Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই ১৫, ২০২১, ০৬:৪০ পিএম


শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস আজ

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস আজ। বিগত ফখরুদ্দিন-মঈনউদ্দিনের সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই গ্রেপ্তার হন শেখ হাসিনা। পরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সারা দেশে লাগাতার আন্দোলনের মুখে দীর্ঘ ১১ মাস পর ২০০৮ সালের ১১ জুন কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। এরপর থেকে দিনটি ‘গণতন্ত্র অবরুদ্ধ দিবস’ হিসেবে পালন করছে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো।

তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে জাতীয় রাজনীতিতে মাইনাস ফর্মুলার অংশ হিসেবেই সেদিন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে দুর্নীতিবিরোধী অভিযান চলাকালে দুর্নীতির অভিযোগে বেশকটি দুর্নীতির মামলা করা হয়। ১৬ জুলাই ভোরে র্যাব, পুলিশ এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাসভবন সুধা সদনে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর তাকে নিম্ন আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিলে সংসদ ভবন চত্বরে স্থাপিত বিশেষ কারাগারে বন্দি রাখা হয় তৎকালীন সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীকে। বিশেষ কারাগারের পাশেই সংসদ ভবন চত্বরে অস্থায়ী আদালত স্থাপন করে শুরু হয় তার বিচার প্রক্রিয়াও। গ্রেপ্তারের আগে নিজ দলের নেতাকর্মী ও দেশবাসীর কাছে খোলা চিঠি লেখেন শেখ হাসিনা। ওই চিঠিতে তিনি লেখেন, ‘কখনো মনোবল হারাবেন না। অন্যায়ের প্রতিবাদ করবেন। যে যেভাবে আছেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবেন। মাথা নত করবেন না। সত্যের জয় হবেই। আমি আছি আপনাদের সাথে, আমৃত্যু থাকবো। আমার ভাগ্যে যা-ই ঘটুক না কেন, আপনারা বাংলার জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যান। জয় জনগণের হবেই। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়বই। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবই।’

সেনা সরকারের কঠোর নজরদারি এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ থাকলেও নেত্রীর কারামুক্তির দাবিতে তৎকালীন সময়ে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জিল্লুর রহমানের নেতৃত্বে দলটির নেতাকর্মীরা সংগঠিত হতে থাকেন। কারাবন্দি শেখ হাসিনার সঙ্গে আইনজীবী ও চিকিৎসকরা দেখা করতে গেলে তাদের মাধ্যমে দলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদ জানানোর পরামর্শ দেন। ওই সময় শেখ হাসিনা মুক্তি আন্দোলন করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অনেক নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। কারান্তরীণের একপর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন শেখ হাসিনা। পরে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন ও শ্রেণি-পেশার মানুষের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনার উন্নত চিকিৎসার দাবি ওঠে। ২০০৮ সালের ১১ জুন আট সপ্তাহের জামিনে মুক্তি পেয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যান শেখ হাসিনা।

২০০৮ সালের ৬ নভেম্বর দেশে ফেরেন শেখ হাসিনা। কয়েক দফায় জামিনের মেয়াদ বাড়ানোর পর তাকে স্থায়ী জামিন দিতে বাধ্য হয় তৎকালীন অগণতান্ত্রিক সরকার। পরে ২০০৮ সলের ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ঐতিহাসিক বিজয়ের মধ্য দিয়ে সরকার গঠন করেন তিনি। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বলেন, তৎকালীন সামরিক জান্তা সরকার গণতন্ত্রকে অবরুদ্ধ করার জন্য অন্যায়ভাবে নেত্রীকে গ্রেপ্তার করে। তাকে গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে থমকে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু এদেশের জনগণ ও নেতাকর্মীদের আন্দোলনের মুখে সরকার তাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। সে কারণেই বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে। বর্তমানে তিনি শুধু বাংলাদেশ নয়, সারাবিশ্বের জনপ্রিয় এক নেতায় পরিণত হয়েছেন।

প্রতি বছর দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন দল ও সংগঠন আলোচনা সভা এবং সমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। তবে এবার করোনা ভাইরাসের কারণে গত বছরের ন্যায় জনসমাগম এড়িয়ে কর্মসূচি পালন করার আহ্বান জানিয়েছে আওয়ামী লীগ।

আমারসংবাদ/জেআই