Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪,

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে চরম ঝুঁকিতে দক্ষিণ এশিয়া

রায়হান আহমেদ তপাদার

জুন ২৫, ২০২১, ০৬:২০ পিএম


জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে চরম ঝুঁকিতে দক্ষিণ এশিয়া

জলবায়ু পরিবর্তনে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রায় ৫৬ কোটি ৩০ লাখ মানুষ সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এদিকে সর্বাধিক কার্বন নির্গমনকারী দেশগুলোর নেতারা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় এক আন্তর্জাতিক বৈঠকে ওয়াশিংটনে মিলিত হয়েছেন। এছাড়া প্রতিবছর সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে এক থেকে তিন মিলিমিটার করে। এডিবির মতে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কারণ হচ্ছে এর দীর্ঘ উপকূল এলাকা এবং কৃষিখাতের উপর অত্যধিক নির্ভরশীলতা। ওই অঞ্চলের ৪৩ শতাংশ শ্রমশক্তি কৃষিখাতে নিয়োজিত। আমরা দেখেছি, যে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ওই অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ আরো বৃদ্ধি পাবে এবং কৃষিপণ্য উৎপাদন হ্রাস পাবে যা দেশগুলোর অর্থনীতির উপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে। এমনকি দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশেই তাপপ্রবাহ শুরু হয় বছরের মে মাসে এবং তা প্রলম্বিত হয় সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু এ বছর মে মাসের শেষ দিকেই তাপমাত্রা বৃদ্ধির বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। যদিও নেপালে কোনো ধরনের সতর্কবার্তা দেয়নি দেশটির কর্তৃপক্ষ, তবে দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দুটি দেশ বাংলাদেশ ও ভারতে এরই মধ্যে উচ্চ তাপমাত্রা অনুভূত হচ্ছে। গত ১ এপ্রিল নয়াদিল্লিতে বুধের স্তর ছিলো ৪০.১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। গত ৭৬ বছরে এটি ছিলো সর্বোচ্চ। ভারতের আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে এ বছরের এপ্রিল থেকে জুন মাসের মধ্যবর্তী সময়ে দেশটির বিভিন্ন স্থানে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তাপমাত্রা অনুভূত হবে। পাকিস্তান আবহাওয়া বিভাগে কর্মরত সরদার সরফরাজ চলতি বছরের এই আগাম তাপপ্রবাহকে স্বাভাবিক ভাবতে পারছেন না। তিনি এই অবস্থার জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকেই অভিযুক্ত  করছেন। বিশেষ  করে এই বছর পশ্চিম দিক থেকে হাওয়া প্রবাহিত হচ্ছে এবং করাচিতে দক্ষিণ দিকে থেকে সমুদ্র থেকে বয়ে আসা হাওয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এর ফলে ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে সারা দেশ। সরফরাজ বলেন, আগামী দিনগুলোতে ব্যাপক অনিশ্চয়তার সম্ভাবনা রয়েছে। সামপ্রতিক সময়ে পাকিস্তানের দক্ষিণ-পূর্ব অঙ্গরাজ্য সিন্ধ প্রদেশে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ২০১৫ সালে করাচিতে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে সর্বোচ্চ ৬৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায়। এ সময় কমপক্ষে এক হাজার ২০০ মানুষের প্রাণহানি হয় এবং ৪০ হাজার মানুষ হিটস্ট্রোকে অসুস্থ হয়ে পড়ে।

ঋতুরাজ বসন্ত যখন পূর্ণ যৌবনে, ঠিক তখন পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় শহর করাচির বাসিন্দারা বছরের প্রথম তাপপ্রবাহ মোকাবিলায় নিজেদের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। চলতি ৩ মার্চ বুধের স্তর ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায়— এটি ছিলো ১৯৪৭ সালের পরে এপ্রিল মাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা, যার অর্থ চলতি গ্রীষ্মে তাপমাত্রা পৌঁছাতে পারে আরো ভয়াবহ উচ্চতায়। দক্ষিণ এশিয়ায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ঘন ঘন উচ্চ তাপ প্রবাহের সাথে মানিয়ে নেয়া বা অভিযোজন আসলে সম্ভব। খোলা পরিবেশে মানুষের জন্য কৃত্রিম শীতাতপনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালুর পরামর্শ দেন। এক্ষেত্রে উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ধর্মীয় উপাসনা, গ্রন্থাগার এবং কমিউনিটি সেন্টারগুলোতে এই ব্যবস্থার প্রচলন করা যায়। পাশাপাশি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তিনি দুর্যোগ মেকাবিলায় বিশেষ বিশেষ দল গঠনের পরামর্শ দেন যারা তাপ প্রবাহের সময় জনগণের সহায়তায় পাশে দাঁড়াবে। অবশ্য কৃত্রিম শীতাতপনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা অপরিকল্পিতভাবে স্থাপন করা হলে উচ্চ তাপমাত্রার নেতিবাচক চক্রে তা পতিত হবে এবং এর ফলে আবারো শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ পরিচালনা করতে হবে। এয়ার কন্ডিশনিং বা শীতাতপনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় প্রচুর পরিমাণে বিদ্যুৎ ব্যবহূত হয়, যা জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বাড়িয়ে দিতে পারে। অনেক শীতাতপ ব্যবস্থায় হাইড্রোফ্লুরোকার্বন (এইচএফসি) গ্যাস ব্যবহার করা হয় যা উঞ্চায়নের ক্ষেত্রে কার্বন-ডাই অক্সাইডের চেয়েও বেশি ক্ষতিকর। সুতরাং জ্বালানি সহনীয় এবং এইচএফসিমুক্ত কুলিং প্রযুক্তিতে আরো বেশি বিনিয়োগ এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করতে পারে। পাকিস্তানে কোভিড-১৯ এর থাবা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। অতিমারি শুরুর পর এটি ছিলো আক্রান্তের সর্বোচ্চ রেকর্ড। কিন্তু সারা দিন খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে করাচির ধুলোময় তপ্ত বাতাসে অতিষ্ঠ দ্বীন মোহাম্মদ এ মুহূর্তে কোভিডে আক্রান্ত হওয়া নিয়ে মোটেই বিচলিত নন। তার কাছে এখন মারাত্মক করোনা ভাইরাসের চেয়ে করাচির তপ্ত আবহাওয়াই বেশি আতঙ্কের। তাপ সূচক হচ্ছে বাতাসে তাপমাত্রা এবং আপেক্ষিক আর্দ্রতার যৌথ মাত্রা। তাপমাত্রার প্রভাবে মানুষের দেহে কতটা গরম অনুভব হয় তার পরিমাপক হচ্ছে এটি। একে আপাত তাপমাত্রা হিসেবেও মনে করা হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সম্ভাব্য অপ্রত্যাশিত এবং চরম আবহাওয়া খুব দ্রুতই নগরীর ২০ কোটি বাসিন্দার জন্য দুর্ভাগ্যের কারণ হয়ে উঠছে। গত বছর বর্ষা মওসুমে প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে নগরীর বাসিন্দাদের জীবন যেনো থমকে গিয়েছিল। ১৯৩১ সালের পর গত বছর সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়। বৃষ্টির কারণে নগরীতে বন্যা সৃষ্টি হয় এবং বাসিন্দাদের বেশ কিছুদিন বিদ্যুৎ সংযোগবিহীন থাকতে হয়। সে সময় কমপক্ষে ৪১ জন মানুষের প্রাণহানি হয়। আমাদের শহর খুব দ্রুত বড় হচ্ছে। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে কংক্রিটের দালান আর কমছে সবুজ গাছপালা। এ অবস্থায় আমি ভবিষ্যত নিয়ে অত্যন্ত চিন্তিত। বিজ্ঞান সাময়িকী জিওফিজিক্যাল রিসার্স লেটারে প্রকাশিত এক গবেষণা নিবন্ধে বলা হয়, আগামী দিনগুলোতে এ অঞ্চলে তাপ প্রবাহের সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি দেখতে হবে। বিভিন্ন ধরনের সিম্যুলেশন এবং ভবিষ্যতে জনগণের সংখ্যা বিবেচনায় নিয়ে গবেষণায় ভবিষ্যতে তাপমাত্রা বৃদ্ধি সংক্রান্ত কিছু অনুমান তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয় প্যারিস চুক্তির ঈপ্সিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে হ্রাস করা সম্ভব হলেও দক্ষিণ এশিয়ায় চরম তাপপ্রবাহ একটি স্বাভাবিক জলবায়ু ঘটনা হিসেবেই চলমান থাকতে পারে। ইনডেক্সের মতোই ওয়েট বাল্ব টেম্পারেচারের মাধ্যমে বাতাসের আর্দ্রতা ও তাপমাত্রা নির্ণয় করা হয়, পাশাপাশি বাতাসের গতি, মেঘাচ্ছন্নতা, সুর্যের কৌনিক এবং অন্যান্য অবস্থান নিরূপণ করা হয়।

এই নির্ণয় প্রক্রিয়ায় ৩২ ডিগ্রি তাপমাত্রার মধ্যে ঘরের বাইরে শ্রম অনিরাপদ এবং এই মাত্রা হচ্ছে মানুষের সহ্য ক্ষমতার সর্বোচ্চ। এর অতিরিক্ত তাপমাত্রায় মানুষ তার দেহকে ঠাণ্ডা করার ক্ষমতা হারায়। গবেষকদের মতে, দক্ষিণ এশিয়ার লাখ লাখ মানুষ খুব অল্প সময়ের মধ্যেই অসহনীয় দাবদাহে পর্যুদস্ত হবে, কারণ এখানকার ওয়েট বাল্ব তাপমাত্রা ৩২ ডিগ্রির উপরে উঠতে শুরু করেছে। প্রায় ১.৫ বিলিয়ন জনসংখ্যার এই অঞ্চলে জন্য ফাহাদ সাঈদের এই গবেষণা ফলাফল একটি সতর্ক বার্তা। দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় ৬০ শতাংশ জনগণ কৃষির সাথে সম্পৃক্ত, তাপমাত্রার ঊর্ধ্বগতি নিঃসন্দেহে এখান ফসল উৎপাদন এবং শ্রমিকদের কার্যক্ষমতার উপরে মারাত্মক প্রভাব ফেলবে। আর অন্যদিকে সমগ্র দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে অবকাঠামো ভিত্তিক উন্নয়ন এবং নতুন নতুন আবাসন প্রকল্পের কথা চিন্তা করলে নির্মাণ শ্রমিকরা ধীরে ধীরে জনসংখ্যার আরো একটি বিপদগ্রস্ত অংশ হিসেবে পরিগণিত হতে যাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আমাদের বায়ুমণ্ডলের আর্দ্রতা ধরে রাখার ক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, আর এর অর্থ হচ্ছে ভূমণ্ডল আর্দ্রতা বৃদ্ধি পাবে। আর এর ফলে উপকূলীয় নগরীগুলো আরো বিপদাপন্ন হয়ে উঠছে। উচ্চ তাপমাত্রার সাথে অতি আর্দ্রতা মানে হচ্ছে দুর্যোগের ঘনঘটা। গবেষণায় বলা হয় উচ্চ তাপমাত্রার প্রভাব মূলত অনুভূত হবে করাচি, পেশওয়ার, মুম্বাই ও কলকাতার মতো বড় বড় উপকূলীয় শহরে কর্মরত হাজার হাজার দিনমজুর ও কলকারখানার শ্রমিকদের মধ্যে। এরা হচ্ছে দরিদ্রতম মানুষ যাদের শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের সুযোগ নেই। অন্যভাবে বলা যায়, তাপমাত্রার এই ঊর্ধ্বগতির ফলে বাড়বে দারিদ্র্য, ক্ষতিগ্রস্ত হবে জনস্বাস্থ্য এবং সর্বোপরি এই অঞ্চলে বসবাসরত জনগোষ্ঠীর ২৯ শতাংশ, অর্থাৎ ২১৬ মিলিয়ন মানুষের জীবনযাত্রার মান মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। এই বিশাল সংখ্যক জনগোষ্ঠীর সবাই অতিদরিদ্র। এটাই শেষ নয়, ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার কারণে অনুপাতহীনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এখানকার নারীরা। মার্কিন থিংক ট্যাংক আর্বান ইনস্টিটিউট ২০১৭ সালে একটি গবেষণা প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনসৃষ্ট নানামুখী চাপে বাড়িতে বাড়িতে নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে এবং দরিদ্র নারীরা ঘুম থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। গবেষণায় আরো বলা হয়, বৈরী আবহাওয়ার কারণে দিল্লি এবং ইসলামাবাদে দরিদ্র পরিবারগুলোতে কেউ অসুস্থ হলে নারীদের স্বাভাবিক সময়ের চেয়েও অতিরিক্ত এক ঘণ্টা সেবা দিতে হয়। এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের মাত্রা কমিয়ে আনতে বিশুদ্ধ জ্বালানি ব্যবহার বাড়িয়ে কার্বন-ডাই অক্সাইডের নির্গমন মাত্রা হ্রাসে সচেতনতামূলক কাজ করেন। জেন্ডার সমতা বিষয়ে জানতে চাইলে নামিরাহ হামিদ বলেন, এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি করতে হলে নারী নেতৃত্বকে নীতি নির্ধারণী প্রক্রিয়ায় আরো বেশি সম্পৃক্ত করতে হবে যাতে সংশ্লিষ্ট নীতিগুলো আরো নারীবান্ধব হতে পারে। এর মধ্য দিয়ে বিশুদ্ধভাবে রান্নার অভিগম্যতা, দুর্যোগ প্রশমন এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা যুক্ত করতে হবে। রাজনৈতিক কারণে ভারত ও পাকিস্তান হয়তো একে অপরের সাথে সরাসরি কাজ করতে অনাগ্রহ বোধ করতেও পারে, তবে জলবায়ু পরিবর্তন এমন একটি বিষয় যা সবার জন্যই সমান। দক্ষিণ এশিয়া আঞ্চলিক সহায়তা সংস্থা-সার্কের মাধ্যমে একে অপরের সাথে গবেষণা ও তথ্য আদান-প্রদানের জন্য এখনই উপযুক্ত সময়। জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়া। দেশের বিবেচনায় সবচেয়ে হুমকির মুখে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে দ্বিতীয় অবস্থানে ভারত, নেপাল চতুর্থ, আফগানিস্তান অষ্টম এবং পাকিস্তান রয়েছে ১৬তম অবস্থানে। ১৭০টি দেশের ওপর পরিচালিত সমীক্ষায় পাওয়া গেছে এই চিত্র। ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠান মেপলক্রফট ‘জলবায়ু পরিবর্তন ঝুঁকি সূচক’ শীর্ষক সমীক্ষাটি প্রকাশ করেছে গত বুধবার। সমীক্ষাটিতে ১৬টি দেশের তালিকা করা হয়েছে, যেগুলো আগামী ৩০ বছরের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে চরম ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। এই ১৬টি দেশের মধ্যে পাঁচটি দেশই দক্ষিণ এশিয়ার। মূলত বন্যা, খরা, ঝড় এবং সমুদ্রতলের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলেই মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হবে এসব দেশ।  এর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান শীর্ষে যাওয়ার কারণ হচ্ছে— এটি একদিকে সর্বোচ্চ খরা এবং অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি দুর্ভিক্ষের ঝুঁকির মুখে পড়বে।

এই সমীক্ষা অনুযায়ী, উচ্চ ঝুঁকির মুখে থাকা দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে ৪৯তম অবস্থানে চীন, ৮১তম অবস্থানে ব্রাজিল এবং ৮৬তম অবস্থানে জাপান। এ ছাড়া ‘মধ্যম’ ঝুঁকির মধ্যে থাকা দেশসমূহের তালিকায় রয়েছে ১১৭তম অবস্থানে রাশিয়া, ১২৯তম অবস্থানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ১৩১তম অবস্থানে জার্মানি, ১৩৩তম অবস্থানে ফ্রান্স এবং ১৩৮তম অবস্থানে যুক্তরাজ্য। ‘সবচেয়ে কম’ ঝুঁকির মধ্যে থাকা ১১টি দেশের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে নরওয়ে। এই তালিকায় নেদারল্যান্ডস ও স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলো রয়েছে যারা ইতোমধ্যে তাদের নিম্নাঞ্চলকে বাঁচাতে যথেষ্ট প্রস্তুতিমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। মেপলক্রফটের পরিবেশ বিশ্লেষক আনা মস বলেন, এ ব্যাপারে যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে যে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের মাত্রা এবং হার দুই-ই বাড়ছে। অতি সামান্য পরিমাণ তাপমাত্রা বৃদ্ধিই মানব পরিবেশের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। এর ফলে পানির অভাব, শস্য উৎপাদন হ্রাস, রোগ-বালাই বৃদ্ধি এবং সমুদ্রতলের উচ্চতা বেড়ে যাওয়ার ফলে ভূমি হ্রাসের মতো ঘটনা ঘটতে পারে।

লেখক : গবেষক ও কলামিস্ট

আমারসংবাদ/জেআই