Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

করোনাতেও নির্ভীক ড. হাছান মাহমুদ

আসাদুজ্জামান আজম

আগস্ট ১৮, ২০২১, ০৬:১০ পিএম


করোনাতেও নির্ভীক ড. হাছান মাহমুদ

ড. হাছান মাহমুদ, সরকারের তথ্য ও সম্প্রচারবিষয়ক মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। গত বছরের মার্চে শুরু হওয়া বৈশ্বিক মহামারি করোনা সংকটে সরকারের একজন নির্ভীক করোনাযোদ্ধা হিসেবে নিজেকে মেলে ধরেন। দল ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ের ব্যক্তি হলেও জীবনের ঝুঁকি নিয়েই কাজ করে আসছেন।

নিজ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে করোনা ভাইরাসের ঝুঁকিকে তাচ্ছিল্য করেছেন ড. হাছান মাহমুদ, এমপি। প্রতিদিনই মন্ত্রণালয় ও দলীয় দায়িত্ব পালনে জনসাধারণের সঙ্গে অবাধে মিশেছেন। পরিবার ও সহকর্মীদের নিষেধাজ্ঞায়ও দল এবং সরকারে সমানতালে কাজ করছেন। এ সময়েও মন্ত্রণালয়ে তার সাক্ষাতে এসে কেউ ফিরে যাননি। ঝুঁকি নেয়ার কারণেই দু’দফায় করোনা আক্রান্তও হয়েছেন। কিন্তু তাতেও দমে যাননি। অনেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে সবকিছু করার চেষ্টায় যেখানে মত্ত, সেখানে তথ্যমন্ত্রী প্রতিনিয়ত মন্ত্রণালয়ের সভা-সেমিনার, সাংবাবিদদের বিভিন্ন ব্রিফিং, দলের অনুষ্ঠানগুলোয় সরাসরি অংশ নিচ্ছেন। 

মন্ত্রণালয় সূত্রমতে, করোনা সংকট শুরু হওয়ার পর অদ্যাবধি ঘরবন্দি থাকেননি তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। কখনো দলের নেতাকর্মী, কখনো মন্ত্রণালয়ের কাজে, আবার কখনো নিজ নির্বাচনি এলাকার মানুষের সঙ্গে মিশেছেন। প্রতিদিনই মন্ত্রী গণমাধ্যমকর্মীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে বৈঠক করছেন।

ঘনিষ্ঠজনরা বলছেন, ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে শুরু করে অদ্যাবধি কঠোর পরিশ্রম আর দৃঢ়তায় প্রতিটি সেক্টরে সফলতার ছাপ রাখছেন ড. হাছান মাহমুদ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থা ও স্নেহভাজন নেতাদের মধ্যে অন্যতম হলেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, এমপি। এক-এগারো সরকারের সময় শেখ হাসিনা মুক্তি আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তিনি। এরপর দল ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। যার কারণে দলের গুরুত্বপূর্ণ পদ ও সরকারের মন্ত্রিপরিষদ সদস্য হন ড. হাছান মাহমুদ। দুটি ক্ষেত্রেই দায়িত্ব পালনে দক্ষতার পরিচয় দেন তিনি। যার কারণে তৃতীয়বারের মতো মন্ত্রিপরিষদ সদস্য এবং দলীয় অতিগুরুত্বপূর্ণ পদ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে আসীন করে পুরস্কৃত করেন শেখ হাসিনা। বর্তমানে দুটি পদেই সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।

করোনা সংকটে নানা অজুহাতে অনেকেই যখন ঘরে বসে আছেন, হাছান মাহমুদ কিন্তু একদিনও ঘরে বসে থাকেননি। প্রতিনিয়ত মন্ত্রণালয়ের কাজে সক্রিয় ছিলেন। করোনাকালীন সময়ে অন্য পেশার মতো গণমাধ্যমকর্মীরাও অসহায় হয়ে পড়েন। অনেকেই বেতন-ভাতা এবং চাকরি নিয়ে অনিশ্চয়তার পড়েন। ঠিক সে সময়ে অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বকেয়া বিজ্ঞাপন বিল প্রদানের উদ্যোগ নেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করে সাংবাদিকদের নগদ প্রণোদনার ব্যবস্থা করেন। প্রণোদনার সঠিক বণ্টনের বিষয়ে নিয়মিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতার সঙ্গে যোগাযোগ ও বৈঠক করছেন। প্রতিনিয়ত সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মহলের মিথ্যা তথ্যের সমালোচনার জবাব দিচ্ছেন গণমাধ্যমগুলোয়।

মন্ত্রী হলেও দলীয় কাজে একটুও অমনোযোগী নন ড. হাছান মাহমুদ। করোনা পরিস্থিতিতে মাঠ পর্যায়েরর নেতাকর্মীদের খোঁজ-খবর রাখছেন নিয়মিত। স্বশরীরে পাশাপাশি ভার্চুয়াল মাধ্যম ব্যবহার করেও দলের সভায় অংশগ্রহণ ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পরই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে তথ্য মন্ত্রণালয়। করোনা সংক্রমণ শুরুর আগে থেকেই পূর্বপ্রস্তুতি মোতাবেক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে মন্ত্রণালয়টি। তথ্যমন্ত্রীর প্রচেষ্টায় বিশেষ করে জনগণকে ভাইরাসটির প্রকোপ হতে বাঁচতে সচেতনতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে তথ্য মন্ত্রণালয়।

জাতীয় পর্যায়ে শত ব্যস্ততার মাঝেও নিজ নির্বাচনি এলাকাকে ভুলে যাননি ড. হাছান মাহমুদ। সমানতালে কাজ করছেন চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) আসনের এই সংসদ সদস্য। তার এলাকার মানুষকে করোনা ভাইরাস সংক্রমণমুক্ত রাখতে প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়েছেন। সময় পেলেই সেখানে ছুটে যাচ্ছেন। বিভিন্ন ত্রাণ কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন।

করোনা সংকটে অসহায় হয়ে পড়া চলচ্চিত্র জগতের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন তথ্যমন্ত্রী। গোটা ইন্ডাস্ট্রিকে রক্ষায় নিয়েছেন নানা পদক্ষেপ। সম্প্রতি তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের জহির রায়হান কালার ল্যাব মিলনায়তনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে চলচ্চিত্র প্রযোজক, পরিবেশক, পরিচালক ও শিল্পীদের আয়োজিত আলোচনা সভা ও চলচ্চিত্র-সংশ্লিষ্টদের করোনা চিকিৎসায় বিনামূল্যে অক্সিজেন ব্যাংকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন তিনি।

এ সময় তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন দেশের ৮০ শতাংশ মানুষকে করোনার টিকা দেবেন। ইতোমধ্যেই প্রায় দুই কোটি মানুষকে টিকা দেয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যার নির্দেশে আমাদের দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মী করোনার মধ্যে জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছেন এবং পাশে দাঁড়াতে গিয়ে আমাদের সংসদীয় দলের ১৩০ জনেরও বেশি সংসদ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এতে বেশ কজন মৃত্যুবরণ করেন। ৮১ সদস্যবিশিষ্ট বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির পাঁচজন মৃত্যুবরণ করেছেন। মন্ত্রিসভার প্রায় অর্ধেক সদস্য একবার কিংবা দুবার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আমি দুবার আক্রান্ত হয়েছি। কিন্তু করোনার মধ্যে একদিনও ঘরে বসে থাকিনি।’

বিকালে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বিজ্ঞাপনচিত্র নির্মাতা প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক করেন তথ্যমন্ত্রী। বৈঠকে বিদেশি শিল্পী দিয়ে দেশি বিজ্ঞাপন নির্মাণে নির্মাতাদের প্রতি বিদেশি শিল্পীর জন্য দুই লাখ টাকা এবং এমন বিজ্ঞাপন প্রচারের সময় টিভি চ্যানেলকে বিজ্ঞাপনপ্রতি এককালীন ২০ হাজার টাকা সরকারি ফি প্রদানের নিয়মটি কার্যকর করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

আমারসংবাদ/জেআই