Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪,

বিচারে স্থবিরতা কাটেনি

আগস্ট ২৯, ২০২১, ০৭:০০ পিএম


বিচারে স্থবিরতা কাটেনি
  • নিষ্পত্তিতে রাষ্ট্রের বিশেষ উদ্যোগ না থাকলে ফলাফল শূন্য হবেই —রানা দাশগুপ্ত, প্রসিকিউটর, যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল
  • বিচার প্রক্রিয়া গতিশীল করতে হলে কোর্টের সংখ্যা বাড়াতে হবে —ব্যারিষ্টার আনিতা রহমান, আইনজীবী, সুপ্রিম কোর্ট
  • বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে নিষ্পত্তি করা দরকার —জামিউল হক ফয়সাল, আইনজীবী, সুপ্রিমকোর্ট  
  • হামলায় পেশিশক্তির পাশাপাশি রাজনৈতিক শক্তিও থাকে —নূর খান লিটন, মানবাধিকারকর্মী

নানা সময়ে হিন্দু বাড়িঘর ও মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় মামলাও হয়। তবে বিচারে জটিলতা কাটেনি। মামলা হলেও বিচার প্রক্রিয়া আর এগোয় না। বছরের পর বছর ধরে ঝুলে থাকে বিচারকাজ। সংখ্যালঘু নির্যাতনের পর ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা হয়, তবে অপরাধীরা থেকে যায় অধরা। কেউ কেউ গ্রেপ্তার হলেও বিলম্বিত বিচারপ্রক্রিয়ায় আইনের ফাঁকফোকর গলে বেরিয়ে যায় জামিনে। ফলে থামছে না নির্যাতনের ঘটনাও। নানা চেষ্টায়ও বিচারকাজ গতিশীল করা ও স্থবিরতা কাটানো সম্ভব হয়নি।

এদিকে বর্তমান আইনে ধীরগতিতে বিচার চলায় হিন্দু সমপ্রদায়ের নেতারা দ্রুত সময়ের মধ্যে সংখ্যালঘু নিরাপত্তায় আলাদা আইন করার দাবি তুলেছেন। তারা বলছেন, তদন্তে গাফিলতি, চার্জশিটে ধীরগতি, চার্জশিট থেকে প্রধান অভিযুক্তদের নাম বাতিল ও সাক্ষীর অভাবে মামলার বিচারকাজ অনেকটা স্থবির হয়ে আছে। এর জন্য পৃথক আইন করা জরুরি বলেও জানান তারা।

জানা যায়, হামলার পরই জ্ঞাত ও অজ্ঞাতসহ দুই তিন হাজার আসামি করা হয়। তাই অজ্ঞাত আসামিদের শনাক্ত ও যাচাই-বাছাই শেষ করতে তৈরি হয় জটিলতা। আবার তদন্তে অতিরিক্ত সময় লাগা। উপযুক্ত সাক্ষী না থাকা। কেউ সাক্ষ্য দিতে না চাওয়াই বিচারে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে। মামলা হওয়ার পরে সাক্ষী খুঁজলে ভয়ে কেউ নাম বলতে চান না এবং সাক্ষ্যও দিতে চান না। ফলে অধিকাংশ আসামি জামিনে মুক্ত হয়ে যায়। জামিনে বেরিয়ে মামলা থেকে নাম কাটানো ও মামলা তুলে নিতেও চাপ দেয় বাদিকে। অনেক সময় ছোটখাটো নির্যাতনের ঘটনায় মামলাও হয় না। আবার অভিযোগ দাখিলের পরেও বছরের পর বছর এফআরটিএ হচ্ছে না। চার্জশিটও হচ্ছে না। 

এমন অবস্থায় আইনজ্ঞরা বলছেন, ধর্মীও সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনায় মামলা নিতে গেলে দ্রুত বিচার আদালতে মামলা নেয়া উচিত। এ আইন তো আছে। তারা প্রশ্ন রেখে বলেন, আইন থাকার পরও পর্যাপ্ত ব্যবহার হচ্ছে না কেন? এই সেকশনে মামলা নেয়া হচ্ছে না কেন? এসব ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে এবং পুলিশের পক্ষ থেকে উদাসীনতা আছে বলেও জানান তারা।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাষ্ট্রপক্ষের এক আইনজীবী বলেন, ‘এসব মামলায় অজ্ঞাত আসামির সংখ্যা হয় তিন-চার হাজার। যেহেতু অনেক লোকের এখানে সংশ্লিষ্টতা তাই যাচাই-বাছাই করতে, বিচার বিশ্লেষণ করতে একটু সময় বেশি লাগা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে দুই-তিন বছর সময়টা একটু বেশি আমাকে বলতেই হয়। তারপরও আমার মনে হয় যাচাই-বাছাই করার ক্ষেত্রে একটু সময় নিতেই হয়। না হলে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা যায় না।’

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে সপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আনিতা গাজী রহমান বলেন, ‘সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন দুঃখজনক। যেহেতু এখানে ধর্মীয় ইস্যু জড়িত ও স্পর্শকাতর তাই এটা আলাদাভাবে গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচার করা উচিত। তবে শুধু ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন-অত্যাচারের মামলায় বিচারে ধীরগতি বিষয়টি এমন নয়। দেশের সামগ্রিক বিচার প্রক্রিয়াই ধীরগতির। সে ক্ষেত্রে বিচার প্রক্রিয়া গতিশীল করতে হলে কোর্টের সংখ্যা বাড়াতে হবে। সেই সাথে পর্যাপ্ত বিচারকও নিয়োগ দিতে হবে। যেহেতু ট্রাইব্যুনাল সৃষ্টির আইন আছে, তাই প্রয়োজনীয় ট্রাইব্যুনাল তৈরি করতে হবে এবং দক্ষ বিচারক ও জনবল নিয়োগ দিতে হবে। তবেই মামলাজট কমে আসবে।’

সুপ্রিম কোর্টের আরেক আইনজীবী অ্যাডভোকেট জামিউল হক ফয়সাল বলেন, ‘প্রথম কথা হচ্ছে আমাদের বিচারিক সিস্টেমটাই মূলত জটিল প্রক্রিয়ার ও সময়সাপেক্ষ। দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলাও বছরের পর বছর ধরে ঝুলে আছে। যেমন ২১ আগস্টের মতো মামলাও কিন্তু দীর্ঘদিনে নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয়নি। এর জন্য বিচারিক সিস্টেমই দায়ী। সংখ্যালঘুদের মামলার  বিচারের ক্ষেত্রে আমি বলবো, যেহেতু বিষয়টি দেশের ভাবমূর্তির সাথে জড়িত, তাই এ বিষয়ে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে এবং অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে নিষ্পত্তি করা দরকার।’

বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকটে রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘যারা রামুর ঘটনা ঘটিয়েছিল তারা এখনো মন্দিরের আশপাশেই ঘুরছে। তাদের কাউকেই গ্রেপ্তার করা হয়নি, তবে কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না সেটা প্রশাসনই ভালো বলতে পারবে। যারা মূল আসামি ছিলো তাদের নাম চার্জশিটেও নেই। মামলাগুলো নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের যদি বিশেষ উদ্যোগ না থাকে তাহলে মামলা হয় ঠিকই কিন্তু ফলাফল হলো শূন্য। সাহেদ সাবরিনার মামলাগুলো যেভাবে দ্রুত সময়ে বিচার হচ্ছে কিন্তু সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনায় মামলাগুলো নিষ্পত্তিতে কোনো ত্বরিতগতি আমরা দেখিনি বা দেখছি না। মামলার বিচার যদি বিলম্বিত হয়, তাহলে বাদি ও সাক্ষীরা আদালতে আসার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। রামুর বিষয়টিও তেমনই হয়েছে।’

মনবাধিকার কর্মী নূর খান লিটন বলেন, ‘এই হামলায় পেশিশক্তি যেমন থাকে, রাজনৈতিক শক্তিও থাকে। রামুতে যেমন দলমত নির্বিশেষে সব দলকে একত্রিত করে হামলা চালানো হয়েছে। সাধারণভাবে এমন একটি ধর্মীয় জিকির তোলা হয় যে তখন অনেক ক্ষেত্রেই সব দল এক হয়ে হামলা চালায়। রাষ্ট্র আসলে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে।’

হিন্দু মহাজোটের আন্তর্জাতিক-বিষয়ক সম্পাদক রিপন দে বলেন, ‘শুধু সুনামগঞ্জ নয়, তার আগেও যে কয়টি বড় ধরনের হামলা হয়েছে পুলিশ আগে পরিকল্পনার কথা জানলেও নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আর গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনই বা কী করে? তিনি বলেন, আমরা বারবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছি। তিনি বলেন, আটকরা জামিন পেলে তাদের কিছু করার নেই। আর যখন প্রশ্ন করি অপরাধ না করেও এসব ঘটনায় তাহলে সংখ্যালঘুরা কেন আটক আছেন? তার জবাবে তিনি বলেন, নিরাপত্তার কারণে আটক রাখা হয়। চলতি বছর সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলার ঘটনায় ধর্মীয় সংখ্যালঘু নিপীড়নের অভিযোগ নতুন করে সামনে এসেছে। এর আগেও কক্সবাজারের রামু, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর, কুমিল্লার মুরাদনগর, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ, ঢাকার মিরপুরে বিহারিদের ওপর, পাবনার সাঁথিয়া, রংপুরের গঙ্গাচড়া, দিনাজপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কয়েকটি সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা দেশে-বিদেশে বেশ আলোচিত হয়েছিল। সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও হিন্দু পল্লীতে হামলার ঘটনায় এ পর্যন্ত পুলিশ হামলায় এখন পর্যন্ত ২৩ জনকে আটক করা হয়েছে। সর্বশেষ গ্রেপ্তার হয়েছেন ‘মূল আসামি’ শহীদুল ইসলাম স্বাধীন ওরফে স্বাধীন মেম্বার। স্থানীয় গণমাধ্যমে তাকে যুবলীগ সভাপতি বলা হলেও সরকারি দলেও দায়িত্বশীল অনেকে দাবি করেন স্বাধীন যুবলীগের কেউ নন।

যেসব মামলার বিচার ঝুলে আছে : ২০১২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বরে রামুতে বৌদ্ধ পল্লীতে হামলার ঘটনা ঘটে। প্রায় ৯ বছর পার হলেও কোনো বিচার এখনো হয়নি। এই ঘটনায় মোট ১৯টি মামলা হয়েছিল। মাত্র একটি মামলার চার্জশিট হলেও বিচার শুরু হয়নি। যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তারা সবাই জামিনে আছেন। আর যে উত্তম বড়ুয়ার নামে ফেসবুক পোস্টের অজুহাতে রামু, উখিয়া এবং টেকনাফে তাণ্ডব চালানো হয়েছিল, তিনি জামিন পেলেও এখন নিখোঁজ রয়েছেন। উখিয়ার নাটের গুরু জামায়াতের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট শাহজালাল চৌধুরীও আছেন জামিনে। তিনি জামিন পেয়েই কাতারে পালিয়ে গেছেন। তাকে দেশে ফেরানোরও  কোনো উদ্যোগ নেই। অন্য অপরাধীরাও এখনো বহাল তবিয়তে ঘুরছে মন্দিরের আশপাশেই। যদিও তদন্তে তার ফেসবুক পোস্টের কোনো প্রমাণ মেলেনি। ২০১৬ সালের ২৯ অক্টোবর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দু বসতিতে হামলার তদন্ত প্রায় পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি। ওই সময় যাদের আটক করা হয়েছিল তারাও জামিনে মুক্ত। অন্যদিকে লেখাপড়া না জানা যে রসরাজের ফেসবুক পোস্টের ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগ কথা তুলে হামলা হয়েছিল তাকেই উল্টো দীর্ঘদিন জেলে থাকতে হয়েছে। এখন জামিন পেলেও আতঙ্কে তার দিন কাটছে। একইভাবে রংপুর, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, ভোলায় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার তদন্ত শেষ হয়নি। সব শেষ সুনামগঞ্জের শল্লায় হামলার ঘটনায় বিচারপ্রক্রিয়া এখনো শুরু হয়নি। এখনো অধিকাংশ আসামিই রয়ে গেছে অধরা। আবার মামলার চার্জশিট প্রদানেও পুলিশের ধীরগতি লক্ষ্যণীয়।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ গত বছরের অক্টোবরে সাত মাসে সংখ্যালঘু নির্যাতনের একটি জরিপ প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়— গত বছরের মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর এই সাত মাসে ৬০টি পরিবারকে গ্রামছাড়া করা হয়েছে। মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ২৩টি ঘটনা ঘটেছে। ওই সময়ে হত্যার শিকার হয়েছেন ১৭ জন সংখ্যালঘু। হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে ১১ জনকে। ধর্ষণ, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৩০ জন। অপহরণের শিকার হয়েছেন ২৩ জন। ২৭টি প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে। বসতভিটা, জমিজমা, শ্মশান থেকে উচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে ২৬টি। সাতজনকে জোর করে ধর্মান্তরিত করা হয়েছে, ধর্মান্তরিত হওয়ার জন্য হুমকি দেয়া হয়েছে চারজনকে। বসত-ভিটা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে ৮৮টি।হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন ২৪৭ জন।  তাদের হিসেবে ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনায় মামলার হার ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ। অনেক ঘটনায় মামলাও করা যায় না। আর বিচার পাওয়ার হার সর্বোচ্চ পাঁচ থেকে ছয় শতাংশ।

মানবাধিকার সংগঠনগুলোর দাবি, বিদায়ী বছরে সারা দেশে হিন্দু সমপ্রদায়ের ১৪৯ জনকে হত্যা করা হয়। এ ছাড়া ২৪৪টি পরিবার ও মন্দিরে লুটের অভিযোগও রয়েছে। এর মধ্যে কেবল লুটের ঘটনাতেই ক্ষতি হয়েছে এক হাজার ৩২২ কোটি ২১ লাখ ৯৩ হাজার টাকা। প্রতিবেদনে আরো জানানো হয়, গেলো বছর বসতবাড়ি হামলা ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে ৪৫৪টি। অগ্নিসংযোগ ১১৬টি ও ১০১টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনা ঘটেছে। ভূমি দখল হয়েছে ১০ হাজার ২৩৬ দশমিক ৭৩ একর; যার মধ্যে চাক, ম্রো ও ত্রিপুরা সমপ্রদায়ের আট হাজার ২০০ একর ও হিন্দুদের দুই হাজার ২৩৬ দশমিক ৭৩ শতাংশ জমি রয়েছে। ঘরবাড়ি দখলের ঘটনা ঘটেছে ৭০টি। নিজের বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে ২ হাজার ১২৫ পরিবারকে। উচ্ছেদের চেষ্টা হয় এক হাজার ৭১৩ পরিবার, উচ্ছেদের হুমকি আসে দুই হাজার ৯৩ পরিবার ও আটটি ম্রো ক্ষুদ্র জাতিসত্ত্বা গ্রামে। দেশত্যাগের বাধ্য করা হয়েছে ৬২৯ পরিবারকে। আর ২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৬, ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ এবং ২০২০ সালে হিন্দু নির্যাতন বেড়েছে কয়েকগুণ।

আমারসংবাদ/জেআই