Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪,

সক্ষমতা বিনির্মাণ প্রকল্পে স্বাবলম্বী নারী

নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই ১৪, ২০২১, ০৭:১০ পিএম


সক্ষমতা বিনির্মাণ প্রকল্পে স্বাবলম্বী নারী

করোনাকালে সরকার ঘোষিত প্রণোদনার টাকা বিতরণের পাশাপাশি দেশের নারী জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন ও তাদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে তুলতে সক্ষমতা বিনির্মাণ প্রকল্পের অর্থায়নে একটি রিভলভিং ক্যাপিটাল সাপোর্ট ফান্ড গঠন করেছে জয়িতা ফাউন্ডেশন। যে ফান্ড থেকে নারী উদ্যোক্তা সমিতি/ব্যক্তি নারী উদ্যোক্তাদের স্বল্প সুদে স্বল্পমেয়াদি মূলধন সহায়তা/ঋণ প্রদান করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে নারী উদ্যোক্তা সমিতি/ব্যক্তি নারী উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে আবেদনপত্রও আহ্বান করেছে জয়িতা ফাউন্ডেশন। আজ ১৫ জুলাই পর্যন্ত এই ঋণের জন্য আবেদন করতে পারছেন নারী উদ্যোক্তারা। সক্ষমতা বিনির্মাণ প্রকল্পের আওতায় এ ঋণের পরিমাণ সর্বনিম্ন ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত। গ্রাহকপর্যায়ে সর্বোচ্চ সুদের হার ৪ শতাংশ ও ছয় মাসের গ্রেস পিরিয়ডসহ সর্বোচ্চ ১৮টি মাসিক কিস্তিতে পরিশোধিত হবে এই ঋণ। অর্থাৎ ঋণ পরিশোধে নারী উদ্যোক্তারা সময় পাচ্ছেন দুই বছর। জয়িতা ফাউন্ডেশনকে প্রাতিষ্ঠানিক, কারিগরি-আর্থিকভাবে সক্ষম ও স্বাবলম্বী করতে নারী উদ্যোক্তা সমিতি ও ব্যক্তি নারী উদ্যোক্তাদের বহুমুখী ব্যবসা, উদ্যোগ সফল ও ফলপ্রসূভাবে পরিচালনায় সক্ষম, একইসঙ্গে পর্যায়ক্রমে ২৮ হাজারের বেশি নারীকে সম্পৃক্ত করে নারী উদ্যোক্তা সমিতি বা ব্যক্তি নারী উদ্যোক্তাদের বহুবিধ ব্যবসা উদ্যোগের সক্ষমতার উন্নয়নই এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য।

এর আগে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে একটি বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান হিসেবে জয়িতা ফাউন্ডেশনের সক্ষমতা বাড়াতে ২৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘জয়িতা ফাউন্ডেশনের সক্ষমতা বিনির্মাণ’ প্রকল্প গ্রহণ করে সরকার। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জয়িতা ফাউন্ডেশনের আওতায় কর্মরত তৃণমূল পর্যায়ের নারী উদ্যোক্তা সমিতিগুলোর ব্যবসানুকূল প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়বে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। যার মাধ্যমে উদ্যোগী নারীদের সব প্রয়োজনীয় সহায়তা সেবা প্রদান ও ব্যবসা অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিসহ নারীবান্ধব ভৌত বাজার কাঠামো গড়ে তোলাও সম্ভব হবে। একইসঙ্গে বহুমুখী ব্যবসা উদ্যোগের জন্য নারীদের প্রয়োজনীয় সক্ষমতা ও দক্ষতাও বাড়ানো সম্ভব হবে। নারীদের উৎপাদিত পণ্যের বাজারও সৃষ্টি করবে জয়িতা ফাউন্ডেশন। সেক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি নারী উদ্যোক্তা সমিতি ও ব্যক্তি নারী উদ্যোক্তাদের বহুমুখী ব্যবসা, উদ্যোগ সফল ও ফলপ্রসূভাবে পরিচালনা করতে সক্ষম করে গড়ে তোলার ব্যবস্থা নিশ্চিতে যে সক্ষমতার প্রয়োজন জয়িতা ফাউন্ডেশনের, সেই সক্ষমতা বাড়াতেই ২৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে সক্ষমতা বিনির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করে সরকার। ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাস থেকেই শুরু হয়েছে এ প্রকল্পের কার্যক্রম। প্রকল্পের কাজ শেষ হবে ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর। এদিকে এই প্রকল্পের আওতায় প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়াতে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন সক্ষমতা, ভৌত অবকাঠামোগত সক্ষমতা, ব্যবসা উদ্যোগ উন্নয়ন সক্ষমতা, নারী উদ্যোক্তা উন্নয়ন সক্ষমতা, সংস্কার ও পরিবর্তন ব্যবস্থাপনা সক্ষমতাও বিনির্মাণ করা হবে। 

প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যই হচ্ছে, জয়িতা ফাউন্ডেশনকে একটি অনন্য ও বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান হিসেবে তৈরি করা, যাতে এটি বহুমুখী ব্যবসা উদ্যোগে বর্ধিষ্ণু অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততার মাধ্যমে দেশের নারী জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে এবং ক্রমান্বয়ে তাদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সাহায্য, অনুপ্রেরণা ও সহযোগিতা দিতে সক্ষম হয়।

এদিকে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে করোনা পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ত্বরান্বিত করতে এবং পল্লী এলাকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে সরকারের দ্বিতীয় দফার প্রণোদনার আওতায় নারী উদ্যোক্তাদের মাঝে স্বল্প সুদে সহজ শর্তে প্রণোদনার ঋণ বিতরণের ঘোষণা দেয় জয়িতা ফাউন্ডেশন। গত মাসের (জুন) মধ্যেই এই ঋণ বিতরণ কার্যক্রম শেষ করার কথা থাকলেও চলতি জুলাইয়ের মধ্যেই বিতরণ শেষ করা যাবে বলে আশা করছে জয়িতা ফাউন্ডেশন। 

জয়িতা ফাউন্ডেশনের আর্থিক ব্যবস্থাপনা শাখার সহকারী ব্যবস্থাপক মোছা. রাফিকা সুলতানা বলেন, ঋণ বিতরণ কার্যক্রমের সার্বিক প্রক্রিয়ায় কিছুটা সময় লেগে যাওয়ায় জুনের মধ্যে বিতরণ সম্পন্ন করতে না পারলেও আমরা আশা করছি চলতি জুলাইয়ের মধ্যেই বিতরণ সম্পন্ন করা হবে। আমরা দ্রুতই বিতরণ করার চেষ্টা করছি। ঋণ আবেদনে নারী উদ্যোক্তাদের থেকে কেমন সাড়া পাচ্ছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, বেশ ভালোই সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। এখনো আহ্বান করার সুযোগ রয়েছে। জুলাইয়ের শেষ দিন পর্যন্ত আহ্বানের সুযোগ রয়েছে।

আমারসংবাদ/জেআই