Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

চুপসে গেছে হেফাজত

এপ্রিল ১১, ২০২১, ০৭:৪৫ পিএম


চুপসে গেছে হেফাজত
  • মামুনুলের রিসোর্টকাণ্ড ও কথিত ‘দ্বিতীয় বিয়ে’ নিয়ে অপপ্রচারকারীদের কঠোরভাবে মোকাবিলায় দেয়া হুমকির বাস্তবতা দেখা যায়নি আট দিনেও
  • মামুনুলের রিসোর্টকাণ্ডে নেতিয়ে পড়েছে মোদিবিরোধী আন্দোলনের উত্তাপ
  • রিসোর্টকাণ্ডের পর প্রকাশ্যে অবস্থান নিলেও এখন বলছে ব্যক্তিগত
  • দেশজুড়ে তাণ্ডবের কথা অস্বীকার হেফাজতের

গত কয়েক মাস ধরেই সভা-সমাবেশে, ওয়াজে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসা কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম মার্চের শেষ দিকে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরকে ঘিরে ব্যাপক সন্ত্রাস চালায় দেশের বিভিন্ন এলাকায়। একই ইস্যুতে উত্তাপের যে প্রেক্ষাপট সৃষ্টি করেছিল গোটা দেশজুড়ে সে প্রেক্ষাপটের পাশ কাটিয়ে এখন অনেকটাই চুপসে গেছে হেফাজতে ইসলাম— এমনটাই বলছেন অনেকেই।

সর্বশেষ গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের রয়েল রিসোর্টে নারী নিয়ে মামুনুল হক অবরুদ্ধের পর তাকে উদ্ধার করতে গিয়েও তাণ্ডব চালায় হেফাজতকর্মীরা। সোনারগাঁও ছাড়াও মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া, সুনামগঞ্জের ছাতকেও ত্রাস সৃষ্টি করে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। সেই সঙ্গে অনলাইনে বিশেষ করে ফেসবুক লাইভে এসেও চলতে থাকে বিভিন্ন হুমকি-ধামকি। তবে সম্প্রতি সরকারপ্রধান ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সতর্কতা বক্তব্যের পাশাপাশি সহিংসতার ঘটনায় দেশের বিভিন্ন স্থানে মামলা, গ্রেপ্তার অভিযান শুরুর পর থেকেই হেফাজতে ইসলাম চুপসে গেছে বলেও মনে করছেন অনেকেই।

হেফাজতের আমির বাবুনগরীর দেয়া সর্বশেষ বিবৃতিতেও কোনো ধরনের হুমকি নেই বরং দেয়া হয়েছে জনগণের মনের প্রতিক্রিয়ার সতর্কতা। হেফাজতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘অন্যথায় আলেম-ওলামার সঙ্গে বাড়াবাড়ির কারণে সরকার নিঃসন্দেহে জনগণের কাছে আরও ঘৃণিত ও নিন্দিত হবে।’

যদিও এর আগে নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশে এলে ‘সরকার পতনের ক্ষেত্র তৈরি করার’ ঘোষণা দিয়েও ২৬ মার্চ চট্টগ্রামের হাটহাজারী, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ত্রাস চালিয়েছিল হেফাজত। সে সময় আক্রমণ হয় বহু সরকারি সম্পত্তি এমনকি থানায়ও। এর দুই দিন পর দলটির ডাকা হরতালেও ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে  যে তাণ্ডব চালিয়েছিল তা ছিলো নজিরবিহীন। সরকারি-বেসরকারি স্থাপনার পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধ ও ভাষা আন্দোলনের সবগুলো স্মৃতিচিহ্নতেও আক্রমণ করা হয়েছিল। নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান, হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ, কিশোরগঞ্জে থানা, আওয়ামী লীগ অফিস, মহাসড়কেও চলেছে তাণ্ডব। তবে এখন সেসব কিছুই স্বীকার করে না হেফাজত। হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় একাধিক নেতার সঙ্গে আমার সংবাদ থেকে গতকাল যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কাউকেই পাওয়া যায়নি। কেউ কেউ ফোন ধরছেন না আবার কারো কারো ফোন বন্ধ থাকায় কথা হয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদীর সঙ্গে।

মোদিবিরোধী আন্দোলনে যে উত্তাপ ছড়িয়েছিল হেফাজত, মামুনুল হকের রিসোর্টকাণ্ডের পর কেন হঠাৎ চুপসে গেছে হেফাজত এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে হেফাজতের আরও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে যারা আছেন কেন্দ্রীয় পর্যায়ে তাদের সঙ্গে কথা বললে ভালো হয়। আর আসলে হেফাজতে ইসলাম তো রাজনৈতিক কোনো দল নয়, কিছু ধর্মীয় ইস্যুর ওপরেই কাজ করে থাকেন। ২৫ ও ২৬ মার্চ হেফাজতের কোনো কর্মসূচি ছিলো না, তারপরও বিষয়টি এভাবে হয়ে গেছে জানিয়ে তিনি পুনরায় হেফাজতের কেন্দ্রীয় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা নেতাদের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। কিন্তু হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, সহকারী মহাসচিব সাখাওয়াত হোসেন রাজীসহ একাধিক নেতার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি।  

এদিকে সোনাগাঁওয়ের রয়েল রিসোর্টে মামুনুল হক অবরুদ্ধের ঘটনার পর তার পক্ষে প্রকাশ্যেই অবস্থান নেয় হেফাজত। তবে মামুনুলের বিয়ের দাবি যখন প্রশ্নের মুখে পড়ে যায়, এমন প্রেক্ষাপটে বিষয়টি নিয়ে এখন আর আগের মতো সোচ্চার নয় সংগঠনটির নেতারা। বরং গতকাল চট্টগ্রামের দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসায় আনুষ্ঠানিক বৈঠক শেষে হেফাজতের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের যে বিষয়টি নিয়ে এখন সর্ব মহলে আলোচিত হচ্ছে এটা তার ব্যক্তিগত বিষয়। আর হেফাজত থেকে তার অব্যাহতির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলেও জানিয়েছেন তিনি। অথচ গতকাল গণমাধ্যমে এমন তথ্য আসার পর থেকেই এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে এখন চাউর হচ্ছে ঘটনার শুরু থেকেই হেফাজতে ইসলাম মামুনুলের পক্ষ নিয়ে যেভাবে সরব ছিলো, এখন কেন ব্যক্তিগত বিষয় বলে দায় এড়িয়ে যাচ্ছে হেফাজত— এমন প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে।

এ ছাড়াও রিসোর্টকাণ্ডের পরদিন আমার সংবাদের এ প্রতিবেদক হেফাজতের আমির জুনায়েদ বাবুনগরীর সঙ্গে কথা বলতে চেয়ে প্রেস সচিব এনামুল হক চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি হেফাজতের কেন্দ্রীয় বক্তব্য হিসেবে জানান, মামুনুল হকের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার প্রশ্নই উঠে না। কারণ রিসোর্টকাণ্ডে উনি যা বলেছেন তা আমরা বিশ্বাস করেছি। তিনি ওই নারীকে বিয়ে করেছেন। যদি আমরা ওনার বক্তব্য কিংবা ওনাকে অবিশ্বাস করতাম, তাহলে ওনার বিরুদ্ধে তদন্ত কিংবা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়ায় যেতাম। এছাড়া রিসোর্টের ঘটনায় প্রথমে যে নারী ছিলো, সে নারীকেও পরিবর্তন করা হয়েছে ঘটনা সাজানোর জন্য। মোট কথা, নারী পরিবর্তনের পয়েন্টসহ ঘটনাটি সাজানো এমন ইঙ্গিত দিয়ে তিনি মামুনুল হকের পক্ষেই বলেছিলেন।

অথচ যে সংগঠন এই ঘটনায় ঢাকা রিপোর্টার ইউনিটিতে প্রতিবাদ সভায়ও সংগঠনটির সহকারী মহাসচিব সাখাওয়াত হোসেন রাজী উচ্চস্বরে বলেছিলেন, মামুনুল হকের ভাইরাল হওয়া কথোপকথন কাটছাট করা হয়েছে। এ নিয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনেও ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হবে। এ ছাড়া হেফাজতের সঙ্গে কেউ সংঘর্ষে জড়ালে গদি থাকবে না বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন তিনি। অথচ সে বক্তব্যের বাস্তবতা আদৌ দেখা যাচ্ছে না। বরং মামুনুলের রিসোর্টকাণ্ড ও কথিত ‘দ্বিতীয় বিয়ে’ নিয়ে যারা ‘অপপ্রচার’ করেছেন তাদের কঠোরভাবে মোকাবিলার যে হুমকি দিয়ে আসছিল সংগঠনটি গত আট দিনেও তার বাস্তবতা তো দেখাই যাচ্ছে না বরং এখন পর্যন্ত আর কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্যও আসছে না সংগঠনটির পক্ষ থেকে। গত ৭ এপ্রিল থেকে আসা সংগঠনটির কোনো বিবৃতিতেও এই প্রসঙ্গটি উল্লেখই নেই। বরং মামুনুল হক ফেসবুক লাইভে এসে হেফাজতে বিভক্তি ঠেকানোর আকুতি জানিয়েছেন। বলছেন, তারা বিভক্ত হলে তার পরিণাম ভালো হবে না। তবে তিনি এসব ফোনালাপকে সত্য বলেও স্বীকার করে নেন। এরপর থেকেই কার্যত চুপসে গেছে হেফাজতে ইসলাম!

গত বৃহস্পতিবারও বহুল আলোচিত ফেসবুক লাইভে এসে মামুনুল বলেছেন, ‘তারা শান্তি চান। করোনা ভাইরাস মহামারি পরিস্থিতিতে এখন একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহের কথাও বলছেন। সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই সকল মহলের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান। কেউ কারো ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করব না। অন্য কারো সঙ্গে মতের অমিল থাকতে পারে, রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকতে পারে, সেখানে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করবেন, কোনো আদর্শিক ভিন্নতা থাকতে পারে, আদর্শিকভাবে আপনি আপনার যুক্তিতর্কসহ ভিন্ন মতাদর্শকে মোকাবিলা করবেন।’ করোনা পরিস্থিতির উল্লেখ করে সেদিন তিনি বলেন, ‘সকল মহলকে আহ্বান জানাব, আসুন বিশ্বে কোভিড নাইনটিনের যে ভয়াবহ পরিবেশ বিরাজ করছে, এই পরিস্থিতিতে আমরা দেশবাসী সবাই ঐক্যবদ্ধ থেকে পরিস্থিতি মোকাবিলা করি।’ তবে ২ এপ্রিল বায়তুল মোকাররমে হেফাজতের সমাবেশে করোনাকে সরকারের অজুহাত দেখানোর অভিযোগ করা হয়। সেদিন মামুনুলের উপস্থিতিতে সংগঠনের ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি জুনাইদ আল হাবীব বলেন, ‘করোনা হওয়ার পর স্ত্রী-পুত্র তাদের পাশে আসে না। ছেলে-মেয়েরা তাকে ছেড়ে চলে গেছে। তার রুমের ভেতরে গিয়েছি, মাথার পাশে বসেছি, মাথায় হাত ভুলিয়ে দিয়েছি, দোয়া করেছি। মাশাআল্লাহ আমার করোনা হয়নি, আমার ফ্যামিলির কারো করোনা হয়নি। সুতরাং এই অজুহাত দেখিয়ে ইসলামি সম্মেলন তারাবির নামাজ, মাদ্রাসা মসজিদে নামাজ বন্ধের পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন না। করলে হেফাজত ইসলাম আবার মাঠে নামবে।’

অথচ গতকাল হাটহাজারী মাদ্রাসায় আলোচিত বৈঠক শেষে সংগঠনের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী বলেছেন, ‘সরকারের সঙ্গে আমাদের কোনো যুদ্ধ নাই। সরকার সরকারের অবস্থানে কাজ করুক, আমরা আমাদের অবস্থানে কাজ করি আগের মতো। আমরা যুদ্ধ করবো না। ‘আমাদের হেফাজতে ইসলামের উদ্দেশ্য সরকারের পতন নয়। হেফাজতে ইসলাম ঈমান আকিদা, আরও একটা কথা আছে।’ গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ নারায়ণগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় তাণ্ডবে হেফাজত সমর্থকদের যে প্রাণহানি হয়েছে, সেটি ভুলে যাওয়ার কথাও বলেন তিনি। তিনি বলেন, ‘সরকারের কাছে আমাদের দাবি হলো, যা হই গেছে, হই গেছে, তাদের কপালে আছে শহিদ হওয়ার, তাদের কপাল খুব ভালো...। ‘যা হওয়ার হই গেছে, এখন আমরা মাদ্রাসার পরীক্ষা হই গেছে। এখন রমজানের ছুটি দিয়া দিছি, মাদ্রাসা এখন বন্ধ, মাদ্রাসা ঠাণ্ডা। আমি ধর্মমন্ত্রীকেও বলছি, আমাদের এমপি সাবকেও বলছি, অন্য জায়গাতেও বলছি, মাদ্রাসা ঠাণ্ডা।’

গতকাল বাবুনগরী কথা বলেন তাদের নেতাকর্মীদের তাণ্ডবের পর পুলিশের অভিযান নিয়ে। যদিও তাণ্ডবে নিজেদের সংগঠনের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে তিনি দাবি করেন, তাদের সব কর্মসূচি ছিলো শান্তিপূর্ণ। হরতাল, মিছিল-মিটিং বৈধ উল্লেখ করে বাবুনগরী বলেন, ‘শান্তিপূর্ণভাবে এসব বৈধ। হামলা, ভাঙচুর অবৈধ। আমরা হামলা ভাঙচুরের বিপক্ষে।’ বাবুনগরীর দাবি, পুলিশ-র্যাব নিরীহদের হয়রানি করছে। তিনি বলেন, ‘প্রতি রাতে এলাকায় পুলিশ-র্যাব বের হয়ে নিরীহ মানুষকে হয়রানি করছে, ধরি নিয়া যাইতেছে, অত্যাচার করতেছে, চালান দিতেছে, পটিয়া, হাটহাজারী, এই সমন্ত এলাকায়। মহেশখালি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নারায়ণগঞ্জ আরও বিভিন্ন জায়গা, মুন্সিগঞ্জ নিরীহ মানুষকে, নির্দোষ মানুষকে হয়রানি করতেছে, ধইরা নিয়া যাইতেছে। পুলিশ তাদের ঘরে ঢুকি যায়, তারা ?ঘুমাইতে পারে না, বাড়িঘর ছেড়ে চলে গেছে অনেক।’ তিনি বলেন, ‘আমি ধর্মমন্ত্রীর সঙ্গে প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে এখন কথা বলছি, তিনি বলছেন, এইডা তো আইন নয়, আইন হলো সিসি ক্যামেরায় যারা দোষী সাব্যস্ত হবে, আসলে প্রকৃত যারা দোষী সাব্যস্ত করা হবে, তাদের বিচার করা হবে। আমি বললাম ১০০ ভাগ। আমি মিয়া নিয়া আপনার সঙ্গে আছি। কিন্তু নির্দোষ মানুষকে খামোখা ধরিয়া নিয়া যাওয়া, যেটা পুলিশ করে আমরা জানি। তাদের চাকরি প্রমোশন হওয়া উচিত না। ‘চাকরির প্রমোশন হওয়ার জন্য এই রকম জুলুম নির্যাতন যদি করে, আল্লাহর গজব আসবে। সরকারের কাছে আমাদের দাবি এইগুলো বন্ধ করতে হবে।’ হেফাজতের আমির বলেন, ‘আমি ধর্মমন্ত্রীকে বলেছি, এখন সব সব ঠাণ্ডা, মাদ্রাসা ঠাণ্ডা, এলাকাও ঠাণ্ডা, কিন্তু যদি এভাবে ধরাধরি হয়, ধরিয়া নিয়া যায়, নিরীহ মানুষকে ধরিয়া নিয়া যায়, যদি এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়, পুরা আশঙ্কা আছে। আবার উত্তেজনা সৃষ্টি হবে।’

‘কালেকশনের মওসুমে’ মাদ্রাসা বন্ধ করা যাবে না : লকডাউনের নামে রোজায় মসজিদ-মাদ্রাসা বন্ধ না করার অনুরোধও করেন বাবুনগরী। তার দাবি, মাদ্রাসায় মসজিদে কুরআন-হাদিসের আলোচনা হয় বলেই করোনা আসবে না। তিনি বলেন, ‘তার প্রমাণ হলো, আল্লাহর রহমতে মাদ্রাসার কোনো ছাত্র করোনায় আক্রান্ত হয়নি। মাদ্রাসার কোনো বড় হুজুর করোনায় আক্রান্ত হয়নি। যারা বেশি করোনা থেকে বাঁচতে চায়, করোনা তাদেরকে ধরবে।’ মাহে রমজানে কালেকশন আছে উল্লেখ করে বাবুনগরী বলেন, ‘এই মাহে রমজান একটা বড় সিজন কালেকশনের। জাকাত ফিতরা, এগুলো নিয়া সারা বছর চলে। এই লকডাউন দিয়ে এটা বন্ধ করতেছে। এগুলো ছাড়া এই দেশে কওমি অঙ্গন থাকতে পারবে না, কওমি মাদ্রাসা থাকতে পারবে না।’ এই মওসুমে কওমি মাদ্রাসা বন্ধ মানে মাদ্রাসার সঙ্গে ‘যুদ্ধ’ চেষ্টা বলেও বর্ণনা করেন হেফাজত নেতা। তিনি বলেন, ‘কওমি মাদ্রাসা না থাকলে মুসলমান থাকবে না, বাংলাদেশ স্পেন হয়ে যাবে। আমরা বাংলাদেশকে স্পেন হতে দেবো না।’ হেফাজত নেতাদের ব্যাংক হিসাব চাওয়াকে হয়রানি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগেও এই ধরনের হয়রানি হয়েছে। আবারো হচ্ছে।’

আমারসংবাদ/জেআই