Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

বাজারে বাজেটের প্রভাব

এম এ আহাদ শাহীন

জুন ৪, ২০২১, ০৮:০০ পিএম


বাজারে বাজেটের প্রভাব
  • বাজেট প্রস্তাবের পরের দিনই বাজারে মাছ, মাংস থেকে শুরু করে চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজসহ সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা

২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। গত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ছয় লাখ তিন হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছেন তিনি। বাজেট প্রস্তাবের পরের দিনই বাজারে মাছ, মাংস থেকে শুরু করে চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজসহ সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর শুক্রাবাদ, কলাবাগান, গ্রিন রোডসহ আশপাশের এলাকার বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, মাছ-মাংস, শাকসবজিসহ সবকিছুর দামই বাড়তি। ছুটির দিন হওয়ার সুবাদে স্থানীয় এসব বাজারে ক্রেতার উপস্থিতিও ছিলো বেশি। গতকাল কলাবাগান মাছের বাজারে প্রতি কেজি রুই মাছ ৩৩০-৩৬০ টাকা, কাতল ৩০০-৩৩০ টাকা, পাঙ্গাশ ১৯০-২২০ টাকা, পাবদা ৫৫০-৬০০ টাকা, ছোট তেলাপিয়া ১৪০-১৫০ টাকা, বড় তেলাপিয়া ১৯০-২০০ টাকা, সিলভার কার্প ১৭০-১৯০ টাকা, গ্রাস কার্প ১৫০-১৭০ টাকা, গলদা চিংড়ি ৭০০-৭৫০ টাকা এবং শিং মাছ ৪৫০-৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়াও এক কেজি বা ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকা, কাচকি  ৩৫০ টাকা, মলা মাছ ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারের মাছ বিক্রেতা আফাজ উদ্দিন বলেন, ‘শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় বাজারে ক্রেতার ভিড় বেশি। তাই মাছের চাহিদা বেড়েছে। আড়ত থেকে বেশি দামে মাছ কিনতে হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। এদিকে গরু, খাসির মাংস ও মুরগির দাম স্থিতিশীল থাকলেও বেড়েছে ডিমের। গরুর মাংস ৫৫০-৬০০ টাকা, খাসি ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা, ব্রয়লার ১৩০-১৩৫ টাকা, লেয়ার ২২০-২৩০ টাকা, সোনালি মুরগি ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মুরগির ডিম ৩২ টাকা হালি (আগে ছিলো ২৮-৩০ টাকা) ও হাঁসের ডিম ৪০ টাকা হালি (আগে ছিলো ৩৬-৩৮ টাকা) দরে বিক্রি হচ্ছে। একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সব ধরনের শাকসবজির দামও। গোল আলু, টমেটো, গোল বেগুন, লম্বা বেগুন, করলা, পটোল, লাউ, কাঁচা পেঁপে, শসা, গাজর, ফুলকপি, বরবটি, চিচিঙ্গা, মিষ্টি কুমড়া, ঝিঙা, কচুর লতি, ঢেঁড়স, লাউ শাক, পালং শাক, লাল শাক, কলমি শাকসহ সব ধরনের শাক-সবজির দাম বেড়েছে।

গত সপ্তাহে ৩০-৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া বেগুন গতকাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬৫ টাকায়, পেঁয়াজের ঝাঁজ মাঝে একটু কমলেও এখন আবার বেড়ে হয়েছে ৫৫ টাকা। কাঁচামরিচ আগে ৫৫ টাকা কেজি বিক্রি হলেও গতকাল হচ্ছে ৬০ টাকা, এক কেজি রসুন কিনতে গুণতে হচ্ছে ১২৫-১৩০ টাকা। পূর্বমূল্য ছিলো ১২০ টাকা। গোল আলুর দাম হয়েছে ২৫ টাকা কেজি। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয় ২০ টাকায়। এ ছাড়াও আদা ১০০-১২০ টাকা, করলা ৬০-৭০ টাকা, পটোল ৪০ টাকা, লাউ ৫০-৬০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ৫০ টাকা, গাজর (চায়না) ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, কচুর লতি ৬৫ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ এসব সবজি এক সপ্তাহ আগেও পাওয়া যেতো ৫-১০ টাকা কমে। এ ছাড়াও মুদি দোকানগুলোয় সয়াবিন তেল ১৪০-১৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

গতকাল বাজারের মুদি দোকানি রফিকুল বলেন, নতুন করে তেলের দাম আরও বেড়েছে। নতুন যেসব বোতল আসছে সেগুলোর দাম ১৫২ টাকা করে। পুরনো বোতল ১৪০-১৪৫ টাকা দরে বিক্রি করছি। তবে এখন পর্যন্ত চালের দাম স্বাভাবিক রয়েছে। ২৫ কেজির ওজনের নাজির শাইল চালের বস্তা এক হাজার ৬৫০ এক হাজার ৭০০ টাকা এবং মিনিকেট ৫০ কেজির বস্তা তিন হাজার টাকায় বিক্রি করছি। ক্রেতারা বলছেন, বর্তমান বাজারে সব কিছুর দাম স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি। এখন আবার নতুন করে বাজেট হয়েছে। বাজেটের প্রভাবে সামনে হয়তো অন্যান্য জিনিসের দাম আরও বাড়তে পারে। কলাবাগান কাঁচাবাজারে আসা স্থানীয় একটি মেসের ম্যানেজার আশিক বিল্লাহ বলেন, ঢাকায় আমরা যারা স্বল্প আয়ের মানুষ রয়েছি তাদের জীবন ধারণ অসম্ভব হয়ে পড়েছে। একটা মাছ কিনতে গেলে পাঁচ ছয়শ টাকা লাগে। শাকসবজির দাম বেশি, তেলের দাম বেশি, চালের দামও বেশি। আমরা আসলে যাবো কোথায়?’

আমারসংবাদ/জেআই