Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪,

১০ টাকায় চোখের চিকিৎসা

মাহমুদুল হাসান

আগস্ট ১১, ২০২১, ০৬:৪০ পিএম


১০ টাকায় চোখের চিকিৎসা

শরীয়তপুরের পদ্মার দুর্গম চরের আম্বিয়া বেগম (৫৫) এসেছেন জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ের এই বিশেষায়িত হাসপাতালে মায়ের সঙ্গে এসেছেন দুই ছেলে। টিকিট কাউন্টারে নেই লম্বা সিরিয়াল। কেটেছেন ১০ টাকার একটি টিকিট। সেই টিকিটেই মিলেছে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ। চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল থেকে বিনামূল্যে দেয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় ওষুধ। চিকিৎসাসেবা পেতে কোথাও পোহাতে হয়নি ভোগান্তি কিংবা হয়রানি। গুণতে হয়নি বাড়তি অর্থ। ঝামেলাহীনভাবে সেবা পাওয়ায় তারাও খুব খুশি।

জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটিতে ১০ টাকায় মেলে চোখের সব চিকিৎসা। অপারেশন তো হয়-ই, রোগীদের সব ওষুধও হাসপাতাল থেকে দেয়া হয়। করোনা মহামারির মধ্যেও এখানে চিকিৎসাসেবা চলছে স্বাভাবিক গতিতে। অপারেশনও নিয়মিত হচ্ছে। ১৩টি অপারেশন থিয়েটার রয়েছে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে। প্রতিদিন দুই থেকে তিন হাজার রোগী এই হাসপাতালের বহির্বিভাগে আসেন চিকিৎসাসেবার জন্য। তবে মাস্ক পরা ছাড়া কাউকে হাসপাতালে প্রবেশ করতে দেয়া হয় না। এসব শৃঙ্খলা ও উন্নয়নের পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রয়েছে হাসপাতালটির দীর্ঘদিনের পরিচালক অধ্যাপক ডা. গোলাম মোস্তফার।

তিনি জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালকে আধুনিকায়ন করা, চক্ষু চিকিৎসাসেবার মানোন্নয়ন ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় চক্ষু চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দিতে উপজেলাপর্যায়ে ৯০ কমিউনিটি ভিশন সেন্টার স্থাপন করেছেন। এজন্য প্রধানমন্ত্রীও তাকে সম্মানিত করেছেন। গত এপ্রিলের শেষ দিকে তার পরিচালক পদের চুক্তির মেয়াদ তিন বছর বাড়িয়েছে সরকার।

জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২৫০ শয্যার এ হাসপাতালে ৯টি বিভাগ চালু রয়েছে। এগুলো হচ্ছে— ক্যাটার্যাক্ট, কর্নিয়া, গ্লুকোমা, রেটিনা, অকুলোপ্লাস্টিক, পেড্রিয়াট্রিক অপথোমোলজি, নিউরো অপথোমোলজি, কমিউনিটি অপথোমোলজি ও লো-ভিশন। রয়েছে বিনামূল্যে কিংবা স্বল্পমূল্যে বিভিন্ন টেস্টের সুবিধাও। ১০ টাকার টিকিট কাটলেই রোগীর দায়িত্ব শেষ। বাকি সব চিকিৎসা বিনামূল্যে প্রদান করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এবাস্টিন জাতীয় ইনজেকশনের দাম ১২ হাজার টাকা। অপারেশনের সময় এটির প্রয়োজন হয়। এটি বিনামূল্যে প্রদান করা হয়। চোখের লেন্সও ফ্রি দেয়া হচ্ছে। অপারেশন শেষে রোগীর প্রয়োজনীয় সব ওষুধ বিনামূল্যে প্রদান করা হয়। এমনকি রোগীকে যখন ছাড়পত্র দেয়া হয়, তখনো বাসায় গিয়ে রোগীর যেসব ওষুধ ব্যবহারের প্রয়োজন হয় সেগুলোও প্রদান করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. গোলাম মোস্তফা বলেন, ১০ টাকার টিকিট কিনে এ হাসপাতালে চোখের সব ধরনের চিকিৎসা ও অপারেশন করা হয়। আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসা ও বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্যও রয়েছে অত্যাধুনিক সব যন্ত্রপাতি। রোগীদের সব ওষুধ বিনামূল্যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রদান করে। তিনি বলেন, সম্পূর্ণ দুর্নীতিমুক্ত এই হাসপাতাল। কেউ দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত হলে তার চাকরি শেষ। আর ডাক্তার-নার্সসহ সবাই সেবা প্রদানে কো-অপারেটিভ।

আমারসংবাদ/জেআই