Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

‘চোখে গ্লিসারিন ছাড়াই কেঁদেছি’

জুলাই ১৭, ২০২১, ০৫:৫০ পিএম


‘চোখে গ্লিসারিন ছাড়াই কেঁদেছি’
  • লাক্স তারকা ফারিয়া শাহরিন এখন অভিনয়ে আগের চেয়ে সিরিয়াস। এরই মধ্যে নিজের অভিনয়ের জন্য দর্শকমহল থেকে প্রশংসিত হয়েছেন তিনি। ‘সাদা মানুষ’ নাটকে অভিনয়ের প্রশংসা পাওয়াকে এই টিভি তারকা নিজের অভিনয়জীবনের সেরা অর্জন হিসেবে দেখছেন। তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রকিব হোসেন

টিভি নাটকে আপনাকে মাঝে কমই দেখা গেছে। এখন আবার সরব হয়েছেন। মাঝে এই যে কম কাজ করা, এর কারণ কী ছিলো?

আমি মাঝে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করলাম। পড়াশোনাকেই তখন বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। আমি মালয়েশিয়ায় পড়তে গিয়েছিলাম। ফলে আমার পক্ষে অভিনয়ে নিয়মিত হওয়া সম্ভব ছিলো না। বিভিন্ন ছুটিতে দেশে আসলেই কেবল আমি নাটকে কাজ করতাম। এখন গ্র্যাজুয়েশন যেহেতু শেষ হয়েছে, তাই অভিনয়ে আগের চেয়ে বেশি মনোযোগ দিয়েছি। এই মাধ্যমের কাজে সিরিয়াসনেস আরও বাড়িয়ে দিয়েছি।

গেল ঈদে আপনার অভিনীত চারটি নাটক প্রচারিত হয়েছে। এর মধ্যে আপনি বেশি সাড়া পেয়েছেন সুমন আনোয়ার পরিচালিত ‘সাদা মানুষ’ নাটকে কাজের জন্য। নাটকটিতে শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা শুনতে চাই।

এই নাটকের শুটিং করেছিলাম করোনাকালের আগে। সেই সময় আমি অনেক অসুস্থ ছিলাম। আমার প্রচণ্ড জ্বর, সর্দিও ছিল। এমন শরীর নিয়েই আমি কাজটা করেছিলাম। নাটকে আমাকে একজন যৌনকর্মীর চরিত্রে দেখা গেছে। চরিত্রটি আমি অনেক উপভোগ করেছি। আসলে আমি বরাবরই চেষ্টা করেছি একটু ভিন্ন চরিত্রে কাজ করতে। এ নাটকে কাজের মধ্যদিয়ে আমার নতুন নতুন চরিত্রে কাজের আগ্রহ বেড়ে গেছে। সাদা মানুষ নাটকটি প্রচারের পর আমি দর্শকদের বেশ সাড়া পেয়েছি। ফলে আমি যে অসুস্থাবস্থায় শুটিং করেছিলাম, সেটা ভুলে গেছি। নিজের কষ্ট সার্থক মনে হয়েছে। এই নাটকটি আমার অভিনয়জীবনের সেরা কাজ। নাটকের শেষ দৃশ্যটা সবাই অনেক পছন্দ করেছেন। মনে পড়ছে শেষ দৃশ্যের সব সংলাপ আমি নিজেই দিয়েছি।

সবসময় কি এ ধরনের সংলাপ দেয়ার স্বাধীনতা পাওয়া যায়?  

না, ঠিক তা নয়। কারণ আমরা অভিনয় করতে গিয়ে নাট্যকারের লেখা সংলাপগুলোই অনুসরণ করি। সবসময় নিজের থেকে কিছু দেয়ার সুযোগ হয়ে ওঠে না। কখনো কখনো আবার সেই সুযোগ হয়। এই নাটকের পরিচালক সুমন আনোয়ার আমাকে নাটকের সিচুয়েশন বুঝিয়ে দিয়ে বলেছিলেন, ‘তোমার মতো করে সংলাপ দাও।’ তিনি বলেছিলেন, ওই মেয়ের অবস্থায় থাকলে আমি কী করতাম, সেটাই যেনো করি। আমি তখন নিজেকে ভুলে পুরোপুরি চরিত্র হয়ে উঠেছিলাম। আমিও বিশ্বাস করতে চেয়েছিলাম, আমি ওই মেয়ে হলে কী করতাম। তাই হয়তো দৃশ্যটা দর্শকের হূদয় ছুঁয়ে গেছে। সাধারণত আমরা কান্নার অভিনয় করতে গেলে চোখে গ্লিসারিনের ব্যবহার করি। কিন্তু এই নাটকের শেষ দৃশ্যে কান্নার জন্য আমি চোখে কোনো গ্লিসারিন ব্যবহার করিনি। চোখে গ্লিসারিন ছাড়াই কেঁদেছি। আমার কান্নাটা ছিলো সত্যিকারের। নাটকে নিজের অভিনীত চরিত্রের মাধ্যমে আমি ওই যৌনকর্মীর সত্যিকারের কষ্টটা বুঝতে চেষ্টা করেছি।

হবু স্বামী কি আপনার অভিনীত নাটক দেখেন?

হ্যাঁ, ও (স্বামী) আমার অভিনীত নাটক দেখে থাকেন। আর আমার অভিনয় ভালো হলে যেমন প্রশংসা করেন। আবার কোনো জায়গায় যদি তার মনে হয়, ওখানে আমার আরও ভালো করা দরকার ছিলো— সেটাও শেয়ার করেন। আমার হবু স্বামী সাদা মানুষ নাটকটা দেখে কেঁদেছিলেন। একই নাটক দেখে আমার এক কাজিন আমাকে ফোন করে হাউমাউ করে কেঁদেছে।

গুণী অভিনেতা ফজলুর রহমান বাবুর সঙ্গে ১৪ বছর পর ফের আপনি পর্দা ভাগাভাগি করেছেন। কেমন লাগলো তার সঙ্গে কাজ করে? 

ফজলুর রহমান বাবু ভাই আমার প্রিয় অভিনেতাদের একজন। আমি তার অভিনয় খুব পছন্দ করি। অভিনয়ের অনেক কিছু শেখার রয়েছে বাবু ভাইয়ের কাছ থেকে। অনেক বছর পর তার সঙ্গে কাজ করে আমি আনন্দ পেয়েছি। তার সঙ্গে পর্দা ভাগাভাগি করাটা সৌভাগ্যের বিষয় বলেই আমি মনে করি। আমি এ নাটকে অভিনয়ের অনেক সুযোগ পেয়েছি। আর তা কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি। ‘বাবার ছেলে’ নামের এই নাটকে আমাদের অভিনয় উপভোগ করা যাবে। নাটকটি রচনা করেছেন শফিকুর রহমান শান্তনু। পরিচালনা করেছেন মাহমুদ হাসান রানা। আমার বিশ্বাস নাটকটি দর্শকদের ভালো লাগবে।

আমারসংবাদ/জেআই