Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,

‘প্রতিবন্ধকতা ফেস করেই যেতে হয়’

জুলাই ১০, ২০২১, ০৬:৪৫ পিএম


‘প্রতিবন্ধকতা ফেস করেই যেতে হয়’
  • বহুমুখী প্রতিভার আধার নানজীবা খান। তার প্রতিভা বিকাশের ক্ষেত্রগুলো বিবেচনায় নিলে বিস্মিত না হয়ে পারা যায় না। তিনি একাধারে ট্রেইনি পাইলট, সাংবাদিক, নির্মাতা, উপস্থাপিকা, লেখক, ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর, বিএনসিসি ক্যাডেট অ্যাম্বাসেডর এবং বিতার্কিক। বর্তমানে নিজেকে নির্মাতা হিসেবে পরিচিয় দিতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন নানজীবা। তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আশরাফি দিবা

কেমন আছেন? 

ভালো, অনেক ভালো। ইন্টারভিউ দিতে অনেক ভালো লাগে। তাই অনেক ভালো আছি।

লকডাউনের সময়টা কাটছে কেমন?

এ সময়টাতে সামনের প্রজেক্টের স্ক্রিপ্ট লিখছি। কিছু পেপার ওয়ার্ক করছি। এই সময় তো শুটিংও বন্ধ, বাসাতেই ভালো সময় কাটাচ্ছি।

বেশ কিছু পরিচয়ে পরিচিত আপনি, এর মাঝে কোনটা বেশি পছন্দের?

সবগুলো কাজই আসলে করা হয় ঘুরে ফিরে। একসাথে আমি সব কাজ করি না। অনেকে হয়তো ভাবেন আমি সব কাজ একসাথে করি। কিন্তু এইটা আসলে ভুল ধারণা। আমি যখন করি পার্ট বাই পার্ট করি। আমি যখন উপস্থাপনা করি তখন উপস্থাপনা করি, যখন ডিরেকশন দেই তখন সেই কাজেই মনোযোগ দেই। তবে আপাতত ডিরেকশনের জায়গাটা অনেক বেশি ভালো লাগছে।

আপনি বেশ কিছু সাক্ষাৎকার নিয়েছেন, কারটা বেশি ভালো লেগেছে?

এটা বলা কঠিন। সব সাক্ষাৎকারই ভালো লাগার। প্রতিটিরই আলাদা আলাদা অভিজ্ঞতা রয়েছে। আমার কাছে সবারটাই ভালো লেগেছে।

এমন কেউ কী আছেন, যার সাক্ষাৎকার নেয়ার ইচ্ছে আপনাকে তাড়া করে ফেরে?

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার নেয়ার ইচ্ছেটা আমার অনেক দিনের। জানি না এইটা পূরণ হবে কি-না। কিন্তু ওইটাই আমার একমাত্র ইচ্ছা।

আপনি প্রথম সাক্ষাৎকার নিয়েছেন— এমন অভিজ্ঞতার কথা জানতে চাই।

ওটা খুবই ভালো ছিলো। আমি তখন শিশু সাংবাদিক ছিলাম বিডি নিউজের। আমরা পরীক্ষা দিয়ে ঢুকেছিলাম। সাড়ে তিন হাজার ক্যান্ডিডেট ছিলো। সেখান থেকে ১৫-২০ জনের মতো নির্বাচন করেছে। এরমধ্য থেকে আবার পাঁচজন নির্বাচন করে আমাদেরকে রূপসী বাংলা হোটেলে পাঠানো হয়। এখান থেকে আবার একজন নির্বাচন করা হয় সাকিব আল হাসানের ইন্টারভিউ নেয়ার জন্য। ওইটা আমার জীবনের প্রথম ইন্টারভিউ ছিলো। আমি জানি না আসলে কী প্রশ্ন করতে হবে। কারণ আমাকে নির্বাচন করেই রুমের ভেতরে ঢুকিয়ে দেয়া হলো এবং আমি দেখলাম আরও কয়েকজন বসে আছে, সাথে আছেন সাকিব আল হাসান। তখন আমার বয়স মাত্র ১৩। ওইটা আসলে আমার জন্য অনেক ভালো একটা অনুপ্রেরণা ছিলো। সাহসের জায়গাটা ওখান থেকেই শুরু।

নারী হিসেবে চ্যালেঞ্জিং পেশায় কাজ করার ক্ষেত্রে কোনো প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়েছেন?

প্রতিবন্ধকতা আসলে প্রত্যেকটা জায়গাতেই থাকে। আমার মনে হয় ছেলে-মেয়ে সবারই প্রতিবন্ধকতা থাকে। সবাইকে প্রতিবন্ধকতা ফেস করেই যেতে হয়। একেকজনের প্রতিবন্ধকতা আসলে একেকরকম। তবে আমি ইদানিং যেটা ফেস করছি সেটা হচ্ছে, বহির্বিশ্ব এতো উন্নত হচ্ছে কিন্তু আমাদের দেশে কে কী ধরনের ড্রেস পড়লো, কীভাবে চলল, কেনো বেশি হাসলো— এই হাস্যকর জিনিসগুলো নিয়ে অনেক বেশি অ্যাটাক করা হয়। একজন মেয়ে সাকসেসফুল হলেই মনে করা হয় তার কোনো গডফাদার আছে বা পুরুষ সহযোগী আছে, যাকে সে তুষ্ট করায় এই পজিশনে এসেছে। এ ধরনের ভ্রান্ত ধারণা আছে, যেটা আমার কাছে খুব অদ্ভুত লাগে। আমাদের স্ট্রাগল বা কাজকে ছাপিয়ে কী হল, ব্যক্তিগত জীবনকে কীভাবে মুখরোচক করে তালা যায়, সেদিকেই সবার নজর। আমার কাছে মনে হয়, গণমাধ্যমও ইদানীং অনেক বেশি করে। গণমাধ্যম মানে আমিও তো গণমাধ্যমেরই একজন। তো আমরাই আসলে ঘুরেফিরে এই কাজগুলো বেশি করি। মেয়েদের  ক্ষেত্রে কোনো যেনো এ ব্যাপারটা আনতে পারলে আরও বেশি রসালো হয়। কাজের থেকে সে কার সাথে মিশলো, কী করল, কেমন ড্রেস পড়লো, এ জিনিসগুলো অনেক বেশি আলোচনা হয়। মোটকথা পোশাকের দৈর্ঘ্য দিয়ে যোগ্যতা নির্ধারণ করা হয়, যেটা খুবই হাস্যকর। আমার ভাবতেও অবাক লাগে যে, আমি যখন বাংলাদেশকে রিপ্রেজেন্ট করতে বাইরে যাই, ওরা আসলে শুধু কাজে ফোকাস। আর আমাদের এতো কিছুতে ফোকাস থাকতে হয়, যার জন্য আমরা অনেক বেশি ডিমোটিভেট হই এবং সেই সাথে ডিফোকাস হয়। আল্টিমেটলি এর ইমপ্যাক্ট আমাদের কাজের ওপর পড়ে।

আমারসংবাদ/জেআই