ্ব এইডস দিবস। স্বাস্থ্যসংক্রান্ত সমস্যা ও উদ্বেগগুলোর প্রতি সাধারণ জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য এটি একটি বার্ষিক ইভেন্ট হিসেবে পালিত হয়, একটি নির্দিষ্ট থিম নির্বাচিত করা হয় বছরব্যাপী স্বাস্থ্য কার্যক্রম চালানোর জন্য।

ইসলামমের দৃষ্টিতে স্বাস্থ্য দিবসের গুরুত্ব

এবারের প্রতিপাদ্যের বিষয়ে বিশ্ব নবির তাগিদ সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো— আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের স্লোগান হচ্ছে. চিকিৎসার চেয়ে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনাই উত্তম। তাই সুস্থ থাকতে সর্ব প্রথম প্রয়োজন সতর্কতা। হাদিসে এসেছে— রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক ব্যক্তিকে পাঁচটি জিনিসের আগে পাঁচটি জিনিসকে সুবর্ণ সুযোগ মনে করার উপদেশ দেন। এরমধ্যে রোগব্যাধি আসার আগে সুস্থ অবস্থাকে (আল্লাহর নিয়ামাত) মনে করার তাগিদ দিয়েছেন। কেননা সুস্বাস্থ্য ও সুস্থতা মানুষের জন্য গণীমত।

* রোগের উৎপত্তি ঃ রোগের উৎপত্তি সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, হে মুহাজির সম্প্রদায়! এমন পাঁচটি অভ্যাস রয়েছে, সেগুলো যেন তোমাদের মধ্যে পাওয়া না যায়, সে জন্য আমি আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। এগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে অশ্লীলতা। যখন কোনো জাতির মধ্যে অশ্লীলতা প্রকাশ পায়, তখন তাদের মাঝে প্লেগ ও বিভিন্ন ধরনের দূরারোগ্য ব্যাধি মহামারি আকারে বিস্তার লাভ করবে, যা তাদের পূর্বপুরুষ কখনও শোনেনি।

*পরিবেশগত কারণেও মানুষের রোগ হয় ঃ পরিবেশ যখন ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে, তখনই মানুষ নানামুখী সমস্যায় পড়ে। অর্থাৎ রোগে আক্রান্ত হয়। পরিবেশের ক্ষতি ইসলাম পছন্দ করে না বরং তাকে গোনাহের কাজ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। আল্লাহ বলেন, ‘স্থলে ও জলে মানুষের কৃতকর্মের কারণে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়ে। আল্লাহ তায়ালা তাদের কর্মের শাস্তি আস্বাদন করাতে চান, যাতে তারা (অন্যায়-অনাচার-জুলুম থেকে) ফিরে আসে (সুরা রুম) কুরআন-হাদিস ও চিকিৎসাবিজ্ঞানের ধারাও তাই প্রমাণ করে যে, মানুষ যেমন পাপাচার-অশ্লীলতার কারণে রোগাক্রান্ত হয়, তেমনি পরিবেশগত কারণেও এমন হয়ে থাকে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহর কাছে তোমরা সুস্বাস্থ্য প্রার্থনা কর, কারণ ইমানের পর সুস্বাস্থ্যের চেয়ে অধিক মঙ্গলজনক কোনো কিছু কাউকে দান করা হয়নি (ইবনে মাজাহ)।

* সুস্থ থাকার প্রয়োজনীয়তা ঃ মানব জীবনের সুস্বাস্থ্য ও সুস্থতা অত্যন্ত জরুরি বিষয়। ইসলামের বিধি-বিধানগুলো সুন্দরভাবে পালন করার জন্যও সুস্বাস্থ্য ও সুস্থতা প্রয়োজন। কারণ শারীরিক ও মানসিক শক্তি ছাড়া ইবাদতেও মন বসে না। হাদিসে এসেছে, ‘দুর্বল মুমিনের তুলনায় শক্তিশালী মুমিন অধিক কল্যাণকর ও আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয়। তবে উভয়ের মধ্যেই কল্যাণ রয়েছে।’ (মুসলিম)

হাদিসে এসেছে— ‘অধিকাংশ মানুষই দুটি নিয়ামতের বিষয়ে অসতর্ক ও প্রতারিত। ১. সুস্থতা এবং ২. অবসর। (বুখারি) এ ব্যাপারে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, কিয়ামতের দিন বান্দাকে নিয়ামত সম্পর্কে সর্বপ্রথম যে প্রশ্নটি করা হবে তা হলো তার সুস্থতা সম্পর্কে। তাকে বলা হবে আমি কি তোমাকে শারীরিক সুস্থতা দিইনি? (তিরমিজি)

* চিকিৎসা গ্রহণের তাগিদ ঃ রোগাক্রান্ত হলে চিকিৎসা গ্রহণ জরুরি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে অসুস্থ হলে চিকিৎসা গ্রহণ করতেন। লোকদের চিকিৎসা নিতে উৎসাহিত করতেন। তিনি বলতেন, ‘হে আল্লাহর বান্দাগণ! তোমরা চিকিৎসা গ্রহণ কর, কেননা মহান আল্লাহ তায়ালা এমন কোনো রোগ সৃষ্টি করেননি, যার প্রতিষেধক তিনি সৃষ্টি করেননি। তবে একটি রোগ আছে যার কোনো প্রতিষেধক নেই, তাহলো বার্ধক্য।’ (আবু দাউদ)

হজরত সাদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘আমি একবার ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়ি। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে দেখতে এসে তার হাত মোবারক আমার বুকের ওপর রাখেন। আমি অন্তরে এর শীতলতা অনুভব করি। অতপর তিনি বলেন, তুমি হূদরোগে আক্রান্ত হয়েছ। তুমি ছাকীফ গোত্রের হারেস ইবনে কালদারের কাছে যাও। সে (এই রোগের) চিকিৎসা করে।’ (আবু দাউদ)

বিশ্বনবি বলেন, ‘আল্লাহ তায়ালা রোগ দিয়েছেন, রোগের প্রতিষেধকও নাজিল করেছেন। প্রত্যেক রোগের চিকিৎসা রয়েছে। সুতরাং তোমরা চিকিৎসা গ্রহণ কর। তবে হারাম বস্তু দ্বারা চিকিৎসা গ্রহণ করবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘হারাম বস্তুতে আল্লাহ তায়ালা তোমাদের জন্য আরোগ্য বা রোগমুক্তি রাখেননি।’ সুতরাং হাদিস দ্বারা প্রমাণিত যে, ইসলামের দৃষ্টিতে চিকিৎসা গ্রহণ করা শুধু বৈধই নয় বরং তা গ্রহণ করাই কাম্য। পরিশেষে আজকের বিষয়ের শেষ কথা হলো— বিশ্বনবির এ হাদিসের আমল অত্যন্ত জরুরি। তিনি বলেছেন, ‘পেটের এক-তৃতীয়াংশ খাদ্য দ্বারা, এক-তৃতীয়াংশ পানিয়ের জন্য এবং এক-তৃতীয়াংশ শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য খালি রাখবে।’ (ইবনে মাজাহ)

পরিমিত খাবার গ্রহণে অভ্যস্ত হলে সকল প্রকার রোগ-ব্যাধি থেকে মুক্ত থাকা যায়। কারণ মাত্রাতিরিক্ত ভোজন ডায়াবেটিসের অন্যতম কারণ। এ রোগের ফলেই মানুষের হার্ট, কিডনি, চোখ, দাঁত, নার্ভ সিস্টেমসহ সকল গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো সম্পূর্ণ বা আংশিক ধ্বংস হতে থাকে। সুতরাং ডায়াবেটিস থেকে মুক্ত থাকতে হলে বিশ্বনবির ফর্মুলাই আরোগ্য থাকার অন্যতম উপায়। আল্লাহ তায়ালা বিশ্ববাসীকে ইসলামি অনুশাসন মেনে সুস্বাস্থ্য ও সুস্থ থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।

আমারসংবাদ/জেআই