Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪,

বেড়েছে শাক-সবজির দাম

এম এ আহাদ শাহীন

এপ্রিল ৯, ২০২১, ০৮:০৫ পিএম


বেড়েছে শাক-সবজির দাম

সপ্তাহের ব্যবধানে কঠোর নিষেধাজ্ঞার মধ্যে রাজধানীর অধিকাংশ বাজারেই বেড়েছে শাকসবজির দাম। সবজিভেদে কেজিপ্রতি ৫-১০ টাকা এবং আঁটি প্রতি শাক ১০-১৫ টাকা বেশি দাম বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর শুক্রাবাদ, কলাবাগান, কাঁঠালবাগান, কারওয়ানবাজার ও নিউমার্কেট কাঁচাবাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে শাকসবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। কিন্তু কঠোর নিষেধাজ্ঞার কারণে পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে সরবরাহ ঠিক থাকলে দ্রুই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে।

নিউমার্কেট কাঁচা বাজারের সবজি বিক্রেতা চন্দন রায় বলেন, বাজারে পর্যাপ্ত শাকসবজি রয়েছে। স্বাভাবিকভাবে শুক্রবারসহ ছুটির দিনে পাইকারি বাজারেই দাম বেশি থাকে। তার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞার কারণে পণ্য পরিবহনে বাড়তি খরচ হচ্ছে। ফলে সেই প্রভাবেও দাম বেড়েছে।

সরেজমিন রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে সবজির মধ্যে খুচরায় দাম বেড়েছে বেগুনের। রোজার আরও কয়েক দিন বাকি থাকলেও এরই মধ্যে কেজিতে ৫-১০ টাকা বেড়েছে গোল ও লম্বা বেগুনের দাম। আগের সপ্তাহে লম্বা বেগুন ৩৮-৪০ টাকায় বিক্রি হলেও তা ৫০ টাকায় ঠেকেছে।

৫০-৫৫ টাকার গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। খুচরার পাশাপাশি পাইাকারিতেও বেগুনের দাম চড়া। মানভেদে লম্বা বেগুনের পাল্লা (৫ কেজি) ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩৫ টাকায়। গোল বেগুনের পাল্লা ১০ টাকা বেড়ে ১৩০-১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পালংশাক, লালশাক, কলমিশাক ও কচুশাকসহ সব ধরনের শাকের দামও বেড়েছে। এক আঁটি শাক কিনতে ১০-১৫ টাকা গুণতে হচ্ছে ক্রেতাদের। পালং শাকের আঁটি ১০-১৫ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে লালশাক, সবুজ শাক, পাট ও কলমিশাক। পুঁই শাকের আঁটি ৩০-৪০ টাকা।

এক আঁটি ডাটা কিনতে লাগছে ২০-৩০ টাকা। পাইকারিতে বেড়েছে টমেটোর দামও। প্রতি পাল্লা ৭০-৮০ টাকা। মরিচের দামও প্রতি পাল্লা বেড়ে ১০০-১২০ টাকা হয়েছে। প্রতি পাল্লা শসা ১১০-১৩০, চিচিঙ্গা ৮০-৯০, বরবটি ১৮০-২০০, শিম ১০০-১১০, ঢেঁড়শ ১৬৫-১৭০, করলা ১৩০-১৪০, উচ্ছে ১৫৫-১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

খুচরা বাজারে প্রতি কেজি গোল টমেটো ৩০-৩৫, উচ্ছে ৪৫-৫০, করলা ৪০-৪৫, ঢেঁড়শ ৩৮-৪০, শিম ৪০-৪৫, বরবটি ৫৫-৬০, চিচিঙ্গা ৩২-৩৫, শসা ৩৮-৪০, পেঁপে ৩০-৩৫, পটোল ৪০-৪৫, চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গা ও ধুন্দল ৪৫-৫০, মুলা ৩০-৩৫ ও মরিচ ৬০ টাকা।

এদিকে অস্বাভাবিক দাম বেড়েছে লেবুর। পাইকারিতে ছোট আকারের লেবু প্রতিশ ৩৫০-৪০০, মাঝারি ৪৫০-৫০০ এবং বড় লেবু ৭৫০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরায় দাম দ্বিগুণের বেশি।

আগের চেয়ে কমেছে পেঁয়াজের দাম। পাইকারিতে প্রতি পাল্লা ১৫৫-১৬০, ভারত থেকে আমদানি পেঁয়াজ ১৪০-১৪৫ টাকা। দেশি পেঁয়াজ ৩৫-৩৬ টাকা এবং ভারতের পেঁয়াজ ৩২-৩৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলুর পাল্লা পাইককারিতে ৯০-৯৫ এবং খুচরায় ২০-২২ টাকা।

অন্যদিকে রোজায় ব্যাপক চাহিদার মুখে দাম বেড়েছে খেজুর, বেগুন, রসুন, আদার। সারা বছরের মধ্যে খেজুরের সবচেয়ে বেশি চাহিদা বাড়ে রোজায়। কেজিতে ২০ টাকা বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

টিসিবির হিসাব বলছে, গত সপ্তাহে সাধারণ মানের খেজুর বিক্রি হয়েছিল ১২০-৩৫০ টাকা কেজি দরে। এখন বিক্রি হচ্ছে ১৫০-৩৫০ টাকায়।

বিক্রেতারা জানান, বাজারের সবচেয়ে কম দামের খেজুর জাহেদি আসে তিউনিশিয়া ও আলজেরিয়া থেকে। কিছুদিন আগেও এ খেজুরের কেজি ছিল ১২০-১৩০ টাকা। এখন তা বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৫০ টাকায়। একই দেশ থেকে আসা ধাবাস খেজুরও ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে ২৪০-২৫০ টাকায়।

সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে আসা নাগাল খেজুরসহ বিভিন্ন মানের আম্বার, আজোয়া, মরিয়ম খেজুরও আগের চেয়ে দাম বেড়ে ৫৫০-১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মুদিপণ্যের মধ্যে রোজার প্রয়োজীয় পণ্য ছোলার দাম অপরিবর্তিত থাকলেও কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭৫ টাকায়।

আমদানি করা মাঝরি আকারের মসুর ডালের দাম বেড়ে ৮০-৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি মসুর ১১৫-১২০ টাকা। মানভেদে মুগডাল ১২০-১৪০ টাকায়। দেশি রসুনের কেজি ৮০-৯০ টাকা। আমদানি করা রসুন ১১৫-১২০ টাকায়। দেশি আদা ১০০-১২০ টাকা এবং আমদানি করা আদা ১০০-১৪০ টাকা। প্যাকেট আটার কেজি ৩২-৩৫ টাকা।

চিনি ৬৮ থেকে ৭০ টাকা, কোম্পানি ও মান ভেদে লবণ ২৫-৪০ টাকা। জিরা ৩২০-৪০০ টাকা, ছোট এলাচ ২৪০০-৩৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ভোজ্যতেলের দাম না বাড়লেও তা আগে থেকেই বেশ চড়া। প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১২৫-১৩০, খোলা পাম অয়েল ১১০-১১৫, সয়াবিনের এক লিটারের বোতল ১৪০, পাঁচ লিটারের বোতল ৬৪০ থেকে ৬৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরে মুরগির চড়া দাম খানিকটা কমেছে।

প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৪৫-১৫০ টাকা এবং সোনালি মুরগি ২৯০-৩০০ টাকায়। ডিমপাড়া লাল ও সাদা লেয়ার মুরগি ২১০-২২০ টাকায় এবং দেশি মুরগির প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৮০-৫০০ টাকায়। মাংসের মধ্যে গরু ৫৮০-৬০০ এবং বকরি ৭৫০-৮০০, খাসি ৮২০-৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লেয়ার মুরগির ডিম ডজন বিক্রি হচ্ছে ৯০-৯৫ টাকায়, হালি ৩২-৩৩ টাকা।

আমারসংবাদ/জেআই