Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

চাহিদার সঙ্গে বাড়ছে মজুত

মাহমুদুল হাসান

আগস্ট ৩১, ২০২১, ০৬:১৫ পিএম


চাহিদার সঙ্গে বাড়ছে মজুত
  • টিকার আবেদন পড়েছে পৌনে চার কোটি
  • টিকা এসেছে ৩ কোটি ৮১ লাখের বেশি
  • সেরামের তিন কোটির মধ্যে এসেছে ৭০ লাখ
  • টিকার ক্রয়-উপহার সরবরাহের শীর্ষে চীন
  • অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে গণটিকার বিকল্প নেই
  • প্রান্তিক মানুষকে টিকায় অগ্রাধিকারের দাবি

দীর্ঘদিনের কোভিড-১৯ সংক্রমণে উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি। অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় গেলো মাসেই তুলে নেয়া হয়েছে কঠোর বিধিনিষেধ। অতিমারী মোকাবিলায় এখন চলছে টিকায় জোর। বাংলাদেশে এখন সাতটি টিকার জরুরি অনুমোদন দেয়া হয়েছে। উন্নত বিশ্বে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজের পর বুস্টার ডোজ চালু হলেও নিম্ন আয়ের দেশে এখনো বেশির ভাগ মানুষ টিকার বাইরে। বাংলাদেশ এখনো টিকাদানে পিছিয়ে। যদিও গত ৭ ফেব্রুয়ারি বিশ্বের ৫৪তম দেশ হিসেবে টিকাদান শুরু করেছিল। কিন্তু মাঝপথে ভারত টিকা রপ্তানি বন্ধ করায় বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়ে। প্রায় ১৮ কোটির বেশি জনসংখ্যার দেশে মাত্র এক কোটিরও কম সংখ্যক মানুষ দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন। ভারতের টিকা রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা ও শুধু একটি দেশের সঙ্গে টিকা ক্রয়ে চুক্তি থাকায় কার্যক্রমে স্থবিরতা আসে। এরপর দীর্ঘদিন চীন, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও ভারতের উপহারের টিকায় ধীরগতিতে টিকাদান চললেও সম্প্রতি এসেছে টিকাদানে গতি। চীনের সিনোফার্মের সঙ্গে সাড়ে সাত কোটি ডোজ টিকা ক্রয় চুক্তির আওতায় ইতোমধ্যে পৌনে দুই কোটির বেশি টিকা এসেছে। পৌনে চার কোটির বেশি মানুষ টিকার জন্য আবেদন করলেও তার মধ্যে প্রথম ডোজ নিয়েছে এক কোটি ৮২ লাখের বেশি মানুষ। প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ মিলিয়ে টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে প্রায় দুই কোটি ৬১ লাখেরও বেশি।

সরকারি হিসাব মতে, বিভিন্ন দেশ থেকে প্রাপ্ত উপহার, ক্রয়চুক্তি ও কোভ্যাক্সের আওতায় বাংলাদেশে মোট টিকা এসেছে তিন কোটি ৮১ লাখ ২৫ হাজার ২৫৭ ডোজ। শিগগিরই আরও কয়েক লাখ ডোজ টিকা দেশে আসার কথা রয়েছে। জনস্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, সরকার বিভিন্ন উৎস থেকে টিকা সংগ্রহের জোর চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে টিকাদান কর্মসূচিতে এখনো প্রান্তিক ও বয়স্ক মানুষ পিছিয়ে। প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন মানুষ এগিয়ে। চরাঞ্চলের অপেক্ষাকৃত পিছিয়ে পড়া মানুষকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকাদানে যুক্ত করতে হবে। তাহলেই টিকাদান কর্মসূচি সফল হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস বিভাগের তথ্যমতে, গত ২৯ আগস্ট পর্যন্ত দেশে তিন কোটি ৭৬ লাখ ১৫ হাজার ১৫৮ জন মানুষ টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন। বিভিন্ন দেশের উপহার, চুক্তি ও কোভ্যাক্সের মাধ্যমে সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত টিকা পাওয়ার পরিমাণ তিন কোটি ৮১ লাখ ২৫ হাজার ২৫৭ ডোজ। প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজসহ দুই কোটি ৬১ লাখ ২৯ হাজার ১৮৭ ডোজ। তার মধ্যে প্রথম ডোজ নিয়েছে এক কোটি ৮২ লাখ ৮৯ হাজার ১৮ এবং দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছে ৭৮ লাখ ৪০ হাজার ১৬৯টি।

সমুন্নয়ের চেয়ারম্যান এবং ন্যাশনাল চর অ্যালায়েন্সের প্রতিষ্ঠাতা ড. অতিউর রহমান বলেন, ধীরে ধীরে টিকা সরবরাহের চেইন মজবুত হচ্ছে। টিকা পাওয়ার পরপরই সেটা মানুষের কাছে পৌঁছানো বড় একটা কাজ। স্বভাবতই সরকারি-বেসরকারি, সামাজিক সংগঠনগুলোকে তাই এক সাথে কাজ করতে হবে। গণটিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জন্য গণটিকার বিকল্প নেই। সামনে টিকা নীতি হবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। সরকার নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে টিকা নিয়ে আসছেন। দেশেও টিকা উৎপাদন করা হবে। টিকার লড়াইয়ে সরকার হার মানেনি।

সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিকল্পনা কল্যাণমন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হক বলেন, জনস্বাস্থ্য রক্ষায় ইপিআই করার সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা রয়েছে আমাদের। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে টিকা নিয়ে চরের মানুষের বাড়ি বাড়ি যেতে হবে। কেননা এ ধরনের দুর্গম অঞ্চলে সামাজিক ও অর্থনৈতিক অনেক চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান রয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের জন্য সুসংবাদ হলো দেশের প্রান্তজনের টিকা নিশ্চিত করতে টিকার প্রাপ্যতা বাড়ানোর পাশাপাশি সরকার দেশেই টিকা উৎপাদনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ফলে অচিরেই টিকার চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে।

আমারসংবাদ/জেআই