Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

মে মাস থেকে কমতে পারে এলপি গ্যাসের দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

এপ্রিল ২৬, ২০২১, ০৭:১০ পিএম


মে মাস থেকে কমতে পারে এলপি গ্যাসের দাম

এলপি গ্যাসের আন্তর্জাতিক বাজার দর এপ্রিল মাসে আরও কমে গেছে। টন প্রতি প্রায় পাঁচ হাজার ৫০০ টাকা কমে গেছে। এর সুফল ভোক্তারা আগামী মাস থেকে পেতে যাচ্ছেন বলে বিইআরসি (বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন) সূত্র জানিয়েছে। ২৮ এপ্রিল নতুন দর ঘোষণা আসতে পারে। যা মে মাস থেকে কার্যকর হবে বলে বিইআরসি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

মার্চের সিপি (সৌদি আরামকো কন্ট্রাক্ট প্রাইস) দর ছিলো যথাক্রমে প্রতি টন প্রোপেন বিউটেন ৬২৫ ও ৫৯৫ ডলার। সেই দর কমে চলতি মাসে (এপ্রিল) হয়েছে যথাক্রমে ৫৬০ ও ৫৩০ ইউএস ডলার। প্রোপেন টন প্রতি পাঁচ হাজার ৫১২ টাকা দর কমেছে (ডলার ৮৪.৮০)। অন্যদিকে বিউটেনের দরও সমান হারে কমে গেছে। সে হিসাবে গড় করলে কেজি প্রতি প্রায় সাড়ে পাঁচ টাকা কমে গেছে। এতে সিলিন্ডার (১২ কেজি) প্রতি দাম প্রায় ৬৫ টাকার মতো কমে আসার কথা।

গত ১২ এপ্রিল প্রথম এলপি গ্যাসের দর ঘোষণা করে বিইআরসি। তখন বলা হয়েছিল সৌদি রাষ্ট্রীয় কোম্পানি আরামকো ঘোষিত দরকে প্রতি মাসের ভিত্তি মূল্য ধরা হয়েছে। মার্চের দর অনুযায়ী কেজি প্রতি ৫১.৩৫ টাকা ধরে ঘোষিত দর। অপরেশনার ব্যয় যুক্ত করে প্রতি কেজি ৭৬.১২ টাকা ও মুসকসহ খুচরা মূল্য ধরা হয়েছে ৮১.৩০ টাকা। সৌদির দর উঠানামা করলে ৫২.৩৫ টাকার স্থলে উঠানামা করবে। অন্যান্য কমিশন ও খরচ অপরিবর্তিত থাকবে। প্রতি মাসে সৌদি সিপির ভিত্তিতে পুনঃনির্ধারণ করার জন্য বিইআরসির একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি আরামকো ঘোষিত দর সংগ্রহপূর্বক ২৫ তারিখের মধ্যে সুপারিশ প্রদান করবে পরবর্তী মাসের দরের। অন্যদিকে কোম্পানিগুলো প্রতি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে সৌদি সিপির দর লিখিতভাবে কমিশনে দেবেন। কমিশনের সেই নির্দেশনা অনুযায়ী মে মাসের দর ঘোষণার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বিইআরসি। অটো গ্যাসের আদেশে বলা হয়েছে, মার্চের সৌদি সিপি অনুযায়ী যথাক্রমে প্রোপেন বিউটেন দর ৬২৫ ও ৫৯৫ ডলার। ৮৪.৮০ টাকা ডলার মূল্য বিবেচনায় অটোগ্যাসের ভিত্তি মূল্য (লিটার) ২৮.৫২ টাকা, এরসঙ্গে জাহাজ ভাড়া ৪.৪৮ টাকা, অন্যান্য চার্জ ৩০ টাকা, মজুদকরণ চার্জ ২.৬৩ টাকা, মুসক ২.৭৪ টাকা, পরিবহন চার্জ ১.২৫ টাকা ও স্টেশন চার্জ আট টাকা বিবেচনায় ৪৭.৯২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যদিও পূর্বের ঘোষিত দর খুব কম ক্ষেত্রেই কার্যকর হতে দেখা গেছে। এপ্রিলে ১২ কেজি ওজনের সিলিন্ডার ৯৭৫ টাকা খুচরা মূল্য নির্ধারণ করে বিইআরসি। কোথাও কম দামে আবার কোথাও কোথাও বেশি দামে বিক্রি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বিইআরসি ঘোষিত দর কার্যকর না হওয়া প্রসঙ্গে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব আনিসুর রহমান এক সেমিনারে বলেছেন, দাম বাড়লে বাড়বে, আবার কমলে যেনো কমানো হয়। না হলে শুধু কাগুজে আদেশ দিয়ে কাজ হবে না। এবার লকডাউনের কারণে সেভাবে করা হয়নি। সামনের মাস থেকে কঠোরভাবে দেখা হবে। বিইআরসি যে আদেশ জারি করেছে তা পালনে মাঠপর্যায়ে কাজ করতে জ্বালানি বিভাগের পক্ষ থেকে কার্যকর উদ্যোগ নেয়া হবে।

এতদিন এলপিজির দর ছিলো কোম্পানিগুলোর ইচ্ছাধীন। দর নির্ধারণের বিষয়ে অনেক দিন ধরেই কথা হলেও জ্বালানি বিভাগ, বিইআরসি নাকি বিপিসি করবে সে নিয়ে ছিলো রশি টানাটানি। সর্বশেষ ক্যাবের এক রিটের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট এলপিজির দর নির্ধারণ না করায় বিইআরসিকে শোকজ করে। সে মোতাবেক ১৪ জানুয়ারি গণশুনানি নিয়ে ১২ এপ্রিল দর ঘোষণা করে।

আমদানিকারকদের পক্ষ থেকে এই দরের বিষয়ে আপত্তি তোলা হয়েছে। তারা দাবি করেছে দর বেশি হওয়া উচিত। কিন্তু বিইআরসির বক্তব্য হচ্ছে তাদের সকল ইন্ডিকেটর ফলো করা হয়েছে। তারা যে দরের কথা বলছে তার চেয়ে অনেক কম দামে বাজারে বিক্রি করছে। সে কারণে বেশি দাম দাবি করাটা রহস্যজনক।

আমারসংবাদ/জেআই