Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,

‘অশ্লীল কাজে নিজেকে যুক্ত করতে চাই না’

জুন ২৯, ২০২১, ০৭:৫০ পিএম


‘অশ্লীল কাজে নিজেকে যুক্ত করতে চাই না’
  • বিয়ে, দেশের বাইরে থাকা ও মা হওয়া এবং সন্তান বড় করতে গিয়ে আমি বারবার কাজে বিরতি নিয়েছি। এত গ্যাপের পরও আমাকে যে সবাই মনে রেখেছেন, এটা সত্যিই পরম পাওয়া। বলেছেন টিভি নাটকের মেধাবী অভিনেত্রী মৌটুসী বিশ্বাস। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রকিব হোসেন

আপনার সমসাময়িক অন্যদের তুলনায় আপনাকে একটু কম কাজ করতে দেখা যায়। এর কারণ কী?

আসলে এই প্রশ্নটি তাদের কথা হতে পারে, যারা নির্মাতা। আমি চাইলেই কী বেশি বেশি কাজ করতে পারবো? আমি চাইলেই তা হবে না। আমি বরাবরই মাঝারি ধারায় কাজ করছি। কখনো এমনটি হয়নি যে, এই খুব কাজ করলাম, আবার হাতে কোনো কাজ নেই আমার। তাছাড়া এখন কিছু কিছু শিল্পী নিজেরাই প্রযোজনা করছেন, তারা তাদের পছন্দের শিল্পীদের নিয়েই কাজ করেন। মিডিয়াতে এখন কয়েকটি গ্রুপ হয়ে গেছে। আমি আসলে কোনো গ্রুপের মধ্যে পড়ি না। এই যেমন মাঝে আমি মাসুদ সেজানের ‘চলিতেছে সার্কাস’ নামের একটি সিরিয়ালে কাজ করেছি। এই সিরিয়ালের প্রথম থেকেই আমি ছিলাম। এরপর একই নির্মাতার ‘ডুগডুগি’ বা ‘খেলোয়াড়’ ধারাবাহিকেও আমি কাজ করেছি, কিন্তু প্রথম থেকেই আমি এই ধারাবাহিকগুলোতে যুক্ত ছিলাম না। আমি তাতে ঢুকেছি পরে। মানে একজন পরিচালকের একটি কাজ শেষ হলে আমি তার নতুন কাজে থাকতে পারি না-ও পারি। থাকা না থাকাটা নির্ভর করে তার ওপর। এই যেমন নির্মাতা আলভী আহমেদ আমার ভালো বন্ধু। কিন্তু কাজের ক্ষেত্রে সে খুব স্বার্থপর। যদি কোনো চরিত্রে আমাকে তিনি প্রয়োজন মনে করেন, তাইলেই সেখানে আমি কাস্ট হবো। আর এই বিষয়গুলোকে আমি পজেটিভলিই দেখি। তবে মিডিয়াতে কাজের ক্ষেত্রে আমি গ্রুপিং বা লবিং করতে ব্যর্থ।

আপনি ক্যারিয়ারের শুরুতে একটু কম কাজ করতেন বলেই নির্মাতাদের কারো কারো মধ্যে এই ধারণা জন্মেছে যে, আপনাকে হয়তো সব কাজে পাওয়া যাবে না। এর ব্যাখ্যা দিবেন কীভাবে?

আমি তখন কাজ কম করেছি এ কারণে, আমি তো কোনো ইনস্টিটিউট থেকে অভিনয় শিখে আসিনি। কাজ করতে করতেই আমাকে সেটা শিখতে হয়েছে। এ জন্য একটু সময় নিয়েছি নিজেকে গড়তে। এখন যেমন কোনো কাজের প্রস্তাব পেলে নিজের অভিনীতব্য চরিত্র নিয়ে নাট্যকার বা পরিচালকের সঙ্গে আলাপ করে দারুণ একটি চরিত্র দাঁড় করাতে পারি। কিন্তু শুরুতে আমার সেই কনফিডেন্স ছিল না। ফলে আমি নিজের কাজ নিয়ে অনেক ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিতাম। আর আমি একটা বিষয় লক্ষ করেছি, যারা ক্যারিয়ারের শুরুতে এসেই প্রচুর কাজ করে, তারা আবার দ্রুতই হারিয়ে যায়। আমি বরাবরই নিয়মতান্ত্রিক কাজ করেছি। তাই হারিয়ে যাইনি।

আপনি নিজেকে ভাগ্যবতী ভাবতেই পারেন। এর কারণ ক্যারিয়ারে আপনাকে বারবার বিরতি নিতে হয়েছে। কিন্তু এরপরও ভক্ত বা নির্মাতা মহল আপনাকে ভুলে যাননি, কী বলবেন?

বিষয়টি আমাকে দারুণ আনন্দ দেয়। সত্যিই তো বিয়ে, দেশের বাইরে থাকা ও মা হওয়া এবং সন্তান বড় করতে গিয়ে আমি বারবার কাজে বিরতি নিয়েছি। এত গ্যাপের পরও আমাকে যে সবাই মনে রেখেছেন, এটা সত্যিই পরম পাওয়া। কারণ আমি বিভিন্ন ধাপে বিরতি নেয়ার সময় কিন্তু জানতাম না ফিরে আসতে পারবো কি-না। দর্শক-নির্মাতারা আমাকে গ্রহণ করবেন কি-না। কিন্তু বিরতিগুলোর পরও তারা আমাকে গ্রহণ করায় আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। পাশাপাশি আমি কখনোই জোর করে টিভি পর্দায় আসতে চাইনি।

নাটকের প্রচার মাধ্যম পাল্টে গেছে কয়েক বছর ধরে। এখন ইউটিউবে ওয়েব সিরিজের গতি বাড়ছে। তবে এই ধারার কাজে অশ্লীলতার নানা অনুসঙ্গও দেখা যাচ্ছে। আপনার পর্যবেক্ষণ কেমন? ওয়েব সিরিজের ডায়ালগসহ বিভিন্ন দিকে অশ্লীলতা টের পাচ্ছি। যারা আমাদের টিভি নাটকের কোয়ালিটি নামিয়েছে। তারাই তো দেখছি এখন ইউটিউব কেন্দ্রিক নির্মাণে নিজেদের জড়িয়েছেন। এ ছাড়া যারা টিভিতে কাজ করে বেশি সংখ্যক দর্শক ‘রিচ’ করতে পারেননি। তাদের অনেকেই ইউটিউব নির্মাণে গিয়ে বেশি দর্শকের দৃষ্টি কেড়েছেন। আমাদের অনেক ওয়ার্ল্ড ক্লাস নির্মাতা আছেন, তাদের সঙ্গে ইউটিউবের নির্মাণে আমি কাজ করতে চাই। কিন্তু অশ্লীল ধারার কোনো কাজে আমি নিজেকে যুক্ত করতে চাই না। সত্যি বলতে কী, আমি অশ্লীল কোনো কাজে আর্ট খুঁজে পাই না।     

আমারসংবাদ/জেআই